ঢাকা ০২:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুড়িয়ে পাওয়া সেই রাজকুমারী ২০ লাখ টাকায় রফা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:৪৪:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০১৯
  • ২৩৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দীর্ঘ ৫০ দিন আইনি লড়াই শেষে কুড়িয়ে পাওয়া শিশুর মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ লাখ টাকা। জামালপুরের পারিবারিক সহকারী জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক ফারহানা আক্তার রাজকুমারীর (শিশু) নামে ২০ লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে ব্যাংক রশিদ জমা দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন।

আর এই শর্ত মেনে নেওয়ায় বকশীগঞ্জের সুমন দম্পতিকে ৪৫ দিনের জন্য অস্থায়ী অভিভাবক মনোনীত করেছেন আদালত। গতকাল সোমবার এই রায় দেন আদালত। জানা যায়, চলতি বছরের ২৯ মার্চ বকশীগঞ্জ পৌর শহরের শ্মশান ঘাটে কে বা কারা দুইদিন বয়সী এক কন্যা শিশুকে রেখে পালিয়ে যায়। কান্নাকাটির শব্দ শুনে প্রতিবেশী আছর আলীর স্ত্রী সন্ধ্যি বেগম শিশুটিকে নিজ বাড়িতে নিয়ে প্রাথমিক পরিচর্যা করেন। খবর পেয়ে কশীগঞ্জ থানার পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে কুড়িয়ে পাওয়া নবজাতকটির নাম রাখা হয় রাজকুমারী।

এই নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশের পর পরই ভ্যানচালক থেকে হাই সোসাইটির একাধিক ব্যক্তি রাজকুমারীর সার্বিক দায়িত্ব নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করেন। সর্বশেষ রাজকুমারীকে পেতে জামালপুরের পারিবারিক আদালতে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়।

একটি মামলা দায়ের করেন বকশীগঞ্জ পৌর শহরের বাসিন্দা ব্যাংকার সামিউল হকের স্ত্রী ফারহানা ইয়াসমিন রিপা। অপর মামলা দায়ের করেন বকশীগঞ্জ পৌর শহরের কামারপট্টি মোড়ের ভ্যানচালক সুমন মিয়া। উভয় বাদী রাজকুমারীর অভিভাবকত্ব নেওয়ার জন্য মামলা দায়ের করেন।

মামলায় ব্যাংকার সামিউল হকের স্ত্রী ফারহানা ইয়াসমিন রিপার পক্ষে সাক্ষ্য দেন বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বিজয়। আর ভ্যানচালক সুমন মিয়ার পক্ষে সাক্ষ্য দেন বকশীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম জুমান, বকশীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগর ও মহিলা কাউন্সিলর রহিমা।

দীর্ঘ ৫০ দিন আইন লড়াইয়ের পর ২০ মে জামালপুরের পারিবারিক আদালতের বিজ্ঞ সহকারী জজ ফারহানা আক্তার রাজকুমারী মামলার রায় দেন। রায়ে সিটি ব্যাংকে রাজকুমারীর নামে ২০ লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিটসহ তিনটি বিশেষ শর্তে সুমন দম্পতিকে অভিভাবক মনোনীত করা হয়। টাকা জমা দেওয়াসহ ব্যাংকের যাবতীয় কাজ শেষ করার জন্য সময় দেওয়া হয়েছে ৪৫ দিন। মামলায় ফারহানা ইয়াসমিন রিপার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন জামালপুর আইনজীবী সমিতির সভাপতি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট বাকী বিল্লাহ ও অ্যাডভোকেট ইসমাইল হোসেন সিরাজী। সুমন দম্পতির পক্ষে ছিলেন সাবেক পিপি মাহফুজুর রহমান মন্টু ও সিনিয়র অ্যাডভোকেট আনিসুজ্জামান।

বিষয়টি নিশ্চিত করে এ্যাডভোকেট ইসমাইল হোসেন সিরাজী বলেন, ২০ লাখ টাকা ব্যাংকে ডিপোজিট করার শর্তে আদালত সুমন দম্পতির পক্ষে রায় দেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

কুড়িয়ে পাওয়া সেই রাজকুমারী ২০ লাখ টাকায় রফা

আপডেট টাইম : ০৪:৪৪:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দীর্ঘ ৫০ দিন আইনি লড়াই শেষে কুড়িয়ে পাওয়া শিশুর মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ লাখ টাকা। জামালপুরের পারিবারিক সহকারী জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক ফারহানা আক্তার রাজকুমারীর (শিশু) নামে ২০ লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে ব্যাংক রশিদ জমা দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন।

আর এই শর্ত মেনে নেওয়ায় বকশীগঞ্জের সুমন দম্পতিকে ৪৫ দিনের জন্য অস্থায়ী অভিভাবক মনোনীত করেছেন আদালত। গতকাল সোমবার এই রায় দেন আদালত। জানা যায়, চলতি বছরের ২৯ মার্চ বকশীগঞ্জ পৌর শহরের শ্মশান ঘাটে কে বা কারা দুইদিন বয়সী এক কন্যা শিশুকে রেখে পালিয়ে যায়। কান্নাকাটির শব্দ শুনে প্রতিবেশী আছর আলীর স্ত্রী সন্ধ্যি বেগম শিশুটিকে নিজ বাড়িতে নিয়ে প্রাথমিক পরিচর্যা করেন। খবর পেয়ে কশীগঞ্জ থানার পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে কুড়িয়ে পাওয়া নবজাতকটির নাম রাখা হয় রাজকুমারী।

এই নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশের পর পরই ভ্যানচালক থেকে হাই সোসাইটির একাধিক ব্যক্তি রাজকুমারীর সার্বিক দায়িত্ব নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করেন। সর্বশেষ রাজকুমারীকে পেতে জামালপুরের পারিবারিক আদালতে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়।

একটি মামলা দায়ের করেন বকশীগঞ্জ পৌর শহরের বাসিন্দা ব্যাংকার সামিউল হকের স্ত্রী ফারহানা ইয়াসমিন রিপা। অপর মামলা দায়ের করেন বকশীগঞ্জ পৌর শহরের কামারপট্টি মোড়ের ভ্যানচালক সুমন মিয়া। উভয় বাদী রাজকুমারীর অভিভাবকত্ব নেওয়ার জন্য মামলা দায়ের করেন।

মামলায় ব্যাংকার সামিউল হকের স্ত্রী ফারহানা ইয়াসমিন রিপার পক্ষে সাক্ষ্য দেন বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বিজয়। আর ভ্যানচালক সুমন মিয়ার পক্ষে সাক্ষ্য দেন বকশীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম জুমান, বকশীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগর ও মহিলা কাউন্সিলর রহিমা।

দীর্ঘ ৫০ দিন আইন লড়াইয়ের পর ২০ মে জামালপুরের পারিবারিক আদালতের বিজ্ঞ সহকারী জজ ফারহানা আক্তার রাজকুমারী মামলার রায় দেন। রায়ে সিটি ব্যাংকে রাজকুমারীর নামে ২০ লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিটসহ তিনটি বিশেষ শর্তে সুমন দম্পতিকে অভিভাবক মনোনীত করা হয়। টাকা জমা দেওয়াসহ ব্যাংকের যাবতীয় কাজ শেষ করার জন্য সময় দেওয়া হয়েছে ৪৫ দিন। মামলায় ফারহানা ইয়াসমিন রিপার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন জামালপুর আইনজীবী সমিতির সভাপতি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট বাকী বিল্লাহ ও অ্যাডভোকেট ইসমাইল হোসেন সিরাজী। সুমন দম্পতির পক্ষে ছিলেন সাবেক পিপি মাহফুজুর রহমান মন্টু ও সিনিয়র অ্যাডভোকেট আনিসুজ্জামান।

বিষয়টি নিশ্চিত করে এ্যাডভোকেট ইসমাইল হোসেন সিরাজী বলেন, ২০ লাখ টাকা ব্যাংকে ডিপোজিট করার শর্তে আদালত সুমন দম্পতির পক্ষে রায় দেন।