ঢাকা ০৮:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কমলালেবুর সুঘ্রাণ বাতাসে ভাসছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:০৮:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ অক্টোবর ২০১৭
  • ২৬১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ছোট-বড় কমলা বাগানগুলো থেকে শরতের বাতাসে ছড়াচ্ছে সুস্বাদু কমলালেবুর ঘ্রাণ। বাগানে বাগানে দোল খাচ্ছে কমলা ও আধাপাকা সবুজ কমলালেবু। প্রকৃতির দান অপরুপ এ সৌন্দর্যে কৃষকের বুকে খেলে যায় অপার আনন্দ।

কমলা একটি ছায়া পছন্দকারী বৃক্ষ। ফলদ বৃক্ষের ছায়ায় কমলা চাষাবাদ ভাল হয়। ২৫-৩০ সেঃ মিঃ গড় তাপমাত্রা ও আংশিক ছায়াযুক্ত স্থান কমলা চাষের জন্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী। বসতবাড়ির উত্তর ও পূর্ব পাশে এর চাষাবাদ ভালো হয়- এমনটাই মনে করেন কৃষক ও উপজেলা কৃষি অফিস।

উপজেলার গোয়ালবাড়ি ইউনিয়েনের লালছড়া, শুকনাছড়া, ডুমাবারই, লাঠিটিলা, লাঠিছড়া, হায়াছড়া, কচুরগুল। সাগরনাল ইউনিয়নের পুটিছড়া ও পূর্বজুড়ী ইউনিয়নের কালাছড়া এবং জায়ফরনগর ইউনিয়নের বাহাদুরপুরসহ অন্যান্য গ্রামের টিলাবাড়িগুলোতে কমলা, বাতাবি লেবু, আদালেবু, শাসনি ও জাড়া লেবুর বাগান রয়েছে। আর এ বাগানগুলোতে সব সময় পরিচর্যা করার কাজ অনেকে পেশা হিসেবে নিয়েছেন। বাগান পরিচর্যা করার পেশা গ্রামগুলোর মানুষের নেশায় রুপান্তরিত হয়েছে।
‘আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এক একটি বাগান থেকে প্রতি বছর ৩ থেকে ৬ লাখ টাকার ফলন পাওয়া যায়। কমলা চাষে যেমন খরচ কম, তেমন শ্রমও দিতে হয় না’- এমনটাই জানিয়েছেন এসব বাগানগুলোর কৃষকরা। ফলে কমলা চাষে এসব অঞ্চলের কৃষকরা আগ্রহী হওয়ার পাশাপাশি স্বাবলম্বীও হচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ৯১ হেক্টর জমিতে ৮৪টি কমলা বাগান রয়েছে। তন্মধ্যে গোয়ালবাড়ি শতকরা ৮০ভাগ এবং বাকি ২০ ভাগ বাগান অন্যান্য ইউনিয়নে রয়েছে।এ অঞ্চলের অধিকাংশ কমলা খাসী জাতের চাষাবাদ হচ্ছে। ওই বাগান গুলো থেকে চলতি মৌসুমে ৪৫০মেট্রিকটন কমলা লেবুর ফলন প্রাপ্তির প্রত্যাশা করছেন।

লালছড়া গ্রামের কমলা চাষী মোরশেদ মিয়া (৪৫) বলেন, ‘কমলা এক বছর ফলন বেশি হলে অন্য বছর কম হয়। প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী এবারে ফলন কম। আল্লাহর রহমতে যা হয়েছে তাতেই আমরা সন্তুষ্ট।’
তিনি আরও বলেন, এবারে কমলার বাজার মূল্য গত বছরের চেয়ে বেশি, আকারও বড় হয়েছে। তিনি এবারে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার কমলা বিক্রি করার প্রত্যাশা করচেন বলে জানান।
সীমান্তবর্তী ডুমাবারই গ্রামের বৃদ্ধ আব্দুন নূর (৮১) ও বাবুল মিয়া (৬০) জানান, অতিবৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি, ঘুর্নিঝড় ও খরায় কমলা লেবুর ফুল থেকে শুরু হয়ে ফল পাকা পর্যন্ত প্রতিবছরই নষ্ট হয়। আর এবারে বৃষ্টি তুলনামূলক বেশি হওয়ায় অন্যান্য বছরের চেয়ে ফলন কম হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবল সরকার জনান, কমলা একটি ছায়া পছন্দকারী বৃক্ষ । শুধু একক বাগান হলে  সান বার্ন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কৃষকরা যদি সঠিকভাবে সুষম সার ব্যবহার করে এবং পোকা-মাকড় ও রোগ বালাই দমনের জন্য নিয়মিত বালাই নাশক স্প্রে ব্যবহার করে তাহলে ফলন ভালো হওয়ার পাশাপাশি আকারও বড় হবে। এছাড়াও এসব অঞ্চলের কৃষকরা মাল্টা, আদা, জাড়া ও বাতাবি লেবু ফলনে আগ্রহ দেখাচ্ছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

কমলালেবুর সুঘ্রাণ বাতাসে ভাসছে

আপডেট টাইম : ০৫:০৮:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ অক্টোবর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ছোট-বড় কমলা বাগানগুলো থেকে শরতের বাতাসে ছড়াচ্ছে সুস্বাদু কমলালেবুর ঘ্রাণ। বাগানে বাগানে দোল খাচ্ছে কমলা ও আধাপাকা সবুজ কমলালেবু। প্রকৃতির দান অপরুপ এ সৌন্দর্যে কৃষকের বুকে খেলে যায় অপার আনন্দ।

কমলা একটি ছায়া পছন্দকারী বৃক্ষ। ফলদ বৃক্ষের ছায়ায় কমলা চাষাবাদ ভাল হয়। ২৫-৩০ সেঃ মিঃ গড় তাপমাত্রা ও আংশিক ছায়াযুক্ত স্থান কমলা চাষের জন্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী। বসতবাড়ির উত্তর ও পূর্ব পাশে এর চাষাবাদ ভালো হয়- এমনটাই মনে করেন কৃষক ও উপজেলা কৃষি অফিস।

উপজেলার গোয়ালবাড়ি ইউনিয়েনের লালছড়া, শুকনাছড়া, ডুমাবারই, লাঠিটিলা, লাঠিছড়া, হায়াছড়া, কচুরগুল। সাগরনাল ইউনিয়নের পুটিছড়া ও পূর্বজুড়ী ইউনিয়নের কালাছড়া এবং জায়ফরনগর ইউনিয়নের বাহাদুরপুরসহ অন্যান্য গ্রামের টিলাবাড়িগুলোতে কমলা, বাতাবি লেবু, আদালেবু, শাসনি ও জাড়া লেবুর বাগান রয়েছে। আর এ বাগানগুলোতে সব সময় পরিচর্যা করার কাজ অনেকে পেশা হিসেবে নিয়েছেন। বাগান পরিচর্যা করার পেশা গ্রামগুলোর মানুষের নেশায় রুপান্তরিত হয়েছে।
‘আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এক একটি বাগান থেকে প্রতি বছর ৩ থেকে ৬ লাখ টাকার ফলন পাওয়া যায়। কমলা চাষে যেমন খরচ কম, তেমন শ্রমও দিতে হয় না’- এমনটাই জানিয়েছেন এসব বাগানগুলোর কৃষকরা। ফলে কমলা চাষে এসব অঞ্চলের কৃষকরা আগ্রহী হওয়ার পাশাপাশি স্বাবলম্বীও হচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ৯১ হেক্টর জমিতে ৮৪টি কমলা বাগান রয়েছে। তন্মধ্যে গোয়ালবাড়ি শতকরা ৮০ভাগ এবং বাকি ২০ ভাগ বাগান অন্যান্য ইউনিয়নে রয়েছে।এ অঞ্চলের অধিকাংশ কমলা খাসী জাতের চাষাবাদ হচ্ছে। ওই বাগান গুলো থেকে চলতি মৌসুমে ৪৫০মেট্রিকটন কমলা লেবুর ফলন প্রাপ্তির প্রত্যাশা করছেন।

লালছড়া গ্রামের কমলা চাষী মোরশেদ মিয়া (৪৫) বলেন, ‘কমলা এক বছর ফলন বেশি হলে অন্য বছর কম হয়। প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী এবারে ফলন কম। আল্লাহর রহমতে যা হয়েছে তাতেই আমরা সন্তুষ্ট।’
তিনি আরও বলেন, এবারে কমলার বাজার মূল্য গত বছরের চেয়ে বেশি, আকারও বড় হয়েছে। তিনি এবারে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার কমলা বিক্রি করার প্রত্যাশা করচেন বলে জানান।
সীমান্তবর্তী ডুমাবারই গ্রামের বৃদ্ধ আব্দুন নূর (৮১) ও বাবুল মিয়া (৬০) জানান, অতিবৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি, ঘুর্নিঝড় ও খরায় কমলা লেবুর ফুল থেকে শুরু হয়ে ফল পাকা পর্যন্ত প্রতিবছরই নষ্ট হয়। আর এবারে বৃষ্টি তুলনামূলক বেশি হওয়ায় অন্যান্য বছরের চেয়ে ফলন কম হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবল সরকার জনান, কমলা একটি ছায়া পছন্দকারী বৃক্ষ । শুধু একক বাগান হলে  সান বার্ন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কৃষকরা যদি সঠিকভাবে সুষম সার ব্যবহার করে এবং পোকা-মাকড় ও রোগ বালাই দমনের জন্য নিয়মিত বালাই নাশক স্প্রে ব্যবহার করে তাহলে ফলন ভালো হওয়ার পাশাপাশি আকারও বড় হবে। এছাড়াও এসব অঞ্চলের কৃষকরা মাল্টা, আদা, জাড়া ও বাতাবি লেবু ফলনে আগ্রহ দেখাচ্ছে।