হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাংলা নাটক বিজ্ঞাপন ও সিনেমার পরিচিত মুখ প্রিয়া আমান নিজের কাজের ব্যস্ততা ও অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন সাজ্জাদ হোসেনকে।
বর্তমানে কয়েকটি একক নাটকের কাজ করা হয়েছে। তার মধ্যে-একটি ঘড়ি, সম্পর্ক, জলিলের আদম শুমারি, এবং চাঁদের পরে চাঁদ বসেছে নাটকে অভিনয় শেষ করেছি। সামনে ঈদ উপলক্ষে বেশ কিছু নাটকের কাজ হাতে রয়েছে আশিক চৌধুরীর ২-৩টা কাজের কথা চূড়ান্ত হয়েছে, বাকিগুলোও চূড়ান্ত হওয়ার পথে। এ ছাড়া কয়েকটি ওয়েব সিরিজে কাজ শুরু করব।
মিডিয়ায় শুরুটা কীভাবে?
মিডিয়ায় শুরুটা হঠাৎ করেই। ২০১২ সালের দিকে এক ঈদে বান্ধবীর বাসায় বেড়াতে যাই। বান্ধবীর বড় ভাই হলেন তন্ময় তাহসেন। তন্ময় ভাই আমাকে দেখে ডেকে বললেন, আরেফিন শুভ, ইরেশ জাকেরকে নিয়ে একটা নাটক করতে চাচ্ছি। ক্যারেক্টারের সঙ্গে তুমি মানিয়ে যাবে। এখন তোমার বাসায় রাজি হয় কি না দেখো। বাসায় গিয়ে খুব করে জিদ করলাম, বাবা প্রথমে কিছুতেই রাজি হচ্ছিল না, পরে একটি নাটকের জন্য রাজি হয়ে যায়। সেই সূচনা। তার অল্প কিছুদিন পর তন্ময় তাহসেন ভাইয়া আমার অভিনয় দেখে বললেন, তুমি কিন্তু আরও একটা নাটকে মেইন ক্যারেকটারে অভিনয় করতে পারো। নাটকটিতে শহীদুজ্জামান সেলিমের অল্প বয়সী সুন্দরী বউয়ের চরিত্রে অভিনয় করতে হবে, তোমাকে বেশ মানাবে। পরে আমি নাটকটিতে অভিনয় করি। ‘অতঃপর প্রেম তারপর ভালবাসা’ নামের নাটকটি বৈশাখী টেলিভিশনে প্রচারিত হওয়ার পর নাটকে আমার ভালো অবস্থান তৈরি হয়।
মিডিয়ার প্রথম দিককার কোনো মজার অভিজ্ঞতা আছে কি?
প্রথম দিককার অভিজ্ঞতার মধ্যে একটি ঘটনা খুব মজার ছিল। তখন মাত্র আমার প্রথম নাটক প্রচারিত হয়েছে। তারপর আমি একটি বিজ্ঞাপনচিত্রের কাজ করি পরিবারকে না জানিয়েই। সেটা সারা দেশের বিলবোর্ডে স্থান করে নেয়। চাকা ওয়াশিং পাউডারের বিজ্ঞাপন ছিল সেটি। বাবা ব্যাংকার ছিল আর আমাদের বাসা সাভার। মতিঝিল থেকে সাভারে আসতে পথে গাবতলী আমিনবাজারে বড় বড় বিলবোর্ডে চাকার বিজ্ঞাপন দেখে বাবা ছবি তুলে নিয়ে এসে বলে, দেখত বিজ্ঞাপনের মেয়েটা দেখতে তোর মতো কি না? আমি বললাম কই না তো! তারপর পরিচিতজনের অনেকেই বাবা-মাকে ফোন দিয়ে জানতে চাচ্ছিল আমি বিজ্ঞাপনে কাজ করেছি কি না। বাবা সবাইকে বলছেন, না ওটা প্রিয়া নয় অন্য কেউ। আমার এক চাচা বাবাকে ফোন দিয়ে বলে নিজের মেয়েকে চেনো না কেমন বাবা তুমি? পরে আমি স্বীকার করি হ্যাঁ আমি সবাইকে না বলেই একটা বিজ্ঞাপনে কাজ করেছি। সেটা একটা খ্যাতির বিড়ম্বনা ছিল।
আপনার বেড়ে ওঠা কোথায়?
আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা সাভারে। মাঝে কিছুদিন স্কুলে পড়াশোনা করেছি ঢাকার কামরুন্নেছা স্কুলে, তারপর আবার সাভাবে চলে আসি। আমরা ৪ বোন, আমি সবার ছোট। বড় বোন চীনে থাকেন, ছোট বোন লন্ডনে থাকেন।
অভিনয়ে আপনার আদর্শ কে?
জয়া আপুর অভিনয় অনেক ভালো লাগে। তবে বিশেষ করে বলতে গেলে বিপাশা হায়াত আপুকে আমার আদর্শ মনে হয়। তার ব্যক্তিত্ব, অভিনয়শৈলী, কথা বলার ধরন, এককথায় তিনি একজন অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব আমার কাছে।
সহ-অভিনেতাদের মধ্যে কার সঙ্গে কাজ করে মনে হয় নতুন কিছু শিখছেন?
চঞ্চল ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করে আমি অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। তিনি অভিনয়ের ক্ষেত্রে কোনো ভুল হলে ধরিয়ে দেন যেটা পরবর্তীতে অনেক কাজে লাগে। তা ছাড়া বিশেষভাবে বলতে গেলে নিশো ভাইয়ার কথা বলতে হয়। তিনি নিজের কাজের পাশাপাশি অন্যের কাজকে সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দেন ফলে কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়।
আপনি তো সিনেমায় কাজ করেছেন অভিজ্ঞতা কেমন, ভবিষ্যতে সিনেমা করবেন কি না?
সিনেমার কাজের অভিজ্ঞতা অনেক ভালো। আমি একটিমাত্র সিনেমায় অভিনয় করেছি অদৃশ্য শত্রু। পরিচালক আকিব পারভেজ ও মাশরুর পারভেজ জীবরান পরিচালিত সিনেমাটিতে আমার বিপরীতে নায়ক সোহেল রানা অভিনয় করেছেন। এটি নিঃসন্দেহে একটি ভালো অভিজ্ঞতা ছিল। আবারও এমন ভালো চরিত্রে, ভালো গল্পে অভিনয়ের সুযোগ এলে অবশ্যই অভিনয় করব।
নাটক, বিজ্ঞাপন, সিনেমার মধ্যে ভালোলাগার জায়গা কোনটি?
এককথায় বলতে গেলে একক নাটক আমার প্রথম পছন্দ। কারণ নাটকের মধ্যে নিজের অভিনয়শৈলীটা ভালোভাবে প্রদর্শনের সুযোগ পাওয়া যায়।