নামজারি কেস করার নিয়মাবলী

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কোন নামজারি কেসের প্রাথমিক প্রস্তাব অনুমোদনের পর খতিয়ান ফি আদায় পূর্বক একটি খতিয়ান নাম্বার প্রদান করা হয়। এই খতিয়ান নাম্বার প্রদানকালে এবং নাম্বারের সিরিয়াল প্রদানের ক্ষেত্রে দেশের বিভিন্ন এলাকার তহশীল অফিসসমূহ বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করে। কোন কোন তহশীল অফিস মূল খতিয়ান নাম্বারের বাটা খতিয়ান (যেমন-৭৩/১,৭৩/২…… ইত্যাদি) হিসেবে খতিয়ান নাম্বার প্রদান করে। কোন কোন অফিস এসএ/আরএস খতিয়ানের সর্বশেষ নাম্বারকে ভিত্তি করে ধারাবাহিকভাবে পরবর্তী নাম্বার প্রদান করে। এ বিষয়ে সারা দেশে একই ধরনের নিয়ম চালু করা উচিত।

এ বিষয়ে ভূমি প্রশাসন বোর্ডের ১৮/০৭/৮৪ তারিখের মোমো নং-২১-এ এস-১৭/৮৪(১৪০) এর মাধ্যমে জারিকৃত সার্কুলারে নির্দেশনা জারি করা হয় যে, নতুন খতিয়ান নাম্বার এমনভাবে দিতে হবে যাতে করে পুরাতন (মূল) খতিয়ানের সংঙ্গে সম্পর্ক থাকে। যদি কোন খতিয়ানের কাহারও নিকটে হস্তান্তরিত হয় তাহলে খতিয়ানের নাম্বার পুরাতনটিই থাকা উচিত। যদি কোন খতিয়ানের জমি আংশিকভাবে এক বা একাধিক ব্যক্তির নিকটে হস্তান্তরিত হয় তাহলে প্রত্যেক ব্যক্তির নামে পৃথক খতিয়ান চালু করার সময় বাটা নাম্বার হিসেবে খতিয়ানের নাম্বার হবে। উদাহরণস্বরুপ মূল খতিয়ানের নাম্বার ১০ হলে, বিভক্ত খতিয়ানের নাম্বার হবে ১০/১,১০/২……ইত্যাদি। খতিয়ানভুক্ত মালিকের নামে কিছু জমি থাকলে তা মূল খতিয়ানে বহাল থাকবে।এর পরবর্তীতে নতুন কোন ব্যাখ্যা ভূমি মন্ত্রণালয় হতে প্রদান করা হয়নি।।

জমিদারী অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন-১৯৫০ এর ১৪৩ ধারার বিধান মোতাবেক কালেক্টর বা তার ক্ষমতাপ্রাপ্ত রেকর্ড সংশোধন করে খতিয়ান প্রস্তুত করেন, আর একই আইনের ১৪৪ ধারার বিধান মোতাবেক জরিপ কার্য পরিচালনা করে নতুন খতিয়ান তৈরি করা হয়। তাই কোন আদালত কর্তৃক বাতিল না করা পর্যন্ত এস এ্যান্ড টি অ্যক্ট এর ১৪৩ ধারার বিধান মোতাবেক কালেক্টর বা তার ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্তৃক প্রস্তুতকৃত খতিয়ান মূল রেকর্ডের সমমর্যাদা পাবে। মূল খতিয়ানের বাটা নাম্বার হিসেবে খতিয়ান নাম্বার প্রদান করা হলে উক্ত খতিয়ানগুলো সিরিয়াল অনুযায়ী মূল বহিতে সংযুক্ত করা কঠিন হবে। এস/আর এস খতিয়ানের সর্বশেষ নাম্বারকে ভিত্তি করে ধারাবাহিকভাবে পরবর্তী নাম্বার প্রদান করা হলে খতিয়ানগুলো কোন বহির সর্বশেষে সংযুক্ত করা সহজ অথবা পৃথকভাবে বহি আকারে বেধেঁ রাখা সহজ হবে। রেকর্ডরুমেও তা সহজে সংরক্ষণ করা যাবে।

২ নং রেজিস্টার অর্থাৎ তলববাকী রেজিস্টার এ হোল্ডিং নাম্বার প্রদানের কিছু বিধিবদ্ধ নিয়ম আছে। ২ নং রেজিস্টার এ ১ নং এ ১ নং সরকারি খাস খতিয়ানটি অন্তর্ভুক্ত থাকে না, কারণ ১ নং খতিয়ানের জমির ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ কারার প্রয়োজন নাই বা কোন দাবি নির্ধারণ হয় না। তাই যে কোন মৌজার ২ নং খতিয়ানকে যে কোন তলব বাকী রেজিস্টারের (২ নং রেজিস্টার) প্রথম হোল্ডিং হিসেবে ধরা হয় (তলব বাকী বা ২ নং রেজিস্টারের প্রতিটি খতিয়ান নাম্বারকে হোল্ডিং নাম্বার হিসেবে বলা হয়)। এ নিয়ম অনুযায়ী ২ নং খতিয়ানের হোল্ডিং নাম্বার হবে ১, এবং ১০০ নাস্বার খতিয়ানের হোল্ডিং নাম্বার হবে ৯৯… ইত্যাদি। আবার কোন কোন এলাকায় ১ নং খতিয়ানকে ১ নং হোল্ডিং উল্লেখ করে তলববাকী রেজিস্টার চালু করে ১ নং হোল্ডিং এ ভূমি উন্নয়ন কর আদায়যোগ্য নয় মর্মে উল্লেখ করা হয়েছে। এ নিয়মে খতিয়ান নাম্বারেরর সংঙ্গে হোল্ডিং নাম্বারের মিল থাকে, যা সহজে ২ নং রেজিস্টার থেকে খুঁজে বের করা সহজ। বাটা নাম্বার হিসেবে খতিয়ানের নাম্বার প্রদান করা হলে এ নিয়স সানা সম্ভব হবে না।ফলে খতিয়ান নাম্বারের সংঙ্গে হোল্ডিং নাম্বারের কোন সম্পর্ক থাকবে না। আবার হোল্ডিং নাম্বারের ক্ষেত্রে বাটা নাম্বার চালু করা হলে ২ নং রেজিস্টারে সিরিয়ালে তা অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। ফলে সুশৃংখল ভূমি ব্যবস্থাপনার অন্তরায় হবে। কিন্তু ভূমি প্রশাসন বোর্ডের ১৮/০৭৮৪ তারিখের মোমে নং- ২১-এস- ১৭/৮৪(১৪০) এর মাধ্যমে জারিকৃত সার্কুলার সংশোধন না করে উক্ত সার্কুলাওে বর্ণিত নিয়ম ছাড়া অন্য নিয়মে খতিয়ান চালু করা যুক্তিযুক্ত হবে না।

তাই খতিয়ানে নতুন নাম্বার প্রদানের ক্ষেত্রে ভূমি প্রশাসন বোর্ডের ১৮/০৭/৮৪ তারিখের মোমো নং-২১-এ এস-১৭/৮৪(১৪০) এর মাধ্যমে জারিকৃত সার্কুলার এর দফা-৪ সংশোধন করে কোন মৌজার এসএ/আরএস রেকর্ডের সর্বশেষ খতিয়ান নাম্বারে পরবর্তী নাম্বারকে ব্যবহার করার নির্দেশনা চেয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের দৃস্টি আকর্ষণ করা উচিত। কোন ভূমি অফিসে ভিন্নতার কোন পদ্ধতি চালু থাকলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর উচিত বিষয়টি সুশৃংখল অবস্থায় আনায়ন করা।

প্রতিটি ভূমি অফিসে মৌজাভিত্তিক পৃথক ফাইল চালু করে নতুন অনুমোদিত খতিয়ান সংরক্ষণের ব্যবস্থা কার উচিত। একটি নির্দিষ্ট সময়, যেমন-ছয় মাস পর পর অনুমোদিত খতিয়ানগুলো মৌজাভিত্তিক সজ্জিত করে পৃথক বহি বাধাঁই করা উচিত অথবা ১ নং রেজিস্টারের বহিতে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। একই ভাবে খতিয়ানগুলো কিছু সময় পর পর একত্র করে সুশৃংখল অবস্থায় জেলা রেকর্ড রুমে প্রেরণা করা উচিত।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর