ঢাকা ১১:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পেয়ারা বদলে দিয়েছে শতাধিক পরিবারের জীবন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:৩২:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ অগাস্ট ২০২০
  • ১৯৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় পেয়ারা চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ উপজেলায় পেয়ারা চাষ বদলে দিয়েছে শতাধিক পরিবারের জীবন।

চলতি মৌসুমে নানা প্রতিকুলতা অপেক্ষা করে পেয়ারা চাষে কৃষকরা সবুজ বিল্পব ঘটিয়েছে। এখানকার পেয়ারা কোনোটি গাঢ় সবুজ, আবার কোনোটি হালকা সবুজ, লাল হলদে আবরণে মিশ্রণ।

বাংলার আপেল খ্যাত এখানকার পেয়ারা রসালো ও সুস্বাধু হওয়ায় জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে এর যথেষ্ট কদর। এদিকে স্থানীয় বাজারে পেয়ারা বিক্রিতে ভাল দাম পাওয়ায়  কৃষকের মুখেও হাসি ফুটে উঠেছে।

পেয়ারা স্বাদ, পুষ্টিগুণ সম্পন্ন একটি ফল। পেয়ারাতে আছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি ও লাইকোপেন যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। তাছাড়া পেয়ারা ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, চোখ ও পেটের জন্যও খুবই উপকারী।

উপজেলার উত্তর ইউপির আজমপুর, রাজাপুর, রামধননগর, কল্যাণপুর, আনোয়ারপুর, ও পৌর এলাকার দূর্গাপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় পেয়ারা চাষ করেছে স্থানীয় কৃষকরা। গাছে গাছে সবুজ পাতার আড়ালে ও ডালে ডালে ঝুলছে থোকায় থোকায় পেয়ারা।

ওই সব এলাকার এমন কোনো বাড়ি নেই যার ১০-১৫টি গাছ নেই। যে দিকে দৃষ্টি যায় শুধু পেয়ারা আর পেয়ারা চোখে পড়ে। এ চাষে কম শ্রমে বেশি লাভ হওয়ায় ফলনশীল ধান জমি গুলোও পেয়ারা বাগানে রুপান্তরিত করছে কৃষকরা। বর্তমান পেয়ারার ভরা মৌসুম হওয়ায় এখানকার কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন।

বর্তমানে দূর-দূরান্তের ক্রেতা বিক্রেতা ও দর্শনার্থীদের ভিড়ে ওই সব অঞ্চলগুলো এখন মুখরিত হয়ে উঠেছে। এখানকার পেয়ারা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, আশুগঞ্জ কসবা, কুমিল্লা, নোয়াখালী, ভৈরব, কিশোরগঞ্জ, মাধবপুর ,শায়েস্তাগঞ্জ, শ্রীমঙ্গলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাইকাররা নিয়ে বিক্রি করছেন।

কৃষক আওয়াল ও বিল্লাল হোসেন বলেন, এক সময় এসব এলাকার লোকজনের জীবন ধারন খুবই কষ্টকর ছিল। অভাব অনটন ছিল তাদের নিত্যসঙ্গী। অনাবাদি জমিতে পেয়ারা চাষ করে চমক সৃষ্টি করেছেন।

কৃষক মো. আফসর আলী বলেন, বাড়ি সংলগ্ন পতিত জমিতে বর্তমানে ৪০টি পেয়ারা গাছ রয়েছে। নিয়মিত পরিচর্যায় এ মৌসুমে পেয়ারার ফলন ভাল হয়েছে। গত বছর ৩২ হাজার টাকা বিক্রি হয়। আশা করছি এ বছর ৫০ হাজার টাকার বেশি বিক্রি হবে।

মো. দুলাল মিয়া বলেন, তার দুটি বাগানে ৫০ টি গাছ রয়েছে। এক সময় ধান চাষ করা হতো। কিন্তু জমিতে ধান চাষ করে যে টাকা আয় হয় তার চেয়ে বেশি পেয়ারাতে আয় হচ্ছে বলে জানায়।

খালেদ মিয়া জানায়, এ বছর ১০৫টি গাছে ভাল পেয়ারা ধরেছে। এরই মধ্যে পেয়ারা ১৭ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে। বাগান নিচু এলাকায় হওয়ায় পানি উঠেছে। পেয়ারা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।

মাধবপুরের পাইকার মো. জামাল মিয়া জানান, সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় এখান থেকে মৌসুমী ফল নিয়ে বিক্রি করা হয়। বর্তমানে যেহেতু পেয়ারা ফল বাজারে উঠছে তাই এখান থেকে নিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। এখানকার পেয়ারা রসালো ও সুস্বাধু হওয়ায় বিক্রিতেও ভাল লাভ হয়।

আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম জানান, এখানকার মাটি পেয়ারা চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এ মৌসুমে পেয়ারা ভাল ফলন হয়েছে। তাছাড়া ফলন ভাল করতে কৃষকদেরকে সার্বিকভাবে পরামর্শ দেয়া হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

পেয়ারা বদলে দিয়েছে শতাধিক পরিবারের জীবন

আপডেট টাইম : ০৪:৩২:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ অগাস্ট ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় পেয়ারা চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ উপজেলায় পেয়ারা চাষ বদলে দিয়েছে শতাধিক পরিবারের জীবন।

চলতি মৌসুমে নানা প্রতিকুলতা অপেক্ষা করে পেয়ারা চাষে কৃষকরা সবুজ বিল্পব ঘটিয়েছে। এখানকার পেয়ারা কোনোটি গাঢ় সবুজ, আবার কোনোটি হালকা সবুজ, লাল হলদে আবরণে মিশ্রণ।

বাংলার আপেল খ্যাত এখানকার পেয়ারা রসালো ও সুস্বাধু হওয়ায় জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে এর যথেষ্ট কদর। এদিকে স্থানীয় বাজারে পেয়ারা বিক্রিতে ভাল দাম পাওয়ায়  কৃষকের মুখেও হাসি ফুটে উঠেছে।

পেয়ারা স্বাদ, পুষ্টিগুণ সম্পন্ন একটি ফল। পেয়ারাতে আছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি ও লাইকোপেন যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। তাছাড়া পেয়ারা ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, চোখ ও পেটের জন্যও খুবই উপকারী।

উপজেলার উত্তর ইউপির আজমপুর, রাজাপুর, রামধননগর, কল্যাণপুর, আনোয়ারপুর, ও পৌর এলাকার দূর্গাপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় পেয়ারা চাষ করেছে স্থানীয় কৃষকরা। গাছে গাছে সবুজ পাতার আড়ালে ও ডালে ডালে ঝুলছে থোকায় থোকায় পেয়ারা।

ওই সব এলাকার এমন কোনো বাড়ি নেই যার ১০-১৫টি গাছ নেই। যে দিকে দৃষ্টি যায় শুধু পেয়ারা আর পেয়ারা চোখে পড়ে। এ চাষে কম শ্রমে বেশি লাভ হওয়ায় ফলনশীল ধান জমি গুলোও পেয়ারা বাগানে রুপান্তরিত করছে কৃষকরা। বর্তমান পেয়ারার ভরা মৌসুম হওয়ায় এখানকার কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন।

বর্তমানে দূর-দূরান্তের ক্রেতা বিক্রেতা ও দর্শনার্থীদের ভিড়ে ওই সব অঞ্চলগুলো এখন মুখরিত হয়ে উঠেছে। এখানকার পেয়ারা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, আশুগঞ্জ কসবা, কুমিল্লা, নোয়াখালী, ভৈরব, কিশোরগঞ্জ, মাধবপুর ,শায়েস্তাগঞ্জ, শ্রীমঙ্গলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাইকাররা নিয়ে বিক্রি করছেন।

কৃষক আওয়াল ও বিল্লাল হোসেন বলেন, এক সময় এসব এলাকার লোকজনের জীবন ধারন খুবই কষ্টকর ছিল। অভাব অনটন ছিল তাদের নিত্যসঙ্গী। অনাবাদি জমিতে পেয়ারা চাষ করে চমক সৃষ্টি করেছেন।

কৃষক মো. আফসর আলী বলেন, বাড়ি সংলগ্ন পতিত জমিতে বর্তমানে ৪০টি পেয়ারা গাছ রয়েছে। নিয়মিত পরিচর্যায় এ মৌসুমে পেয়ারার ফলন ভাল হয়েছে। গত বছর ৩২ হাজার টাকা বিক্রি হয়। আশা করছি এ বছর ৫০ হাজার টাকার বেশি বিক্রি হবে।

মো. দুলাল মিয়া বলেন, তার দুটি বাগানে ৫০ টি গাছ রয়েছে। এক সময় ধান চাষ করা হতো। কিন্তু জমিতে ধান চাষ করে যে টাকা আয় হয় তার চেয়ে বেশি পেয়ারাতে আয় হচ্ছে বলে জানায়।

খালেদ মিয়া জানায়, এ বছর ১০৫টি গাছে ভাল পেয়ারা ধরেছে। এরই মধ্যে পেয়ারা ১৭ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে। বাগান নিচু এলাকায় হওয়ায় পানি উঠেছে। পেয়ারা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।

মাধবপুরের পাইকার মো. জামাল মিয়া জানান, সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় এখান থেকে মৌসুমী ফল নিয়ে বিক্রি করা হয়। বর্তমানে যেহেতু পেয়ারা ফল বাজারে উঠছে তাই এখান থেকে নিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। এখানকার পেয়ারা রসালো ও সুস্বাধু হওয়ায় বিক্রিতেও ভাল লাভ হয়।

আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম জানান, এখানকার মাটি পেয়ারা চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এ মৌসুমে পেয়ারা ভাল ফলন হয়েছে। তাছাড়া ফলন ভাল করতে কৃষকদেরকে সার্বিকভাবে পরামর্শ দেয়া হয়।