হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেছেন, দেশের ৮০ ভাগ মানুষের মুখে হাসি নেই। রাজনৈতিক নেতারা শুধু ধনী ও শিক্ষিতদের কথা বলেন। রাজনীতিতে এখন সত্যের মতো করে মিথ্যার চর্চা চালু হয়েছে। শুক্রবার হাটহাজারী পার্বতী হাইস্কুল ময়দানে দু’দিনব্যাপী তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের সমাপনী দিনে প্রধান অতিথি বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। আল্লামা শফী বলেন, আজ সর্বত্র ইসলামকে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চলছে। নাস্তিক্যবাদী ও ষড়যন্ত্রকারীরা এ সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে। ইসলামে অসত্য, অন্যায়, সন্ত্রাস ও ষড়যন্ত্রের কোনো স্থান নেই। ইসলাম ন্যায় ও শান্তির ধর্ম। ইসলামকে অনুসরণ করতে পারলে এদেশে কোনো হানাহানি ও সন্ত্রাস থাকবে না। তিনি বলেন, ইসলামী শিক্ষায়ও কোনো প্রকার সন্ত্রাসের স্থান নেই। যারাই আলেম-ওলামা ও কওমি মাদরাসায় জঙ্গিবাদের অভিযোগ আনে, তারাই প্রকৃত সন্ত্রাসী, জালেম ও মিথ্যুক। নিজেদের অপরাধ ঢাকার জন্যই তারা নিরীহ আলেম-ওলামাকে টার্গেট করেছে। ওলামা-মাশায়েখগণ সব সময় সন্ত্রাস, মিথ্যা ও জুলুম-অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার। আল্লামা শফী বলেন, এখনকার মানুষ খুবই সচেতন। যত মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্রই হোক না কেন জালেমদের উৎখাত একদিন অনিবার্য। বক্তৃতা-বিবৃতি, ওয়াজ মাহফিলসহ নানা পর্যায়ে ঈমান-আক্বীদা, নামাজ-রোজা ও মাসআলা-মাসাইলের বয়ানের পাশাপাশি মানুষের অধিকার নিয়েও কথা বলার আহবান জানান তিনি। তিনি বলেন, গ্রামের কোটি কোটি গরিব, কৃষক, মাঝারি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, দিনমজুর, বেকার জনগণের কথা বলে না। দেশের আলেম সমাজকে এসব অবহেলিত বিশাল জনগোষ্ঠির অধিকারের কথা বিভিন্ন পর্যায়ে তুলে ধরতে হবে। উন্নয়ন এখন শুধু শহরে-বন্দরে চলছে। গ্রামের কোটি কোটি মানুষের চিন্তা এখন জাতীয় নেতারা মুখে আনেন না। নেতাদের কথায় কথায় উন্নয়নের জোয়ার। আল্লামা শফী বলেন, তাকওয়া তথা খোদাভীতি ছাড়া পরিপূর্ণ মুমিন হওয়া যায় না। আল্লাহর ভয় মানুষের অন্তরে না থাকার ফলে সমাজে অপরাধ প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। অন্তরে খোদাভীতি থাকলে কারো পক্ষে হারাম পথে চলা কিছুতেই সম্ভব নয়। তিনি বলেন, খোদাভীতির অপর নাম তাকওয়া। আর তাকওয়া থেকে দূরে থাকার কারণেই বর্তমানে বিশ্বব্যাপী মুসলমানগণ নানাভাবে পর্যুদস্ত ও নির্যাতিত হচ্ছে। সব ভেদাভেদ ভুলে মুসলমানদের এক কালিমার ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। হাটহাজারী মাদরাসার মুহাদ্দিস হাফেজ শামসুল আলমের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন প্রধান বক্তার ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা মুজিবুর রহমান, মুফতি কিফায়াতুল্লাহ, মাওলানা সাইফুল ইসলাম রংপুরী, মুফরি কিফায়াতুল্লাহ আযহারী, মুফতি শহীদুল ইসলাম উজানী প্রমুখ। তাফসীরুল কোরআন মাহফিল পরিচালনা করেন হেফাজতে ইসলামের প্রচার সম্পাদক ও আল-আমীন সংস্থার স-সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ আনাস মাদানী ও যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আলহাজ আহসান উল্লাহ।