হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভারতের বেসরকারি বাংলা স্যাটেলাইট টেলিভিশন জি বাংলার দর্শক এই মুহূর্তে প্রচুর। হয়তো হিসেবে করলে এর রিয়েলিটি শো ‘সা রে গা মা পা’র দর্শক পশ্চিমবঙ্গের চেয়ে বাংলাদেশেই বেশি। এর কারণ এতে অংশগ্রহণ করেছেন বাংলাদেশি তরুণ নোবেল। শুরু থেকেই সেখানকার বিচারক সকলের মন জয় করেছেন এই তরুণ। কিন্তু শনিবার রাতের পর্বে এই মেধাবী তরুণের সঙ্গে দেশটির বিচারক যা করলো তা কোনোভাবেই বাংলাদেশি দর্শকরা মেনে নিতে পারছে না।
নোবেল নিজের গায়কী দিয়ে বিচারকদের মন জয় করলেও একজন বিচারক প্রশংসা করেও এক নম্বর কেটে ফেলেন। আর এতেই ক্ষুব্ধ এদেশের ভক্তরা।
ফ্রিল্যান্সার, কলামিস্ট শরীফুল হাসান বলছেন, ‘আজকে নোবেল বরাবরের মতোই অসাধারণ গান গাইলো। মহীনের ঘোড়াগুলির তারারাও যতো আলোকবর্ষ দূরে গানটা এমনিতেই ভালো গাইলো পাশাপাশি সুমনের সাথে মাঝি দে পাল তুলিয়া গানটাও অসাধারণ গাইলো। অনুষ্ঠানের তিনজন বিচারকই নোবেলের গানের প্রশংসা করলেন। অন্যদিকে সুমনের কিছুটা সমালোচনা করলেন। অথচ কী অবাক কাণ্ড সুমন আর নোবেলকে একই পাল্লায় মেপে দুজনেকই ১০ এ ৯ দিলেন সম্মানিত বিচারক শ্রীকান্ত আচার্য।’
তিনি বলেন, ‘আমি খুব অবাক হলাম, বাকি দুই বিচারক মোনালি ঠাকুর আর শান্তনু মৈত্র যেখানে নোবেলকে ১০ এ দশ দিলেন সেখানে শ্রীকান্ত আচার্য নোবেলের এতো প্রশংসা করেও কেন ৯ দিলেন কিছুতেই বুঝলাম না। তার কাছে সুমন আর নোবেল দুজনেই আজকে সমান? তার মানে বেশি ভালো আর কম ভালো গাইলে একই নম্বর? বাংলাদেশের অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, শুধু বাংলাদেশি বলেই হয়তো চূড়ান্ত বিচারে নোবেলকে প্রথম নাও করা হতে পারে। আবার দর্শক টেনে রাখতে তাকে হয়তো শেষ পর্যন্ত রাখা হবে কিন্তু প্রথম করা হবে না। আমি এই ধরনের আশঙ্কা উড়িয়ে দিতে চাই।’
দুই বাংলার মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ ও বিভক্তি না চেয়ে শরীফুল হাসান বলেন, ‘সারেগামাপা কর্তৃপক্ষকে বলতে বাধ্য হচ্ছি, আজকে নোবেলকে নম্বর কম দেওয়ার বিষয়টি সাধারণ যে কোনও দর্শককে আহত করবে। আশা করছি সামনের দিনগুলোতে সব বিচারক আরও সতর্ক হবেন। যার যা প্রাপ্য তাকে তাই দিন। ভালো গান গেয়ে যে কেউ প্রথম দ্বিতীয় হোক। এখানে যেন ভারতীয়, বাংলাদেশি, গুজরাটি এমন বিভক্তি না করা হয়।’
প্রবীর দেব নামের এক ভক্ত বলছেন, ‘নোবেলকে যেটা দেয়ার সেটা দিয়ে দিয়েছে ওরা আর সেটা হলো তাঁর পরিচিতি, এখন ফার্স্ট হলো না তৃতীয় হলো তাতে কি আসে যায়? অরিজিত যে প্রতিযোগিতা করে পরিচিত হয়েছিল সেখানে সে সম্ভবত ৭ম হয়েছিল। কিন্তু আজকে অরিজিতকে দেখেন কোথায় আর তার সময়ে ফাস্ট হওয়া সেই গায়ক নামই নাই। নোবেল অলরেডি প্লেব্যাক করে ফেলেছে।’
ফারহানা রুমা নামের একজন মন্তব্য করেন, ‘এটা সবাই জানে বোঝে নোবেলকে রাখা হয়েছে টিআরপি বাড়ানো বা ধরে রাখার জন্য।সময় মত ওরা ওদের কাজটাই করবে।আমরা এখনও ইন্ডিয়ানদের মত দেশপ্রেমিক হতে পারিনি।’
মুন নামের একজনের মন্তব্য, ‘আজকের বিষয়টি সত্যিই আহত করার মতোই। যারা নিয়মিত এই প্রোগ্রাম দেখেন তারা অলরেডি বুঝে গেছেন শ্রীকান্ত আচার্য নোবেলের পারফরমেন্সে কিছুদিন থেকে প্রায়ই এমন করছেন। প্রশংসা করেও ৯ নম্বর দেন।’
কানটা শর্মা নামের একজন বলছেন, ‘গোল্ডেন গিটার পাওয়ার মতো অনেক পারফরমেন্সেও ওকে দেয়া হয় না। অথচ অন্যদেরকে কি অবলীলায় গোল্ডেন গিটার দিয়ে দেয়। তাহলে শুধু বাংলাদেশি দর্শক ধরে রাখারই পলিটিক্স মনে করাটাই তো স্বাভাবিক।’
এমনই অসংখ্য ভক্ত নোবেলের নম্বর কম প্রাপ্তিতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে চোখ রাখলেই এমন ক্ষোভ সম্বলিত অসংখ্য পোস্ট দেখা মিলছে।
উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে মইনুল আহসান নোবেল কলকাতার জনপ্রিয় নির্মাতা সৃজিতের একটি চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেছেন।