শিক্ষাই পারে একটি দেশকে উন্নত সমৃদ্ধ করতে: প্রধানমন্ত্রী

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিক্ষাই পারে একটি দেশকে উন্নত সমৃদ্ধ, ক্ষুধামুক্ত ও দারিদ্রমুক্ত করতে। এই শিক্ষাটা হতে হবে আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত। আজ সোমবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠ্যপুস্তক উৎসবের উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা দেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবো। যাতে বাংলাদেশ একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ক্ষুধামুক্ত ও দারিদ্রমুক্ত দেশ করতে বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলেন। তিনি শিক্ষাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন। শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে বঙ্গন্ধু প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করেছিলেন। সকল শিক্ষকদের বেতন সরকারীকরণ করে ছিলেন। তিনি আরো বলেন, ৯৬ সালে স্বাক্ষরতার হার ৪৫ ভাগ। তখন আমরা নিরক্ষরতামূলক কর্মসূচি হাতে নিলাম। দল হিসেবেও আমরা উদ্যোগ নিয়েছিলাম। ছাত্র সংগঠনকে নির্দেশ দিলাম যে, অন্তত ৫ জন নিরক্ষরকে শিক্ষা দিতে হবে তাহলেই তাকে সংগঠন মূল্যায়ন করবে।

এভাবেই আমরা শিক্ষাকে এগিয়ে নিলাম। স্বাক্ষরতা দেয়ার জন্য এনজিও, স্বেচ্ছায় যারা কাজ করে সবাইকে এ কাজের আওতায় নিয়ে আসলাম। পরে সেটিকে ৬৫ ভাগে উন্নীত করতে সক্ষম হলাম। একটি শিক্ষাই পারে একটি দেশ পারে ক্ষুধামুক্ত করতে, দারিদ্রমুক্ত করতে। আমরা সবসময় আমাদের চাহিদাগুলোকে সামনে রেখেই উদ্যোগ নিয়েছি। বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষা এবং কম্পিউটার শিক্ষায় উৎকর্ষতা আনার জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নাম দিয়ে ১২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করেছি। বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষায় আমরা জোর দিলাম। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন এখন পূরণ হয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন বিজ্ঞানসম্মত জাতি গাড়ি তুলতে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে সেটা খুব প্রয়োজন ছিলো। ইতিমধ্যে আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছি। সেটাকে আমাদের ধরে রাখতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ দেশ নদীমাতৃক দেশ। নদীমাতৃক দেশ হিসেবে ডেল্টা প্লান ২১০০ আমরা শুরু করেছি। ২১০০ সাল পর্যন্ত আমাদের পরিকল্পনা, সেটা আমি জাতিকে অবিহিত করলাম।

‘ঠিক সময় মতো রেজাল্ট দেয়া, বিনা পয়সায় বই দেয়ায় শিক্ষায় মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। উচ্চ শিক্ষা তরান্বিত করতে আমরা বৃত্তি দিচ্ছি। পিএইচডি পর্যন্ত করতে চাইলেও সুযোগ করে দিয়েছি। আমরা মেধাবীদের বৃত্তি দিচ্ছি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির শিক্ষা উন্নতি করার লক্ষ্যে শিক্ষকদের যাবতীয় ট্রেনিং দিচ্ছি। পঞ্চম শ্রেণি ও অষ্টম শ্রেণির পরীক্ষার ফলে ছোট্ট শিশুদের ভেতরে আত্মবিশ্বাস জেগে ওঠছে। কারণ তারা একটি সার্টিফিকেট পাচ্ছে। সকলেই তো উচ্চশিক্ষা নেবে না। কারিগরি বা বিজ্ঞান বিভিন্ন দক্ষতায় বিকশিত হতে প্রাথমিক পর্যায়ে একটি সার্টিফিকেট পাওয়া প্রয়োজন।’

এবার ৮৫ ভাগের ওপরে পাশের হার। যারা পাশ করেছে তাদের অভিনন্দন ও যারা পাশ করেনি তাদেরকে লেখাপড়ায় মনোযোগী হতে পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ পিইসি, ইবতেদায়ী ও জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার ফলাফলের সার-সংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন। এ বছর জেএসসিতে গড় পাসের হার ৮৫.৮৩ শতাংশ। এছাড়া জেএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৮ হাজার ৯৫ জন। শতভাগ পাশের প্রতিষ্ঠান ৪,৭৬৯টি। এছাড়া মাদ্রাসা বোর্ডে পাশে হার ৮৯.০৪ শতাংশ।

সোমবার বেলা ১২টায় শিক্ষামন্ত্রণালয় ও দুপুর ১টায় গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ফলাফল বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনের পর শিক্ষার্থীরা নিজেদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিংবা মোবাইলে খুদে বার্তার মাধ্যমে নিজ নিজ ফলাফল জানতে পারবেন।

গত পহেলা নভেম্বর শুরু হয় জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট-জেএসসি ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট-জেডিসি পরীক্ষা। এতে সারাদেশে অংশ নেয় ২৬ লাখ ৭০ হাজার ৩৩৩ জন শিক্ষার্থী। আর পিইসি ও ইবতেদায়ি পরীক্ষায় অংশ নেয় ৩০ লাখ ৯৫ হাজার ১২৩ জন শিক্ষর্থী।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর