হাওর বার্তা ডেস্কঃ মোদির সাথে দেখা করে- মনে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কুয়েত মৈত্রীহল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শ্রাবণী শায়লার কথা? ভিসির কার্যালয় ঘেরাওকালে আন্দোলনকারী নারী কর্মীদের উপর ছাত্রলীগের পক্ষে সংঘর্ষে জড়িয়ে যিনি তুমুল আলোচনায় এসেছিলেন। গতকাল থেকে তাকে নিয়ে আবার আলোচনার পারদ উঠতে শুরু করেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করে অনলাইন দুনিয়ার পরিচিত ও অপরিচিত মুখগুলো বলছে নানা কথা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া অনেকের পোস্টের মাধ্যমে জানা যাচ্ছে, ‘রাষ্ট্রীয় সফরে’ বর্তমানে ভারতে আছেন এই ছাত্রলীগ নেত্রী। বিভিন্ন জনের পোস্ট করা ছবিতে দেখা যাচ্ছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেদ্র মোদীর পাশে দাঁড়িয়ে আছেন এই নেত্রী। গতকাল রাতে পিনাকি ভট্টচার্য নামে এক ব্যাক্তি তার ফেসবুক পেইজে প্রথম এই ছবি পোস্ট করেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার পেইজে পোস্ট করে ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘বাংলাদেশ থেকে ভারতে রাষ্ট্রীয় সফরে যাওয়া তরুণদের মধ্যে মোদীর ডান পাশে দ্বিতীয় নারীকে দেখুন চিনতে পারছেন কিনা? না চিনতে পারলে দ্বিতীয় ছবিটা দেখুন।
অপর দিকে রাহাত মুস্তাফিজ নামে একজন অনলাইন এক্টিভিস্ট তার এক দীর্ঘ স্টাটাসে রসিকতা ও ক্ষোভ ঝেড়ে বলেন, ‘কুয়েত মৈত্রীহল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শ্রাবণী শায়লার কথা মনে আছে আপনাদের? ওই যে তিনি, ঢাবির ভিসি অফিস ঘেরাওকালে যে ‘মহীয়সী’ নারীটি ছাত্রী বোনদের ওড়না-জামা খুলে নিয়েছিলেন; মেয়েদেরকে শারীরিকভাবে নির্যাতনের বেলায় তার সহযোদ্ধা ছেলেদেরকে হারিয়ে দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন? তার কথা বলছি। শেষ খবর পর্যন্ত তিনি পিজির এসি কেবিনে শুয়ে লাইভ নাটক করছিলেন। সেই তিনি, সেই চ্যাম্পিয়ন শায়লা রাষ্ট্রীয় সফরে ইন্ডিয়া, আই মিন বিদেশ গেছেন। আল্লাহ্র মেহেরবানীতে তিনি সুস্থ ও সফলভাবে নাটক শেষ করতে পেরেছেন জেনে ভাল লাগছে। আরও পুলক অনুভব করছি জেনে যে, সেক্যুলার(!) মোদিজির সাথে তিনি হরদম সেলফি খিঁচে চলেছেন।
এদেশের লীগ-বিএনপি জাতীয়তাবাদী রাজনীতির নব্বই পরবর্তী নায়কেরা এসেছে ক্যাডারদের ভেতর থেকে। উঁহু, এঁরা বিসিএস গাইড বই মুখস্ত করা ক্যাডার নয়। ফেনীর জয়নাল হাজারি, চট্টগ্রামের নাছির, লক্ষ্মীপুরের তাহের, নারায়ণগঞ্জের ওসমান। এছাড়া ছাত্রদলের লাল্টু-পল্টু ইত্যাদি। এদের পিস্তল-রিভলভার থেকে যতো গুলি বেরিয়েছে, এদের হাত থেকে যতো বোমা নিক্ষিপ্ত হয়েছে, এরা যতোবেশি জেলে গেছে ততই এরা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। পুষ্পমাল্য গলায় ঝুলিয়ে এরা রাজনীতির বরপুত্র ভূষিত হয়েছে। শায়লা ওই রাজনীতির উত্তরাধিকার বহন করছেন। আগামীদিনের ‘উজ্জ্বল’ নারী নেতৃত্বের প্রতীক হিসেবে শায়লার উত্থান সেদিনই হয়ে গেছে যেদিন তিনি ছাত্রীবোনদের বেদম পিটিয়ে অদম্য সাহসের পরিচয় দিয়েছিলেন। অভিনন্দন শায়লা!’
অনেকে শায়লার ভারতে যাওয়া নিয়ে অনেকেই তীর্যক মন্তব্য করলেও শায়লার পক্ষ্য থেকে কোনো ধরনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে শায়লা যে সত্যিই রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে ছিলেন এটার প্রমান পাওয়া যায় সতের ঘন্টা আগে তার ফেসবুক ওয়ালে দেওয়া দুটি ছবিসহ একটা পোস্ট দেখে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সাথে একটি দলীয় ছবি পোস্ট করে ইংরেজীতে ছাত্রলীগের এই নেত্রী লেখেন, Meeting with the Honourable Prime Minister Shri Narendra Modi and her excellency Smt. Shushma Swaraj, Honourable Minister, Ministry of External Affair.উল্লেখ্য, গতকাল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশের একশ তরুণ। মঙ্গলবার ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে এ সাক্ষাৎ হয়। বাংলাদেশ সময় বেলা দুইটার দিকে বাসভবনে হল রুমে প্রবেশ করেন মোদি। ভরাট গলায় বাংলায় মোদি বলে ওঠেন, ‘কেমন আছ, আমার সোনার বাংলা।’ প্রতি উত্তরে তরুণেরা জাতীয় সংগীতের পরের অংশ ‘আমি তোমায় ভালোবাসি’ বলে ওঠেন।
এ সময় বাংলাদেশি তরুণদের আগ্রহের জায়গা এবং পেশার বিষয়ে জানতে চান নরেন্দ্র মোদি। ভারতে এসে কেমন লাগছে জানতে চেয়ে তিনি বলেন, আপনাদের দিল্লি কেমন লেগেছে? কলকাতায় যাওয়ার ইচ্ছা আছে কি না? জানতে চেয়ে নিজেই বলে ওঠেন, কলকাতা আর বাংলাদেশের মধ্যে আমি কোনো পার্থক্য খুঁজে পাই না-একই রকম ভাষা এবং শিল্প সংস্কৃতি। এ সময় তরুণদের সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেন তিনি। এ সাক্ষাতে তরুণেরা ভারত-বাংলাদেশ বিষয়ে তাদের মতামত এবং প্রত্যাশা তুলে ধরেন। তরুণদের সঙ্গে ফটোসেশনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বাংলাদেশি শত তরুণের সাক্ষাৎ পর্ব।