কামরুল হাসান রিপন একদিনে তৈরি হয়নি : নজরুল ইসলাম বাবু 

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  কামরুল হাসান রিপন একদিনে তৈরি হয়নি বরং বছরের পর বছর কঠিন পরিশ্রম আর ঘাম ঝড়িয়েই নিজেকে আজকের এই অবস্থানে নিয়ে এসেছেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় একাউন্টিং এলামনাই এসোসিয়েশনের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ঠিক এভাবেই নব-নির্বাচিত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপনের ধারাবাহিক অগ্রগতি এবং সুদক্ষ নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনের সরকারদলীয় সাংসদ এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিয় মুখ কামরুল হাসান রিপন। তবে এই রিপন একদিনে তৈরি হয়নি। বছরের পর বছর ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়েই সে নিজেকে আজকের এই অবস্থানে নিয়ে এসেছে। দুই যুগেরও বেশি সময় মাঠে শ্রম দেওয়ারই ফসল এই রিপন। তাই আমি বলবো কামরুল হাসান রিপন একজন প্রথিতযশা ছাত্র নেতা থেকে বর্তমান স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা।’

গত বছর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগের তৃতীয় কাউন্সিলে মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পান কামরুল হাসান রিপন। সেজন্যই শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়মে বিশাল গণসংবর্ধনার আয়োজন করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় একাউন্টিং এলামনাই এসোসিয়েশন। এই অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নজরুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘আপনারা যে রিপনকে সংবর্ধিত করছেন সে তারুণ্যের প্রতীক। এই ক্যাম্পাসকে মুখরিত করার অগ্রসৈনিক। এই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতির নতুন ধারা তৈরি করেছেন।

জামাত-শিবিরকে মোকাবেলা করে চিরতরে উৎখাত করেছেন। এবং সাফল্যের সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। আপনারা সেই রিপনকে সংবর্ধিত করেছেন যিনি কারাগার, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রাম সবকিছু মোকাবেলা করে নিজেকে পাকাপোক্ত বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকে পরিণত করেছেন। এই রিপন একটা সময়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের দায়িত্ব পালনেও প্রস্তুত ছিলেন।

রাজনীতিকে দূষণমুক্ত এবং পরিত্যক্ত রাজনীতিকে প্রত্যাখান করে তারুণ্যের প্রতীক হিসেবে রিপনকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করেছেন শেখ হাসিনা। সেজন্য রিপনকে আমি অভিবাদন জানাই। এই সম্মান শুধু রিপনের নয়, এই সম্মান জগন্নাথ পরিবারের সকল ছাত্র-ছাত্রীর, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অবিভাবকবৃন্দের।’

নবেম্বরের ১৬ তারিখে সেবকলীগ দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তারিক সাঈদ। এসময় সাবেক এই দুই ছাত্রনেতাকে ‘একই বৃন্তে দুটি ফুল’ বলেও মন্তব্য করেন নজরুল ইসলাম বাবু। রিপন-সাঈদের নেতৃত্বে সেবকলীগ দক্ষিণ দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশাও ব্যক্ত করেন তিনি।

বাবু বলেন, ‘দলের দুঃসময়ে একদিকে রিপন অন্যদিকে রাজপথ কাঁপিয়েছেন সাঈদ (তারিক)। তারই পুরস্কার হিসেবে তাদের মূল্যায়ন করেছেন শেখ হাসিনা। এই রিপন-সাঈদ যখন যেদিকে এগিয়ে যাবে জননেত্রী শেখ হাসিনার সুবাতাসও সেদিকে বয়ে যাবে। বাংলাদেশে যদি কখনও আরেকটি বিপ্লব আসে সেখানেও রিপন-সাঈদ ঝাপিয়ে পড়বে। এবং সেই বিপ্লবেও তারা নিশ্চিত বিজয়ের পতাকা উঁচিয়ে ধরবে। রিপন-সাঈদের জয়োধ্বনি হবে।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অতীত স্মৃতি স্মরণ করতে গিয়ে এসময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন নজরুল ইসলাম বাবু। ১৯৬৭ সালে আড়াইহাজার উপজেলার বাজবী গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন তিনি। ১৯৮৪ সালে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর তৎকালীন জগন্নাথ কলেজ থেকে স্নাতক এবং সবশেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়াশোনা শেষ করেন।

ছাত্রাবস্থা থেকেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। বিভিন্ন সময় আন্দোলন করতে গিয়ে কারাবরণ করতে হয় নজরুল ইসলাম বাবুকে। ১৯৯৪ সালে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি, ১৯৯৮ সালে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এবং ২০০২ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন নজরুল ইসলাম বাবু।

গত বছর আওয়ামীলীগের ২১তম জাতীয় কাউন্সিলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হন কাজী নজিবুল্লাহ হিরু। তাকেও এদিন বিশাল গণসংবর্ধণা প্রদান করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং এলামনাই এসোসিয়েশন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকতের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান শিকদার হান্নান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দিন আহমেদ। এছাড়াও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর