ঢাকা ১০:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

থাইল্যান্ডের রাজার সিংহাসন আরোহনে ৩ দিনের অনুষ্ঠান শুরু

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১৯:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ মে ২০১৯
  • ৩১৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ থাইল্যান্ডের নতুন রাজা ভাজিরালংকর্নের (৬৬) সিংহাসন আরোহন ও মুকুট পরানোর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। আজ স্থানীয় সময় ১০টা ৯ মিনিটে এ আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। চলবে সোমবারও। রাজাকে পিওর বা প্রকৃত নির্ভেজাল মানুষ হিসেবে পরিণত করতে পবিত্র পানি ছিটানো হবে। দেশের ১০০টি স্থান থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে এই পানি। প্রায় ৭০ বছর সিংহাসনে থাকার পর তার পিতা সাবেক রাজা ভূমিবল আদুল্যাদেজ মারা যান ২০১৬ সালে। তারপর থেকেই উত্তরাধিকার সূত্রে রাজা হন ভাজিরালংকর্ন।

কয়েকদিন আগে রাজপ্রাসাদ থেকে তার নতুন বিয়ের আকস্মিক ঘোষণা দেয়া হয়। বলা হয়, তার দীর্ঘদিনের পার্টনার, তার দেহরক্ষী সুথিদাকে বিয়ে করেছেন রাজা। এর ফলে সুথিদার নতুন পরিচয় রানী সুথিদা। থাইল্যান্ডের সব টেলিভিশন চ্যানেলে এ খবর প্রচার করা হয়।

থাইল্যান্ডে সাংবিধানিক রাজতন্ত্র প্রচলিত। জনগণ ভীষণভাবে শ্রদ্ধা করে রাজ পরিবারকে। এ পরিবারের কাছে সংরক্ষিত থাকে বিশাল ক্ষমতা। এ ছাড়া সেখানে একটি কড়া আইন আছে। এটি লেসে ম্যাজেস্টে নামে পরিচিত। এই আইনের অধীনে রাজপরিবারের সমালোচনা নিষিদ্ধ। এই আইনের অধীনে রাজপরিবার জনসাধারণের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে মুক্ত রাখে। সিংহাসনে আরোহণ এমন একটি সময়ে ঘটছে যখন দেশে রাজনীতি অনিশ্চিত। গত ২৪ মার্চ দেশে একটি জাতীয় নির্বাচন হয়েছে। ২০১৪ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করে। তারপর প্রথম নির্বাচন ছিল এটি। কিন্তু এখনও নতুন সরকার ঘোষণা হয় নি।

তারপরও থাই নাগরিকরা আজ ইতিহাসের সাক্ষী হওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে বসে আছেন। কারণ, ৭০ বছর আগে এমন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রাজা হিসেবে ক্ষমতায় এসেছিলেন ভূমিবল আদুল্যাদেজ। এত দীর্ঘ সময় পরে সেই আনুষ্ঠানিকতা হচ্ছে আবার। ফলে বেশ উৎসাহ থাইবাসীর মধ্যে।

নতুন রাজা ভাজিরালংকর্ন হলেন সাবেক ও প্রয়াত রাজা ভূমিবল ও রানী সিরিকিটের দ্বিতীয় সন্তান এবং প্রথম পুত্র। তিনি পড়াশোনা করেছেন বৃটেনে ও অস্ট্রেলিয়া। প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ক্যানবেরায় রয়েল মিলিটারি কলেজে। থাইল্যান্ডের সশস্ত্র বাহিনীতে অফিসার হিসেবে কাজ করতে গিয়েছিলেন। একজন বেসামরিক ও যোদ্ধা পাইলট হিসেবে যোগ্যতা অর্জন করেছেন। ১৯৭২ সালে তিনি ক্রাউন প্রিন্স হন এবং একই সঙ্গে সিংহাসনের আনুষ্ঠানিক উত্তরাধিকারীতে পরিণত হন। রানী সুথিদা হলেন তার চতুর্থ স্ত্রী। সুথিদা ছিলেন তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ইউনিটের ডেপুটি কমান্ডার। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে তাকে সেনাবাহিনীর একজন পূর্ণাঙ্গ জেনারেল হিসেবে পদোন্নতি দেয়া হয়।

আজ স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ৯ মিনিটকে সেখানে মঙ্গলজনক সময় বিবেচনা করে সিংহাসনে আরোহনের রীতি পালন শুরু হয়েছে। এ সময়ে রাজা ভাজিরালংকর্ন পোশাক পরিবর্তন করে সাদা একটি পোশাক পরেছেন। এরপর তাকে পিউরিফিকেশন বা শুদ্ধিকরণ ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে পবিত্র পানি, যা সংগ্রহ করা হয়েছে সারাদেশের শতাধিক স্থান থেকে। তিনি গ্রহণ করবেন ৫টি রয়েল রিগালিয়া। এটি হলো রাজত্বের প্রতীক। এর মধ্যে রয়েছে গ্রেট ক্রাউন অব ভিক্টরি। বেশির ভাগ ব্রাহ্মণ ও বৌদ্ধ শনিবারকে রীতি পালনের দিন হিসেবে বেছে নেন। তা চলতে থাকে সোমবার পর্যন্ত।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

থাইল্যান্ডের রাজার সিংহাসন আরোহনে ৩ দিনের অনুষ্ঠান শুরু

আপডেট টাইম : ১২:১৯:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ মে ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ থাইল্যান্ডের নতুন রাজা ভাজিরালংকর্নের (৬৬) সিংহাসন আরোহন ও মুকুট পরানোর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। আজ স্থানীয় সময় ১০টা ৯ মিনিটে এ আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। চলবে সোমবারও। রাজাকে পিওর বা প্রকৃত নির্ভেজাল মানুষ হিসেবে পরিণত করতে পবিত্র পানি ছিটানো হবে। দেশের ১০০টি স্থান থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে এই পানি। প্রায় ৭০ বছর সিংহাসনে থাকার পর তার পিতা সাবেক রাজা ভূমিবল আদুল্যাদেজ মারা যান ২০১৬ সালে। তারপর থেকেই উত্তরাধিকার সূত্রে রাজা হন ভাজিরালংকর্ন।

কয়েকদিন আগে রাজপ্রাসাদ থেকে তার নতুন বিয়ের আকস্মিক ঘোষণা দেয়া হয়। বলা হয়, তার দীর্ঘদিনের পার্টনার, তার দেহরক্ষী সুথিদাকে বিয়ে করেছেন রাজা। এর ফলে সুথিদার নতুন পরিচয় রানী সুথিদা। থাইল্যান্ডের সব টেলিভিশন চ্যানেলে এ খবর প্রচার করা হয়।

থাইল্যান্ডে সাংবিধানিক রাজতন্ত্র প্রচলিত। জনগণ ভীষণভাবে শ্রদ্ধা করে রাজ পরিবারকে। এ পরিবারের কাছে সংরক্ষিত থাকে বিশাল ক্ষমতা। এ ছাড়া সেখানে একটি কড়া আইন আছে। এটি লেসে ম্যাজেস্টে নামে পরিচিত। এই আইনের অধীনে রাজপরিবারের সমালোচনা নিষিদ্ধ। এই আইনের অধীনে রাজপরিবার জনসাধারণের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে মুক্ত রাখে। সিংহাসনে আরোহণ এমন একটি সময়ে ঘটছে যখন দেশে রাজনীতি অনিশ্চিত। গত ২৪ মার্চ দেশে একটি জাতীয় নির্বাচন হয়েছে। ২০১৪ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করে। তারপর প্রথম নির্বাচন ছিল এটি। কিন্তু এখনও নতুন সরকার ঘোষণা হয় নি।

তারপরও থাই নাগরিকরা আজ ইতিহাসের সাক্ষী হওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে বসে আছেন। কারণ, ৭০ বছর আগে এমন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রাজা হিসেবে ক্ষমতায় এসেছিলেন ভূমিবল আদুল্যাদেজ। এত দীর্ঘ সময় পরে সেই আনুষ্ঠানিকতা হচ্ছে আবার। ফলে বেশ উৎসাহ থাইবাসীর মধ্যে।

নতুন রাজা ভাজিরালংকর্ন হলেন সাবেক ও প্রয়াত রাজা ভূমিবল ও রানী সিরিকিটের দ্বিতীয় সন্তান এবং প্রথম পুত্র। তিনি পড়াশোনা করেছেন বৃটেনে ও অস্ট্রেলিয়া। প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ক্যানবেরায় রয়েল মিলিটারি কলেজে। থাইল্যান্ডের সশস্ত্র বাহিনীতে অফিসার হিসেবে কাজ করতে গিয়েছিলেন। একজন বেসামরিক ও যোদ্ধা পাইলট হিসেবে যোগ্যতা অর্জন করেছেন। ১৯৭২ সালে তিনি ক্রাউন প্রিন্স হন এবং একই সঙ্গে সিংহাসনের আনুষ্ঠানিক উত্তরাধিকারীতে পরিণত হন। রানী সুথিদা হলেন তার চতুর্থ স্ত্রী। সুথিদা ছিলেন তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ইউনিটের ডেপুটি কমান্ডার। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে তাকে সেনাবাহিনীর একজন পূর্ণাঙ্গ জেনারেল হিসেবে পদোন্নতি দেয়া হয়।

আজ স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ৯ মিনিটকে সেখানে মঙ্গলজনক সময় বিবেচনা করে সিংহাসনে আরোহনের রীতি পালন শুরু হয়েছে। এ সময়ে রাজা ভাজিরালংকর্ন পোশাক পরিবর্তন করে সাদা একটি পোশাক পরেছেন। এরপর তাকে পিউরিফিকেশন বা শুদ্ধিকরণ ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে পবিত্র পানি, যা সংগ্রহ করা হয়েছে সারাদেশের শতাধিক স্থান থেকে। তিনি গ্রহণ করবেন ৫টি রয়েল রিগালিয়া। এটি হলো রাজত্বের প্রতীক। এর মধ্যে রয়েছে গ্রেট ক্রাউন অব ভিক্টরি। বেশির ভাগ ব্রাহ্মণ ও বৌদ্ধ শনিবারকে রীতি পালনের দিন হিসেবে বেছে নেন। তা চলতে থাকে সোমবার পর্যন্ত।