সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগে ‘বিস্তারিত তথ্য’ দিতে হবে

সিঙ্গাপুরে বসে বাংলাদেশে নাশকতার পরিকল্পনাকারী ৮ বাংলাদেশিকে গ্রেফতারের পর প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিয়ে সিঙ্গাপুরে চলছে আলোচনা ও সমালোচনা। বাংলাদেশি শ্রমিকদের ওয়ার্ক পারমিট দেওয়ার আগে আরো তথ্য সংগ্রহ করার তাগিদ দিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। একাধিক নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান দ্য স্ট্রেইট টাইমসকে তাদের মতামত জানিয়েছেন।

মতামতের মধ্যে অতিরিক্ত তথ্যের বিষয়ে বলা হয়েছে, শ্রমিকের বাবা- মায়ের নাম, পারিবারিক অতীত কেমন ছিল ও নিজের জেলা সম্পর্কে আরো বিস্তারিত তথ্য প্রয়োজন হবে। গত বছরের শেষের দিক থেকে বাংলাদেশি শ্রমিকদের এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে সিঙ্গাপুরে।

কেএফ এমপ্লয়িমেন্ট কনসালটেন্টের স্বত্ত্বাধীকারী কেন্ট এনজি বলেন, আমরা বাংলাদেশি শ্রমিকদের পরিবারের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করি।

গত বছরের নভেম্বর ও ডিসেম্বরে সিঙ্গাপুরের নিরাপত্তা বাহিনী ২৭ বিপথগামী বাংলাদেশি শ্রমিককে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অপরাধে দেশে পাঠিয়ে দিয়েছিল। আরো ৮জন বাংলাদেশি বিপথগামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে মঙ্গলবার। প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় এই তথ্য জানায় দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

সিঙ্গাপুরের জনশক্তি মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানায়, বাংলাদেশি শ্রমিকদের প্রবেশ ও কাজের জন্য সংশ্লিষ্ট পরামর্শ এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন গ্রহণ ও অনুমোদন করা হয়। বাংলাদেশি নাগরিকরা আমাদের দুইটি প্রধান কাজের উৎস। এর মধ্যে একটি হচ্ছে সামুদ্রিক অন্যটি প্রক্রিয়া শিল্প।

বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায় খোদ সিঙ্গাপুরেই। কেএফ এমপ্লয়িমেন্ট কনসালটেন্টের স্বত্ত্বাধীকারী কেন্ট এনজি বাংলাদেশি শ্রমিকদের প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশি শ্রমিকদের ভারতের শ্রমিকদের চেয়ে কম বেতনে কাজ করানো যায়। তাদের সিঙ্গাপুরে অনেক চাহিদা রয়েছে। অধিকাংশ বাংলাদেশি শ্রমিক কঠোর পরিশ্রমী ও ভালো মানুষ।

এর ব্যতিক্রমও মন্তব্য দেখা যায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিয়ে। পিপল ওয়াল্ডওয়াইড কনসালটিংয়ের স্বত্ত্বাধীকারী ডেভিড লিয়ং বলেন, গত ১২ মাসে সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশি শ্রমিকদের চাহিদা হ্রাস পেয়েছে। বাংলাদেশি শ্রমিকরা সম্ভাব্য বিপথে যেতে পারে তাই তাদের চাহিদা হ্রাস পেয়েছে বলে অনেকে জানিয়েছেন।

জন লিও ২৩ বছর ধরে জনশক্তি এজেন্টের কাজ করছেন। শ্রমিক আমদানির উৎস দেশে প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের আনার পরামর্শ দেন তিনি। জি এইচ ফং শিক্ষা দানের পদক্ষেপ হাতে নিয়েছেন। তার ভাষায়, আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি তাদের সঠিক পথে রেখে কাজ করানোর জন্য। তবে বিপথগামীদের নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। তারা সবার সঙ্গে মিশে যায়।

এদিকে কেএসপি এমপ্লয়িমেন্ট এজেন্সির প্রতিষ্ঠাতা জ্যাকি লি অনলাইনের মাধ্যমে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে তাদের সম্পর্কে ইতিবাচক সাড়া পেলে দেশে আনার পরামর্শ দিয়েছেন। এই ক্ষেত্রে একজন মনোবিদ রাখার পরামর্শ দেন তিনি।

যে দেশের নাগরিকরা খুব সহজে অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হয় তাদের পরীক্ষার মাধ্যমে মার্জিত ও পরিশোধন করা উচিৎ। যদি বিপথগামী কর্মীরা এখানে আসে তবে তারা সবার জন্যই ক্ষতিকর। যেমন: বাংলাদেশি শ্রমিকদের দিকে এখন সবার আঙ্গুল। এটি বাংলাদেশের অন্য শ্রমিকদের ভাবমূর্তি নষ্ট করবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর