দেখে মনে হবে নারীদেহের অবয়বে শ্বেতশুভ্র ডানাকাটা পরীরা গাছে ঝুলছে। এক বা দু’জন নয় অসংখ্য। আসলে পরী নয়, ফুল। আর এ ফুলের নাম নারীলতা।
নগ্ন নারীদেহের মত দেখতে বলেই এ ফুলের নাম দেয়া হয়েছে “নারীলতা” ফুল। এমন বাহারী ফুল কিন্তু কারো বাগানের শোভা বাড়ায় না। পাহাড়ি বনফুল ওরা। গহীন বনেই ওদের অস্তিত্ব। মিথ হচ্ছে, ধ্যানমগ্ন কোন এক সাধু-যোগী তার গভীর ধ্যান ভঙ্গ করতে আসা স্বর্গের ঊর্বশীদের ইচ্ছাশক্তির বলে ঘনপত্রপল্লবিত গাছে লটকে দিয়েছে।
উপাখ্যান যাই হোক না কেন ফুলটি না দেখলে অনটকেরই হয়তো বিশ্বাস করতে কষ্ট হবে। নারীলতা গাছে প্রতি বিশ বছর পর পর ফুল ফোটে। যে ফুলকে দেখলে অনেকেই ভাবতে পারেন এ গাছে মনে হয় পরীরা আস্তনা গেড়ে আছে।
তবে বাস্তবেই এমন ধরনের ফুলের অস্তিত্ব আছে পৃথিবীতে। এবং তা বেশি দূরে নয়। আমাদেরই প্রতিবেশী দেশ ভারতেও সন্ধান মিলেছে। সিকিম সংলগ্ন হিমালয় পর্বতের সারি সারি পাহাড়ের খাঁজে এদের জন্ম।
ভারতে এ গাছের নাম দেয়া হয়েছে নারীলতা (Nari Lota)। ভারত ছাড়াও থাইল্যান্ড এবং শ্রীলংকাতেও এ ফুল পাওয়া যায়। থাইল্যান্ডে এর নাম “Nareepol” এবং শ্রীলংকাতে ডাকা হয় “Liyathabara Mala” নামে।
প্রথমবার যারা এর সম্পের্ক পড়েন তাদের অধিকাংশই গাছ এবং ফুলটির অস্তিত্ব নিয়েই সন্দিহান হয়ে ওঠেন। কিন্তু তাদের জন্য তথ্য হচ্ছে, গাছটির বোটানিক পরিচয় আছে। এরা Orchidaceae পরিবারের Habenaria গোত্রভূক্ত উদ্ভিদ।
তবে এনিয়ে ভিন্নমতও পাওয়া যাচ্ছে। বেশির ভাগ মানুষ ইমেইল, ইন্টারনেটের মাধ্যমে এ ফুল বা ফলের বিষয়টি জানতে পারলেও নিজের চোখে কেউ তা দেখেছেন, এমন দাবি করেননি। একটি ইন্টারনেট সমীক্ষা ছবিগুলোকে ‘অসাধারণ ফটোগ্রাফি’ উল্লেখ করে নানা যুক্তি তুলে ধরে বলছে, এটি নিছক একটি ফটো এডিট ছাড়া কিছু নয়। তারা বলছে, সত্যিই যদি গাছটির অস্তিত্ব থাকত, তাহলে তা সারাবিশ্বে এতদিনে জনপ্রিয় হয়ে উঠতো। তাছাড়া এসব ফুল পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলো পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হতো। কিন্তু, তা হয়নি। এমনকি, বিশ্বের জনপ্রিয় ট্রাভেল ওয়েবসাইটগুলোতেও এর কোনো উল্লেখ নেই। তাই ‘চমকপ্রদ’ এ ঘটনায় বিশ্বাস স্থাপন না করারই পরামর্শ দিয়েছে ওই সমীক্ষা।