হাওর বার্তা ডেস্কঃ আসলে কি তাই? এবার আসুন জেনে নেই পাগলা মসজিদ নির্মাণের ইতিহাস। মসনদ ই আলা ঈসা খাঁ’র ৫ম অধস্তন হয়বৎ খাঁ (যিনি জংগলবাড়ি হতে কিশোরগঞ্জের বর্তমান পৌরসভার প্রায় এক কিলোমিঃ দক্ষিণ পশ্চিমে নিজ নামের সাথে মিল রেখে হয়বতনগর নামে গ্রাম নামকরণ করেন।
এই হয়বত খাঁ থেকে তৃতীয় সিঁড়ি ছিলেন মাসুদ খাঁ, এবং মাসুদ খাঁ’র তৃতীয় পুত্র দেওয়ান জুলকদর খাঁ বা জোলকরণ খাঁ (পাগলা সাহেব)। এই পাগলা সাহেব আধ্যাতিক জগতের একজন মানুষ ছিলেন বলে জমিদারি রেখে এই পাগলা মসজিদের স্থানটিতে সর্বদা অবস্থান করতেন ও ইবাদতে মশগুল থাকতেন।
এবং এখানেই নির্মাণ করেছিলেন খানকা ও মসজিদ। এই হুজরা খানাকে কেন্দ্র করেই গড়ে ছিলেন তিনগম্বুজ বিশিষ্ট একটি মসজিদ। বিগত শতকের শেষাংশেও এই মসজিদটি অনেকে প্রত্যক করেছেন। কিন্তু ১৯২৬ সালের বয়াবহ বন্যায় এই তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটি খুব ক্ষতিগ্রস্থ হয়। অতপর মসজিদের ভগ্নাংশ এই স্থান থেকে অপসারণ না করায় তৎসময় থেকে এই মসজিদদের ভাংগা ইট পাথরকে কেন্দ্র করে কেহ কেহ সিন্নি মানত করতে থাকে। শুধু তাই নয়, হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে সকল ধর্মের অনুসারীরা এগুলোতে দুধ ঢেলে মানত করার রেওয়াজ চালু করে।
কারোর কারোর ধারণা ছিল এই মসজিদে মানত ও রেওয়াজ মত কাজ করায় তারা সুফল লাভ করে। এভাবে পাগলা সাহেবের অবর্তমানে মসজিদটির নাম সর্বত্র ছড়িয়ে যায়। যা আজও চলমান। বর্তমানে দেওয়ান জুলকদর খাঁ বা পাগলা সাহেব চির নিদ্রায় শায়িত আছেন হয়বত নগর সাহেব বাড়ি কবরস্থানে।
পাগলা সাহেব নির্মিত মসজিদটি ঘিরে আজ কোটি কোটি টাকার মানত আসলেও কেহই এই আওলিয়ার কবর বা মাজারটির খবর রাখেন না। যার সংস্কার অতি আবশ্যক। ঈসা খাঁ পরিবারে সিলেটের হযরত শাহজালাল (রঃ,) এর অন্যতম সূফী সৈয়দ নাসির উদ্দীন সাহেবের বংশধর সৈয়দ আব্দুল্লাহ বিবাহ সূত্রে আগমন করে হয়বত নগরে হিস্যানুসারে জমিদারি চালান।
ঈসা খা পরিবারের সর্ব শেষ জমিদার ছিলেন দেওয়ান আলীম দাদ খান সাহেবের ছেলে দেওয়ান মান্নান দাদ খান , যিনি ছিলেন ঈসা খাঁ থেকে ১৬তম সিড়ি। সৈয়দ পরিবারের শেষ জমিদার ছিলেন সৈয়দ রফিক উল্লাহ।
তাই বলা যায়, ঈসা খাঁ ও সৈয়দ নাসিরউদ্দীন (রঃ) বংশধর হয়বত নগর সাহেব বাড়িতেই বসবাস করতেন।
কিশোরগঞ্জ জেলা শহরে অবস্থিত পাগলা মসজিদটি বর্তমানে দৃষ্টিনন্দন করে সংস্কার করা হয়েছে।