ইসিতে চলছে যাচাই-বাছাই কমে গেছে নতুন দলের সংখ্যা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নিবন্ধন পেতে ৭৫টি রাজনৈতিক দল আবেদন করেছিল নির্বাচন কমিশনে (ইসি)। কমিশনের নিবন্ধন শাখার প্রাথমিক বাছাইয়ে বাদ পড়ে ১৯টি। বাকি ৫৬ দলকে ১৫ দিন সময় দিয়ে অসম্পূর্ণ কাগজপত্র জমা দিতে পত্র দেয় ইসি। কিন্তু আরো ৯টি দল তথ্য না দিয়ে নিজেদের গুটিয়ে নেয়। ফলে বাকি ৪৬ দলের তথ্য যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত হয়। এসব দলের অধিকাংশই তথ্য যাচাই-বাছাইয়ে ত্রুটি পেয়েছে বাছাই কমিটির সদস্যরা।

তারা বলেছেন, মাঠ পর্যায়ে তদন্তে পাঠানো যায় এমন যোগ্য দলের সংখ্যা নিরূপণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে; এরপরও সর্বসাকুল্যে যোগ্য দলের সংখ্যা দাঁড়াতে পারে ৫-৬টি। আর ওই সংখ্যা ১০ এর ওপরে নয় বলে জানিয়েছেন দল বাছাইয়ে থাকা কমিটির সদস্যরা। সেই বিবেচনায় বলা যায়, কমে আসছে নতুন দলের সংখ্যা। খবর দায়িত্বশীল সূত্রের।

দল বাছাই কমিটির একাধিক সদস্যের সঙ্গে আলাপে তারা জানান, বাড়ি ভাড়ার যে রশিদ জমা দিয়েছে তা মনগড়া; কারণ সারা দেশেই একই ভাড়া উল্লেখ করেছে। বাড়ি ভাড়ার চুক্তির অঙ্গীকারনামা ১০০ উপজেলার সংখ্যা সমপরিমাণ দেওয়ার কথা; গুনে দেখা গেছে ৮০টি; ওই দলটির নাম বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি, ঘরে বসেই তৈরি করা গঠনতন্ত্র জমা দিয়েছে কোনো কোনো দল।

কেউ দিয়েছে অন্য দলের গঠনতন্ত্র কপি পেস্ট করে; এমন একটি দল জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম)। রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকার নামায় অসংগতি, অঙ্গ সংগঠন ও সহযোগী সংগঠন কি সে সম্পর্কে ধারণা না থাকা কিংবা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, নিজস্ব অফিস দেখালেও কমিটির ২০০ সদস্যে উল্লেখ করলেও একজনের স্বাক্ষর না থাকা এবং সংশোধিত গঠনতন্ত্রের কপি জমা না দেওয়া।

নিবন্ধন শাখায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত বাছাই কমিটির তিনজন সদস্য তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। জমা পড়া দলের সংখ্যা ১৮টি, যার মধ্যে ৩টিকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত করা হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি ও বাংলাদেশ নিউ সংসদ লিগ। বাছাইয়ে এখন পর্যন্ত অযোগ্য দলগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ তৃণমূল জনতা পার্টি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ, ন্যাশনাল কংগ্রেস বাংলাদেশ, কৃষক শ্রমিক পার্টি (কেএসপি),

বাংলাদেশ গণশক্তি দল, বেঙ্গল জাতীয় কংগ্রেস, ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জনতা পার্টি, বাংলাদেশ সমাজ উন্নয়ন পার্টি (বিএসডিপি), বাংলাদেশ জাতীয় লিগ, বাংলাদেশ সত্যব্রত আন্দোলন, বঙ্গবন্ধু দুস্থ ও প্রতিবন্ধী উন্নয়ন পরিষদ, বাংলাদেশ মানবাধিকার আন্দোলন (বিএমএ), বাংলাদেশ আলোকিত পার্টি, বাংলাদেশ সমাধান ঐক্য পার্টি (বসবাস) ও বাংলাদেশ কর্মসংস্থান আন্দোলন। এ ছাড়াও নিবন্ধন বাছাই প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকা বাকি দলগুলোর অবস্থাও একই।

এদিকে, প্রাথমিক বাছাইয়ে যোগ্য দলগুলোর মধ্যে ৯টি দল তাদের সংশোধিত কাগজপত্র জমা দেয়নি। এগুলো হলো বাংলাদেশ মঙ্গল পার্টি, নাকফুল বাংলাদেশ, বাংলাদেশ পরিবহর লেবার পার্টি, বাংলাদেশ তৃণমূল পার্টি (বিটিপি), লিবারেল পার্টি-এলপি, মুক্তিযোদ্ধা কমিউনিটি পার্টি, সোনার বাংলা উন্নয়ন লীগ, বাংলাদেশ রামকৃষ্ণ পার্টি ও ঐক্য ন্যাপ।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৩০ অক্টোবর নতুন রাজনৈতিক দলকে আবেদন করার বিজ্ঞপ্তি জারি করলে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আবেদন করে ৭৫টি দল। গত ৮ মার্চ দলগুলোর তথ্য যাচাই-বাছাই করে ১৯টি দলকে নিবন্ধনে অযোগ্য এবং ৫৬টি দলকে প্রাথমিকভাবে মনোনীত করে। তবে, ৯টি দল তথ্য না দেওয়ায় ইসির বাছাই থেকে ছিটকে পড়ে।

বাকি ৪৬টি দলের তথ্য যাচাই করে নানা অসংগতি খুঁজে পেয়েছে বাছাই কমিটি। তবে, মান রক্ষার্থে কিছুটা শর্ত পূরণ করেছে এমন ৫-৬টি দলকে মাঠ পর্যায়ের তথ্য যাচাইয়ে পাঠানো হতে পারে। তবে, সেটিও কমিশনের সিদ্ধান্তের পর। এসব দল আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-বিএনপির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর