তনু হত্যা, মোবাইল ফোনের চাঞ্চল্যকর তথ্য

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের মেধাবী ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যার ভিসেরা রিপোর্ট তৈরি হয়েছে। শনাক্ত হয়েছে জড়িতরা। মোবাইল ফোনে সংবাদকর্মীদের এমন তথ্য নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম সিআইডির ঊধ্বর্তন এক কর্মকর্তা!

তবে এর সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে চাঞ্চলকর তথ্য। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ফোনে কোনো কথাই বলেননি বলে জানান। তার সন্দেহ মোবাইল ফোনের সিম ক্লোন করে এ কাজ করেছে একটি চক্র। তাদের ধরতে মাঠে নেমেছে সিআইডি।

চ্যানেল২৪ থেকে নেয়া অজ্ঞাত ব্যক্তি ও সিআইডির কথোপকথন তুলে ধরা হলো-

অজ্ঞাত ব্যক্তি : সিআইডি কর্মকর্তার সিম ক্লোন করে অজ্ঞাত ব্যক্তির সাথে কথোপকথন, আমার কাছে সবকিছু আছে। রিপোর্টটা এখনই করে দেন। আপনি চাইলে আমি যেকোনো মুহূর্তে সব ফুটেজগুলো দিয়ে দিতে পারি।

সিআইডি : তাহলে সেগুলো এখনই পাঠিয়ে দেন।

অজ্ঞাত ব্যক্তি : আপনি তো সবগুলোই মনে হয় করছেন। না কি এখনো করেননি।

গত রোববার রাতে সিআইডির এক কর্মকর্তার সরকারি মোবাইল ফোন ব্যবহার করে এক সংবাদকর্মীকে কুমিল্লার

চাঞ্চল্যকর তনু হত্যা সম্পর্কে এভাবেই তথ্য দেন অজ্ঞাত এক ব্যক্তি। একইভাবে ফোনে কথা হয় আরো কয়েকজন সংবাদকর্মীর সাথে। তাদেরও দেয়া হয় একই তথ্য।

এমন কিছু স্পর্শকাতর তথ্য দেয়া হয় তা শুনে সন্দেহ হলে অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে আসল রহস্য।

দৈনিক সমকালের স্টাফ রিপোর্টার তারেক মাহমুদ বলেন, অফিসিয়াল নাম্বার থেকে বলা হয়- এই রিপোর্টটা যেন আমাদের অনলাইনে খুব তাড়াতাড়ি পাবলিশ করে দিই। এ কথা শুনে আমার সন্দেহ হয়। এরপর সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের ব্যক্তিগত ফোনে ফোন করে জানতে পারি, আসলে মিথ্যা তথ্য দেয়া হয়েছে।

যার নাম ব্যবহার করে এসব তথ্য দেয়া হয়েছিল এ বিষয়ে সিআইডির সেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, এমন কোনো তথ্য তো দেয়া দূরে থাক কারো সাথে তিনি কথাই বলেননি। মোবাইল সিমটি ক্লোন হয়েছে বলে ধারণা করছেন তিনি।

এ ঘটনার পর খুলশী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন কুতুবউদ্দিন। স্পর্শকাতর বিষয়ে গুজব ছড়াতেই প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে একটি চক্র বলে মনে করেন তিনি, তাতে তারা টার্গেট করেছেন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কর্মকর্তাদের মোবাইল ফোন নম্বর।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, এ বার্তা বিশ্বাসযোগ্য করতে চক্রটি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সিম বেছে নিয়েছে। যারা এ ধরনের ফাঁদ পেতেছে তাদের ধরতে সংশ্লিষ্ট থানার পাশাপাশি সিআইডিও মাঠে রয়েছে।

এদিকে তনুর বাবা গতকাল গণমাধ্যমকে বলেছেন, আমার তনুর মরদেহ নিয়ে কত টানা-হেঁচড়া হলো, কবর থেকে মরদেহ তোলা হলো। এখন কেউ বলে পাশবিক নির্যাতন করেছে আবার কেউ বলে পাশবিক নির্যাতন করা হয়নি, এসব শুনতে আর ভালো লাগে না। মেয়ের বিচারটা কি দেখে যাইতে পারুম না। আমার তনুকে তো জিনে মারেনি।

গত ২০ মার্চ রোববার রাতে তনুকে সেনানিবাস এলাকায় হত্যা করে হায়েনারূপী দুর্বৃত্তরা। ওইদিন রাতে সেনানিবাস এলাকা থেকে তনুর লাশ উদ্ধার করা হয়। ২১ মার্চ সন্ধ্যায় তনুকে তাদের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার মির্জাপুর গ্রামে দাফন করা হয়। অধিকতর আলামত সংগ্রহের জন্য আবার তনুর মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর