ঢাকা ০৮:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের দেড় হাজার শাখা অনলাইন সুবিধার বাইরে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:১৮:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫
  • ৪১১ বার

অনলাইন ব্যাংকিং সেবায় পিছিয়ে রয়েছে সরকারি খাতের ব্যাংকগুলো। বর্তমানে সরকারি ব্যাংকের প্রায় ৫৮ শতাংশ শাখা অনলাইন সুবিধার বাইরে রয়েছে। অথচ বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকের প্রায় শত ভাগ শাখা অনলাইন সুবিধা দিচ্ছে গ্রাহকদের। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারি ব্যাংকে অটোমেশন কার্যক্রম (ডিজিটাল পদ্ধতি) যথাযথভাবে সম্পাদিত না হওয়ায় ব্যাংকগুলোতে সুশাসন ও স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে না। আবার এর গ্রাহকরাও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাদের মতে, সরকারি ব্যাংকগুলো পুরোপুরি অটোমেশনের আওতায় এলে অনিয়ম ও দুর্নীতি কমে আসবে। সেইসঙ্গে ব্যাংকগুলোর আর্থিক সূচকেও উন্নতি হবে বলে মনে করেন তারা। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে পুরোপুরি অটোমেশনের আওতায় আসার দিকনির্দেশনা রয়েছে।

বর্তমানে সরকারি খাতের ব্যাংক রয়েছে আটটি। এর মধ্যে পাঁচটি রাষ্ট্রায়ত্ত ও তিনটি বিশেষায়িত ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, জুন শেষে সরকারি খাতের আট ব্যাংকের মোট শাখা দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৮৯টি। এর মধ্যে অনলাইনের আওতায় এসেছে ২ হাজার ১৫৫টি। শতকরা হিসাবে এ হার ৪২ দশমিক ৩৪ শতাংশ। অর্থাৎ এসব ব্যাংকের ৫৮ শতাংশ শাখা এখনও অ্যানালগ। প্রতিবেদন অনুযায়ী, সরকারি ব্যাংকের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী ও বেসিক এ পাঁচ ব্যাংকের ৩ হাজার ৬৮৩টি শাখার মধ্যে অনলাইন সুবিধার আওতায় এসেছে ২ হাজার ৭৯টি। শতকরা হিসাবে এ হার ৫৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ। অন্যদিকে সরকারি খাতের বিশেষায়িত তিন ব্যাংক তথা বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ১ হাজার ৪০৬ শাখার মধ্যে অনলাইন সুবিধায় থাকা শাখার সংখ্যা মাত্র ৭৬টি। শতকরা হার মাত্র ৫ দশমিক ৪১ শতাংশ।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, জুন শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মোট অ্যাকাউন্ট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৪৭ লাখ ৫৭ হাজার ২৬৬। এর মধ্যে অনলাইন বা ই-ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করেছে এমন অ্যাকাউন্ট সংখ্যা ৩ হাজার ১৪৬। শতকরা হার দশমিক ০১ শতাংশ। এর মধ্যে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা নেন মাত্র ২৭ জন। আর এসএমএস/মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা নেন ৩ হাজার ১১৯ জন। বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর ১ কোটি ৫০ লাখ ১ হাজার ২৩৭টি হিসাবের মধ্যে কোনো অ্যাকাউন্টই ইন্টারনেট ব্যাংকিং গ্রাহক নেই। তবে মোবাইল/এসএমএস গ্রাহক রয়েছেন ১২ হাজার ১২৬ জন।

প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, জুন ভিত্তিতে বেসরকারি বাণিজ্যিক ৩০টি ব্যাংকের শাখা রয়েছে ৩ হাজার ৮৩৮। এর মধ্যে ৩ হাজার ৮৩৭ বা ৯৯ দশমিক ৮৪ শতাংশ শাখা অনলাইনের আওতায় এসেছে। নতুন ৯টি ব্যাংকের ২০২টি শাখার মধ্যে অনলাইন সুবিধায় রয়েছে ১৯৮ বা ৯৮ দশমিক ০২ শতাংশ। আর বিদেশি ৯ ব্যাংকের ৭৫টি শাখাই অনলাইনের আওতায় রয়েছে। এ সময় পর্যন্ত বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ৩ কোটি ৫৯ লাখ ৬০ হাজার ৯০ গ্রাহকের মধ্যে ১৪ লাখ ৬ হাজার ৮২৫ জন ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা নেন। এছাড়া ১ কোটি ৫৪ লাখ ৭ হাজার ৪৪২ গ্রাহক এসএমএস/ মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা গ্রহণ করেন। বিদেশি ব্যাংকগুলোর গ্রাহক রয়েছেন ৪ লাখ ৬৫ হাজার ২০০ জন। এর মধ্যে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা গ্রহণ করেন ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৬৯ জন। আর এসএমএস/মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা গ্রহণ করেন ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯১ জন। নতুন ব্যাংকগুলোর ২ লাখ ৯৭ হাজার ১৬৯ গ্রাহকের মধ্যে ৩ হাজার ৭১০ জন ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা গ্রহণ করেন। এছাড়া ৯১ হাজার ৯৬৬ গ্রাহক এসএমএস/মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা নেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের দেড় হাজার শাখা অনলাইন সুবিধার বাইরে

আপডেট টাইম : ১১:১৮:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫

অনলাইন ব্যাংকিং সেবায় পিছিয়ে রয়েছে সরকারি খাতের ব্যাংকগুলো। বর্তমানে সরকারি ব্যাংকের প্রায় ৫৮ শতাংশ শাখা অনলাইন সুবিধার বাইরে রয়েছে। অথচ বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকের প্রায় শত ভাগ শাখা অনলাইন সুবিধা দিচ্ছে গ্রাহকদের। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারি ব্যাংকে অটোমেশন কার্যক্রম (ডিজিটাল পদ্ধতি) যথাযথভাবে সম্পাদিত না হওয়ায় ব্যাংকগুলোতে সুশাসন ও স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে না। আবার এর গ্রাহকরাও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাদের মতে, সরকারি ব্যাংকগুলো পুরোপুরি অটোমেশনের আওতায় এলে অনিয়ম ও দুর্নীতি কমে আসবে। সেইসঙ্গে ব্যাংকগুলোর আর্থিক সূচকেও উন্নতি হবে বলে মনে করেন তারা। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে পুরোপুরি অটোমেশনের আওতায় আসার দিকনির্দেশনা রয়েছে।

বর্তমানে সরকারি খাতের ব্যাংক রয়েছে আটটি। এর মধ্যে পাঁচটি রাষ্ট্রায়ত্ত ও তিনটি বিশেষায়িত ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, জুন শেষে সরকারি খাতের আট ব্যাংকের মোট শাখা দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৮৯টি। এর মধ্যে অনলাইনের আওতায় এসেছে ২ হাজার ১৫৫টি। শতকরা হিসাবে এ হার ৪২ দশমিক ৩৪ শতাংশ। অর্থাৎ এসব ব্যাংকের ৫৮ শতাংশ শাখা এখনও অ্যানালগ। প্রতিবেদন অনুযায়ী, সরকারি ব্যাংকের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী ও বেসিক এ পাঁচ ব্যাংকের ৩ হাজার ৬৮৩টি শাখার মধ্যে অনলাইন সুবিধার আওতায় এসেছে ২ হাজার ৭৯টি। শতকরা হিসাবে এ হার ৫৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ। অন্যদিকে সরকারি খাতের বিশেষায়িত তিন ব্যাংক তথা বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ১ হাজার ৪০৬ শাখার মধ্যে অনলাইন সুবিধায় থাকা শাখার সংখ্যা মাত্র ৭৬টি। শতকরা হার মাত্র ৫ দশমিক ৪১ শতাংশ।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, জুন শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মোট অ্যাকাউন্ট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৪৭ লাখ ৫৭ হাজার ২৬৬। এর মধ্যে অনলাইন বা ই-ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করেছে এমন অ্যাকাউন্ট সংখ্যা ৩ হাজার ১৪৬। শতকরা হার দশমিক ০১ শতাংশ। এর মধ্যে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা নেন মাত্র ২৭ জন। আর এসএমএস/মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা নেন ৩ হাজার ১১৯ জন। বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর ১ কোটি ৫০ লাখ ১ হাজার ২৩৭টি হিসাবের মধ্যে কোনো অ্যাকাউন্টই ইন্টারনেট ব্যাংকিং গ্রাহক নেই। তবে মোবাইল/এসএমএস গ্রাহক রয়েছেন ১২ হাজার ১২৬ জন।

প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, জুন ভিত্তিতে বেসরকারি বাণিজ্যিক ৩০টি ব্যাংকের শাখা রয়েছে ৩ হাজার ৮৩৮। এর মধ্যে ৩ হাজার ৮৩৭ বা ৯৯ দশমিক ৮৪ শতাংশ শাখা অনলাইনের আওতায় এসেছে। নতুন ৯টি ব্যাংকের ২০২টি শাখার মধ্যে অনলাইন সুবিধায় রয়েছে ১৯৮ বা ৯৮ দশমিক ০২ শতাংশ। আর বিদেশি ৯ ব্যাংকের ৭৫টি শাখাই অনলাইনের আওতায় রয়েছে। এ সময় পর্যন্ত বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ৩ কোটি ৫৯ লাখ ৬০ হাজার ৯০ গ্রাহকের মধ্যে ১৪ লাখ ৬ হাজার ৮২৫ জন ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা নেন। এছাড়া ১ কোটি ৫৪ লাখ ৭ হাজার ৪৪২ গ্রাহক এসএমএস/ মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা গ্রহণ করেন। বিদেশি ব্যাংকগুলোর গ্রাহক রয়েছেন ৪ লাখ ৬৫ হাজার ২০০ জন। এর মধ্যে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা গ্রহণ করেন ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৬৯ জন। আর এসএমএস/মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা গ্রহণ করেন ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯১ জন। নতুন ব্যাংকগুলোর ২ লাখ ৯৭ হাজার ১৬৯ গ্রাহকের মধ্যে ৩ হাজার ৭১০ জন ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা গ্রহণ করেন। এছাড়া ৯১ হাজার ৯৬৬ গ্রাহক এসএমএস/মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা নেন।