রোহিঙ্গাদের ফেরাতে চাপ অব্যাহত রাখতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্যসহ সব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের তাদের নিজ দেশে ফেরত নিয়ে যাওয়ার জন্য মিয়ানমারের ওপর জোরালো বৈশ্বিক চাপ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। ব্রিটেনের বৈদেশিক দপ্তর এবং কমনওয়েলথ কার্যালয়ের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মার্ক ফিল্ড এমপি আজ সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাতে এলে শেখ হাসিনা এই আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

রোহিঙ্গাদের মাঝে বিশেষ করে রোহিঙ্গা তরুনদের মাঝে কাজকর্ম না থাকা এবং তাদের ফিরে যাওয়ার বিষয়ে অনিশ্চয়তা থাকায় হতাশা ছড়িয়ে পড়ার আশংকা ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা ওই এলাকায় একটি বিরাট সমস্যার সৃষ্টি করেছে কেননা সংখ্যায় তারা স্থানীয় জনসাধারণকে ছাড়িয়ে গেছে। ‘কাজেই স্বার্থন্বেষী মহল তাদের মধ্যে বিদ্যমান হতাশাকে খারাপ উদ্দেশ্যেও ব্যবহার করতে পারে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বর্ষাকালে রোহিঙ্গাদের অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। অবশ্য সরকার তাদের অস্থায়ী আবাসনের জন্য একটি দ্বীপকে উন্নত করে গড়ে তুলছে।’ সফররত যুক্তরাষ্ট্রের মন্ত্রী এত বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া বাংলাদেশের জন্য এক বিরাট বোঝা আখ্যায়িত করে তাদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে সরকারের কাছে জানতে চান।

এদেশে গণতন্ত্র পুণপ্রতিষ্ঠার জন্য তিনি সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন বলেও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। এসময় যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিপুল বিজয় অর্জনের জন্য শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান। শেখ হাসিনা দুই দেশের পারস্পরিক লাভের স্বার্থেই বাংলাদেশে আরো ব্রিটিশ বিনিয়োগ প্রত্যাশা করেন। তিনি এ সময় ব্রিটিশ উদ্যোক্তাদের আরও বেশি বেশি বাংলাদেশের বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

মার্ক ফিল্ড বাংলাদেশের উন্নয়নে বিশেষ করে অর্থনৈতিক এবং সামাজিক উন্নয়নে ব্রিটেনের অংশীদারিত্বের কথা পুণর্ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশে ব্রিটেনের সহযোগিতা বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ইস্যুর ক্ষেত্রে সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই এক্ষেত্রে নিজস্ব অর্থায়নে ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যার বিষয়টি মাথায় রেখেই দেশের সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলে বেশ কিছু প্রকল্প গ্রহণ করেছে।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় তাঁর সরকারের দেশে বেসরকারি খাতকে উন্মুক্ত করে দেওয়ার বিষয়টি অবহিত করে বেসরকারি মালিকানাধীন বেশ কিছু টিভি চ্যানেল অনুমোদন প্রদানের কথাও জানান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে গণমাধ্যম এখন সর্ব্বোচ্চ স্বাধীনতা ভোগ করছে।’ বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের ঐতিহাসিকভাবেই ঘনিষ্ট সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে তাঁদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।

বৈঠকে যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী বাংলাদেশের উন্নয়নে ব্রিটেনের আরও সহযোগিতা প্রদানেরও আশ্বাস দেন। বৈঠকে উভয়ে দু’দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্ক আরও জোরদার করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান এবং ঢাকায় যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার চ্যাটারটন ডিকসন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর