জাতীয় নির্বাচনের আগে-ভাগে করিমগঞ্জে আওয়ামী লীগের বেহাল দশা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে-ভাগে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক দুরবস্থার প্রকট চিত্র প্রকাশ পেয়েছে।

২০০২ সালে কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের ৪৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছিল। দীর্ঘ ১৬ বছর সেই আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে চলছে করিমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ। এ সময়কালে আহ্বায়ক কমিটির ১৩ জন সদস্য মৃত্যুবরণ করেছেন। কাউন্সিল করে নতুন গতিশীল কমিটি করা দূরে থাকুন, ভঙ্গুর ও ক্ষয়িষ্ণু আহ্বায়ক কমিটিও সক্রিয় নেই। এমনই বেহাল দশায় পতিত হয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের করিমগঞ্জ উপজেলা শাখা।

দলীয় কার্যক্রমের অবনতি ও সাংগঠনিক পতনের জন্য নেতৃত্বের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ এনে বর্তমান নাম-স্বর্বস্ব কমিটি ভেঙে শক্তিশালী সাংগঠনিক কাঠামো গঠনের দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। দল বাঁচানোর স্বার্থে কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ তাড়াইল) আসনটি জাতীয় পার্টিকে না দিয়ে আওয়ামী লীগের ত্যাগী, শিক্ষিত, সৎ ও তৃণমূল

নেতাকর্মীদের কাছে গ্রহণযোগ্য নেতাকে নৌকা প্রতীক দিয়ে এমপি প্রার্থী করারও দাবি জানানো হয়েছে। করিমগঞ্জে আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি ও সংসদীয় আসনে দলের প্রার্থী মনোনয়নের দাবিতে সংবাদ সন্মেলন ও মানব বন্ধন হয়েছে। উপজেলা সদরের পাশাপাশি কিশোরগঞ্জ জেলা সদরেও নানা কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

বর্তমান  আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হাজি গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, হাজি আব্বাস উদ্দিন আহমেদ, হাজি হাফিজউদ্দিন ভূঁইয়া, মো. সাইদুজ্জামান চেনু, মো. জামাল উদ্দিন, মো. ছাবির উদ্দিন, মো. আবদুল হেলিম, মো.হরমুজ আলী, মো. মিজানুর রহমান প্রমুখ নতুন কমিটির জন্য দাবি জানিয়ে আসছেন। তারা বলেছেন, ‘এতো পুরনো ও কাজে অক্ষম কমিটি দিয়ে আওয়ামী লীগের মতো বড় ও জনপ্রিয় দল শক্তিশালী হতে পারে না।’

করিমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্যগণ ছাড়াও কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী দুই নেতা জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. মাহবুব ইকবালও আইটি

ব্যবসায়ী শেখ কবির আহমেদ, করিমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মো. ইকবাল ও অ্যাডভোকেট আবুল বাশার এবং দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা সংগঠন গতিশীল করার আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন।

কিশোরগঞ্জ  জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. মাহবুব ইকবাল সাংবাদিককে বলেন, ‘আহ্বায়ক কমিটি ১৬ বছর ধরে থাকতে পারে না। প্রয়োজন পূর্ণাঙ্গ কমিটি। যে আহ্বায়ক কমিটি ১৬ বছরেও সন্মেলন করে পূর্ণ কমিটি করতে পারেনা, তাদের অযোগ্যতা প্রমাণিত। অবিলম্বে এই কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি দিতে হবে।’

করিমগঞ্জ আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা সাংবাদিককে বলেন, ‘পকেটে কমিটি রেখে অযোগ্য নেতৃত্ব দলের সর্বনাশ করেছেন। জাতীয় কর্মসূচি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অনুপস্থিত থেকে আওয়ামীলীগকে করিমগঞ্জে একটি দুর্বল সংগঠনে পরিণত করেছেন। সংগঠনের এই চরম অবক্ষয় আর সহ্য করা যায় না। আমরা

করিমগঞ্জে শক্তিশালী আওয়ামী লীগ গড়তে চাই। ঢাকায় বসে করিমগঞ্জে আওয়ামী লীগ চালানোর নামে সংগঠনকে হত্যা করতে দেওয়া যায় না।

করিমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হাজি গিয়াস উদ্দিন আহমেদ এবং মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আগামী সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনটি জাতীয় পার্টিকে না দিয়ে আওয়ামী লীগের শিক্ষিত, সৎ ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছে গ্রহণযোগ্য নেতাকে নৌকা প্রতীক দিতে হবে। নইলে সংগঠন বাঁচানো মুস্কিল হবে।

যোগাযোগ করা হলে করিমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক নাসিরুল ইসলাম খান আওলাদ জানান,  ‘করিমগঞ্জে নানা কারণে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন সম্ভব হয়নি। তারপরও করিমগঞ্জে আওয়ামী লীগ শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। তবে জাতীয় পার্টি নৌকার নিশ্চিত আসনটি কৌশলে নিয়ে নেওয়ায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা চরম বঞ্চনার শিকার হয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর