সাড়া ফেলেছে জোবাইক, দীর্ঘমেয়াদে ব্যবহার নিয়ে শঙ্কা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন সমস্যা দীর্ঘদিনের। ক্যাম্পাসে রিকশাচালকদের অতিরিক্ত ভাড়া দাবির কারণে বেশ অসন্তোষ রয়েছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। ভাড়া নির্ধারণে প্রশাসনের উদ্যোগের বাস্তবায়ন না হওয়ায় মোবাইল অ্যাপসভিত্তিক পরিবেশবান্ধব সাইকেল শেয়ারিং সেবা ‘জোবাইক’ চালু হলে শিক্ষার্থীরা ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করবে অনুমিতই ছিল।

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ‘জোবাইক ডিইউ চক্কর’ চালুর পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাড়াও মিলেছে। তবে সচেতনভাবে ব্যবহার না করার কারণে দীর্ঘমেয়াদে এই সার্ভিস চালু থাকবে কিনা এনিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে শঙ্কা কাজ করছে। আর ব্যবহারকারীদের সচেতনতার পাশাপাশি নীতিমালা তৈরি করলে এই সেবা চালু থাকবে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

আরও পড়ুন>> ঢাবিতে যাত্রা করলো অ্যাপসভিত্তিক ‘জোবাইক’

জোবাইক সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ১৬ অক্টোবর (বুধবার) আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর প্রায় তিন-চার হাজার শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেছেন। এর আগেও পরীক্ষামূলকভাবে সেবাটি উন্মুক্ত করা হয়। সরেজমিনে দেখা গেছে, ক্যাম্পাস শ্যাডোতে শিক্ষার্থীরা উৎসাহ নিয়ে নিজের পরিচয়পত্র দেখিয়ে নিবন্ধন করছেন। মেয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যেও ব্যাপক আগ্রহ পরিলক্ষিত হয়েছে। সর্বনিম্ন ১০০ টাকা রিচার্জ করার মধ্য দিয়ে আইডি পাচ্ছেন তারা। সেখান থেকে অ্যাপের মাধ্যমে স্ক্যান করে সাইকেলের লক খোলার পর প্রথম ৫ মিনিটে গুনতে হবে ২ টাকা ৫০ পয়সা ও পরবর্তী মিনিট থেকে প্রতি মিনিটে ৪০ পয়সা করে কেটে নেওয়া হবে।

তবে এই সার্ভিসটি চালুর প্রথম দিন থেকে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন আলোচনা-সমালোচনার জন্ম নেয়। ১০০টি সাইকেল নিয়ে যাত্রা করার কারণে শিক্ষার্থীদের চাহিদার তুলনায় সাইকেল ছিল অপ্রতুল। আবার অনেকের অসর্তকভাবে চালানোর কারণে বিভিন্ন ধরনের ক্ষয়ক্ষতি ও নির্ধারিত স্থানে পার্কিং না করায় ব্যবহারকারীদের সমালোচনা করা হয়। পরে জোবাইক কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসের বাইরে সাইকেল নেওয়া নিষিদ্ধ করে। লোকপ্রশাসন বিভাগের রবিউল ইসলাম বলেন, বাইকের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি করতে হবে। কারণ চাহিদা অনুযায়ী বাইক পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে অপেক্ষা করেও হতাশ হয়ে হলে ফিরতে হচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বাইকের সংখ্যা কম সেটা যেমন সমস্যা, আবার চার্জও থাকে না। ফলে আনলক করা যায় না।

এ বিষয়ে ফলিত গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী খাইরুল ইসলাম বলেন, কার্জন এলাকাতে একটা জোবাইক চার্জিং স্টেশন রাখা উচিত। কারণ সব বাইক শ্যাডোতে নেওয়ার পর বাইক পাওয়াই যায় না এই দিকে।

সার্বিক বিষয়ে ডাকসুর পরিবহন সম্পাদক শামস-ই নোমন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। বাইক সংখ্যা বাড়লে সমস্যা অনেকাংশে কমে আসবে। তবে বাইকগুলো শিক্ষার্থীদের সচেতনভাবে ব্যবহার করতে হবে। তাহলে এটি দীর্ঘমেয়াদে চালু থাকবে।

জোবাইকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ইনচার্জ সেলিমুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, এ মাসের মধ্যে আরো ১০০ বাইক যোগ করার চেষ্টা করছি আমরা। চার্জজনিত সমস্যা সমাধানের জন্য বিকল্প ভাবনা করা হচ্ছে। সব বাইক শ্যাডোতে চার্জ দেওয়ার জন্য আনায় জায়গারও সমস্যা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের অনেকে শেখার জন্য সাইকেল বেশিক্ষণ রেখে দেওয়ার কারণে অন্যরা পাচ্ছে না বলে তিনি দাবি করেন।

ব্যবহারকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সবাইকে নিজের সাইকেল মনে করে চালাতে হবে। প্রতিদিন দশটার মতো সাইকেল নষ্ট হচ্ছে। আমরা সেগুলো ঠিক করছি। একটু সচেতনভাবে ব্যবহার করলে সবাই উপকৃত হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর