রানা দাশকে আ.লীগের জিজ্ঞাসা, কয়জনকে কিনেছেন তিনি

আওয়ামী লীগে ১৫-২০ টাকা দিয়ে লোক পাওয়া যায়-হিন্দু বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্তের এমন বক্তব্যকে ‘ভিত্তিহীন’ ও ‘অবান্তর’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। তারা বলেছেন, ‘একজন প্রবীণ আইনজীবী হয়েও তিনি আওয়ামী লীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছে তা আপত্তিকর।’
রানা দাশগুপ্তের বক্তব্য নিয়ে কথা বলতে গিয়েও বিব্রত হয়েছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। দলের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, ‘তিনি কেন এ কথা বললেন বুঝলাম না। বিষয়টি দেখেনি। তারপর কথা বলবো।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর অন্যতম সদস্য ও গণপূর্ত মন্ত্রী মোশাররফ হোসেন পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন, বলছেন, ‘রানা দাশ কয় টাকা দিয়ে কজন আওয়ামী লীগ নেতাকে কিনেছেন?’
দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তও বিব্রত। স্পষ্টই বললেন, ‘দল নিয়ে রানা দাশগুপ্ত যখন মন্তব্য করেছেন তখন দলীয়ভাবেই এর জবাব দেয়া উচিত।’
সোমবার ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে একান্ত সাক্ষাৎকার দেন রানা দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগে ১৫-২০ টাকা দিয়ে লোক পাওয়া যায়। এরা হচ্ছে ঘেটু। মিয়া আছে তো তার পেছনে ১৫ জন। কিছু আছে পানি পেলেও মনে করে ধন্য ধন্য।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত তো রাজনৈতিক এক্সক্লুশনে বিশ্বাস করে। তাদের মধ্যে আমাদের নামের (হিন্দু) কোনো দালাল নেই। আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে রাজনৈতিক ইনক্লুশনে। তাদের মধ্যে দালাল আছে। যারা ১০-২০ টাকায় বিক্রি হয়।’
রানা দাশগুপ্তের বক্তব্যের ব্যাপারে জানতে চাইলে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘রানা দাশগুপ্তের বক্তব্যে ঘোর আপত্তি জানাচ্ছি। তিনি কয়টা নেতাকর্মীকে টাকা দিয়ে কিনেছেন? তার কাছে কী প্রমাণ আছে? তিনি কয়জন হিন্দুর সঙ্গে মিশেছেন? তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন এটা তো তার মত। গোটা হিন্দু সম্প্রদায়ের মত তো এটা না।’
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এই নেতা বলেন, ‘অতীতে জাতীয় পার্টি, বিএনপি-জামায়াতের সময়ে সংখ্যালঘুদের ওপর যত সহিংসতা হয়েছে তারা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের কাছে আশ্রয়ের জন্য এসেছে। আমরা সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার করেছি। এখন রানা দাশগুপ্ত যেসব অভিযোগ করছেন তা দুঃখজনক।’
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বিস্ময় প্রকাশ করেছেন রানা দাশগুপ্তের বক্তব্যে। তিনি বলেন, ‘টাকা দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের কেনা যায়, তারা দালাল এসব কথা বলে তিনি কী বোঝাতে চেয়েছেন এটা তিনিই ভাল জানেন। তবে আমি একটুই বলতে পারি এর সঙ্গে আওয়ামী লীগের দূরতম কোনো সম্পর্ক নেই। তার এই বক্তব্য ভিত্তিহীন। মুখে অনেক কথাই বলা যায়, বাস্তবতা ভিন্ন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর