ঢাকা ০৮:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যে সাপের বিষে মৃত্যু হয় না

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:১২:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ এপ্রিল ২০১৯
  • ২৭২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ খয়েরি ফণিমনসা দেখতে ‘অদ্ভুত’ সুন্দর একটি সাপ। দেশে যত সাপের দেখা মেলে, তার মধ্যে এ সাপ অন্যতম সুন্দর। এর বিষ আছে, তবে তা মানুষের মৃত্যুর জন্য পর্যাপ্ত নয়। শুধু শিকারকে সাময়িকভাবে অবশ করতে পারে। গহীন বনের ঝোপ-ঝাড়ে এর বসবাস।

বিড়ালের মতো সুন্দর চোখ বলে খয়েরি ফণিমনসার ইংরেজি নাম Tawny Cat Snake। বৈজ্ঞানিক নাম Boiga ochracea। এরা Colubridae গোত্রের সদস্য। শিকারের আশায় বনের ঝোপ অথবা ছোট আকারের গাছের ওপর বসে থাকতে দেখা যায়।

নিশাচর এ সাপ বনের প্রান্তে বা রাস্তার ধারে গাছে বসে থাকে শিকারের আশায়। এরা সাধারণ ৩-৫ ফুট লম্বা হয়। এর দেহ কিছুটা চ্যাপ্টা এবং মসৃণ। মুখের আঁশগুলো সাদাটে বা হলদেটে। মুখ ভোতা এবং ঘাড় মাথার তুলনায় সরু, তবে লেজ চিকন ও লম্বা। লাল রঙের চোখ আকারে বেশ বড়। এর প্রিয় খাদ্য হচ্ছে গিরগিটি, ছোট পাখি, পাখির ডিম বা ইঁদুর জাতীয় প্রাণি। পাহাড়ি সবুজ বনে এর বসবাস।

বাংলাদেশে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, সাতছড়ি, রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, কাপ্তাই উদ্যানে সাধারণত এর দেখা মেলে। বাংলাদেশ ছাড়াও হিমালয় পর্বতমালার কিছু অংশে, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার এবং ভারতের কয়েকটি বনাঞ্চলে এর দেখা পাওয়া যায়।

snack

এরা নির্বিষ হলেও কিছুটা বিষ আছে, তবে মানুষের জন্য ক্ষতিকর নয়। এর মুখ বা থলিতে বিষ যা আছে, যেটা দিয়ে এরা শিকারকে অবশ করে এবং খাদ্যদ্রব্য হজম করে। এর বিষের পরিমাণ একজন মানুষকে ক্ষতি করার জন্য যথেষ্ট নয়। এরা ওঁৎ পেতে শিকার ধরলেও মাঝে মাঝে ঝোপে লুকিয়ে নিজের সরু লেজ মাটিতে কাপায়। যা দেখে গিরগিটি পোকা-মাকড় মনে করে খেতে আসে, আর তখন সে খপ করে ধরে ফেলে।

বন্যপ্রাণি গবেষক ও আলোকচিত্রী আদনান আজাদ আসিফ সাংবাদিককে বলেন, ‘বলা যেতে পারে এটি দেশের অন্যতম সেরা সুন্দর সাপ। এর চোখ খুবই সুন্দর, যা সহজেই আকৃষ্ট করে।’

জাবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও প্রাণি বিশেষজ্ঞ মনিরুল এইচ খান সাংবাদিককে বলেন, ‘দেশে ৩ প্রজাতির ফণিমনসা সাপ পাওয়া যায়। তবে তার সবগুলোই বিষমুক্ত। কিন্তু মানুষ না জানার কারণে একে বিষাক্ত ভেবে মেরে ফেলে। পরিবেশের কথা চিন্তা করে সাপকে রক্ষা করা জরুরি। সেইসঙ্গে মানুষকেও সচেতন করতে হবে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

যে সাপের বিষে মৃত্যু হয় না

আপডেট টাইম : ০৪:১২:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ এপ্রিল ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ খয়েরি ফণিমনসা দেখতে ‘অদ্ভুত’ সুন্দর একটি সাপ। দেশে যত সাপের দেখা মেলে, তার মধ্যে এ সাপ অন্যতম সুন্দর। এর বিষ আছে, তবে তা মানুষের মৃত্যুর জন্য পর্যাপ্ত নয়। শুধু শিকারকে সাময়িকভাবে অবশ করতে পারে। গহীন বনের ঝোপ-ঝাড়ে এর বসবাস।

বিড়ালের মতো সুন্দর চোখ বলে খয়েরি ফণিমনসার ইংরেজি নাম Tawny Cat Snake। বৈজ্ঞানিক নাম Boiga ochracea। এরা Colubridae গোত্রের সদস্য। শিকারের আশায় বনের ঝোপ অথবা ছোট আকারের গাছের ওপর বসে থাকতে দেখা যায়।

নিশাচর এ সাপ বনের প্রান্তে বা রাস্তার ধারে গাছে বসে থাকে শিকারের আশায়। এরা সাধারণ ৩-৫ ফুট লম্বা হয়। এর দেহ কিছুটা চ্যাপ্টা এবং মসৃণ। মুখের আঁশগুলো সাদাটে বা হলদেটে। মুখ ভোতা এবং ঘাড় মাথার তুলনায় সরু, তবে লেজ চিকন ও লম্বা। লাল রঙের চোখ আকারে বেশ বড়। এর প্রিয় খাদ্য হচ্ছে গিরগিটি, ছোট পাখি, পাখির ডিম বা ইঁদুর জাতীয় প্রাণি। পাহাড়ি সবুজ বনে এর বসবাস।

বাংলাদেশে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, সাতছড়ি, রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, কাপ্তাই উদ্যানে সাধারণত এর দেখা মেলে। বাংলাদেশ ছাড়াও হিমালয় পর্বতমালার কিছু অংশে, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার এবং ভারতের কয়েকটি বনাঞ্চলে এর দেখা পাওয়া যায়।

snack

এরা নির্বিষ হলেও কিছুটা বিষ আছে, তবে মানুষের জন্য ক্ষতিকর নয়। এর মুখ বা থলিতে বিষ যা আছে, যেটা দিয়ে এরা শিকারকে অবশ করে এবং খাদ্যদ্রব্য হজম করে। এর বিষের পরিমাণ একজন মানুষকে ক্ষতি করার জন্য যথেষ্ট নয়। এরা ওঁৎ পেতে শিকার ধরলেও মাঝে মাঝে ঝোপে লুকিয়ে নিজের সরু লেজ মাটিতে কাপায়। যা দেখে গিরগিটি পোকা-মাকড় মনে করে খেতে আসে, আর তখন সে খপ করে ধরে ফেলে।

বন্যপ্রাণি গবেষক ও আলোকচিত্রী আদনান আজাদ আসিফ সাংবাদিককে বলেন, ‘বলা যেতে পারে এটি দেশের অন্যতম সেরা সুন্দর সাপ। এর চোখ খুবই সুন্দর, যা সহজেই আকৃষ্ট করে।’

জাবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও প্রাণি বিশেষজ্ঞ মনিরুল এইচ খান সাংবাদিককে বলেন, ‘দেশে ৩ প্রজাতির ফণিমনসা সাপ পাওয়া যায়। তবে তার সবগুলোই বিষমুক্ত। কিন্তু মানুষ না জানার কারণে একে বিষাক্ত ভেবে মেরে ফেলে। পরিবেশের কথা চিন্তা করে সাপকে রক্ষা করা জরুরি। সেইসঙ্গে মানুষকেও সচেতন করতে হবে।’