হাওর বার্তা ডেস্কঃ এক সময়ের অবহেলিত কিশোরগঞ্জ জেলার দুর্গম ও বিস্তীর্ণ জনপদের চিত্র এখন বদলে যাচ্ছে। বিগত ১০ বছরের ধারাবাহিক উন্নয়নের সঙ্গে এবার যোগ হয়েছে ১২০০ কোটি টাকার আরও চারটি মেগা প্রকল্প। উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে হাওরবেষ্টিত উপজেলাগুলোতে। নদ-নদী, খাল-বিল, খনন-পুনঃখনন ও ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণসহ যাতায়াতের জন্যে সড়ক নির্মাণ করায় মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটছে। সুফল ভোগ করছে হাওরে বসবাসকারী সাধারণ মানুষ।
চলতি অর্থ বছরে কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বিভাগের তত্ত্বাবধানে হাওরে চারটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে পুরোদমে কাজ চলছে। প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হলে হাওর অঞ্চলই দেশের সর্ববৃহৎ আকর্ষণীয় এক পর্যটন অঞ্চলে রূপ নেবে বলে আশা করছে হাওরবাসী। একইসঙ্গে ওইসব এলাকার বন্যা, অতিবৃষ্টি বা বন্যার পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থাও সহজ হবে।
হাওরবাসীর জানমাল এবং কৃষকদের বোরো ফসল ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে। এর ধারাবাহিকতায় মৎস্য চাষ-শস্য উৎপাদন সহজ ও বৃদ্ধি পাবে। সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থান। দারিদ্র বিমোচনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রৃদ্ধিও ত্বরান্বিত হবে। প্রকল্পের প্রধান অঙ্গসমূহের মধ্যে রয়েছে নদী ড্রেজিং, কম্পার্টমেন্ট ডাইক নির্মাণ, ক্লোজার নির্মাণ, কাটখাল ও ইছাপুর সীমানায় লুপকাট, নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ, ভিলেজ প্লাটফর্ম নির্মাণ কাজসহ অন্যান্য কাজ। প্রকল্পের প্রাথমিক বরাদ্দ ৪২৫ কোটি টাকা।
চলতি অর্থ বছরেই এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। ৪৩০ কোটি টাকা বরাদ্দের আরেকটি মেগা প্রকল্পে ১২৩ কিলোমিটার নতুন বাঁধ, ৫০ কিলোমিটার খাল পুনঃখনন, ১৯টি রেগুলেটর নির্মাণ, পানি নিষ্কাশন অবকাঠামো নির্মাণ ও পুনর্বাসন ব্যবস্থা রয়েছে।
বন্যা ব্যবস্থাপনা ও মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্যে মিঠামইন, ইটনা, অষ্টগ্রাম, নিকলী, তাড়াইল, করিমগঞ্জ, পাকুন্দিয়া, বাজিতপুর, কুলিয়ারচর, ভৈরব ও কটিয়াদী উপজেলায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। ২০২২ সালে এ প্রল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলার নদী-খাল পনঃখননের জন্যে ৩৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো তাড়াইল উপজেলার বেতাই নদী, হোসেনপুর উপজেলার কাওনা বাঁধ থেকে নরসুন্দা নদী খনন, ইটনা উপজেলার গৌর নদী পুনঃখনন, অষ্টগ্রাম উপজেলার গজারিয়া খাল, কুলিয়ারচর উপজেলার বড়দল খাল, ভৈরব উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ বাইত খাল, বাজিতপুর উপজেলার বাজিতপুর বাজার খাল, কটিয়াদী উপজেলার মইষাকান্দী খাল, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার সোনাপুর খাল ও সদরের মারিয়া খাল। এসব নদ-নদীর খনন কাজ ২০২০ সালে সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।
এছাড়াও মিঠামইন উপজেলায় নির্মিতব্য মিটামইন সেনা ক্যাম্প স্থাপনের জন্যে ভূমি সমতল, উঁচুকরণ, ওয়েভ প্রটেকশন ও তীর প্রতিরক্ষা কাজে বরাদ্দ রয়েছে ৩০৫ কোটি টাকা।
এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, চলমান প্রকল্পগুলোর কাজ ৭০ থেকে ৮০ ভাগ শেষ হয়েছে। পুরো কাজ শেষ হলে হাওর এলাকার মানুষ এর সুফল ভোগ করবেন।