ঢাকা ০৬:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খালেদা জিয়াকে নিয়ে কূটনীতিকদের যা বললো বিএনপি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১৮:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ এপ্রিল ২০১৯
  • ২৪০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দি অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার বর্তমান শারীরিক অবস্থা নিয়ে কূটনীতিকদের ব্রিফ করেছে দলটি। বৃহস্পতিবার বিকালে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এতে অংশ নেন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, চীন, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, ইইউ, তুরস্ক, নরওয়ে, পাকিস্তান, মরক্কো, মিয়ানমারসহ বাংলাদেশে নিযুক্ত নানা দেশ ও সংস্থার ২১ জন কূটনীতিক।

দুই পাতার লিখিত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য দিন দিন অবনতি হচ্ছে। তার পছন্দ অনুযায়ী হাসপাতালে চিকিৎসা না দিয়ে সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কৌশলে তাকে কষ্ট দিচ্ছে। পরিত্যক্ত অন্ধকার কারাগারের ভবনে ফেলে রাখার কারণে তার স্বাস্থ্যের ওপর গভীর প্রভাব পড়েছে।

তিনি বলেন, প্রথম অবস্থায় তিনি (খালেদা জিয়া) এতটা অসুস্থ ছিলেন না। হেঁটে আদালতে গেছেন হাজিরা দিতে। কিন্তু এখন তার অবস্থা এতটাই খারাপ যে, হুইল চেয়ার ছাড়া চলাফেরা করতে পারেন না। চোখে দেখেন না ঠিকমতো। চিকিৎসক তার এমআরআই (ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং) করাতে পরামর্শ দিয়েছিলেন, কিন্তু সেটাও করা হয়নি। তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দিন দিন কমে যাচ্ছে।

চিকিৎসকদের উদ্ধৃতি দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, তাদের (চিকিৎসকদের) আশঙ্কা তার গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো অকেজো হয়ে গেছে। কিন্তু সরকার তারপরও ইচ্ছাকৃতভাবে এগুলো উপেক্ষা করেই চলছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে তার জীবননাশের সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থার অনেক অবনতি হয়েছে। খালেদা জিয়া ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে রিউমাটোয়েড আর্থাইট্রিস, ২০ বছরের বেশি সময় ধরে ডায়াবেটিস মেলিটাস এবং পাঁচ ধরে হাইপারটেনশন, আয়রন স্বল্পতা ও অ্যানেমিয়াতে ভুগছেন। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাজীবন শুরুর পর তিনি কিডনির রোগ ও লিভার অ্যাইলমেন্টে আক্রান্ত হয়েছেন। বারবার অনুরোধের পর অধ্যাপক আব্দুল জলিল চৌধুরী, ডা. শামীম আহমেদ, ডা. ফাতেমা পারভীন, ডা. চৌধুরী ইকবাল মাহমুদ ও ডা. বদিউজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি তাকে (খালেদা জিয়া) দেখতে যান।

এর আগে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় গত বছরের ৬ অক্টোবর তাকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়। কিন্ত ১১ নভেম্বর চিকিৎকদের অনুমতি ছাড়া তাকে কারাগারে ফেরত নেয়া হয়।

লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়, এই মেডিকেল বোর্ডের সঙ্গে গিয়েছিলেন ডা. কে জামান ও ডা. মাহমুদুল হাসান। বোর্ডের সদস্যরা তার মেরুদণ্ডের দৃশ্যমান ক্ষয় ও গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের দুর্বলতা দেখেছেন। গত ১২ মার্চ কিছু মেডিকেল পরীক্ষার পর নতুন করে তার কিছু শারীরিক সমস্যা ধরা পড়ে। এর মধ্যে ঘাড়ে ব্যথা, চোখের প্রদাহ, শ্বাসনালীতে সংক্রমণ ও কিডনি সমস্যা অন্যতম। এ ছাড়া সুগার বাড়ছে, কোলেস্টেরল বাড়ছে।

সরকার খালেদা জিয়ার সব ধরনের সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করছেন। একের পর এক অসংখ্য মামলা দিয়ে তার বিচারিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করছেন বলেও অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এ সময় বিএনপির পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদসহ সিনিয়র নেতারা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

খালেদা জিয়াকে নিয়ে কূটনীতিকদের যা বললো বিএনপি

আপডেট টাইম : ১২:১৮:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ এপ্রিল ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দি অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার বর্তমান শারীরিক অবস্থা নিয়ে কূটনীতিকদের ব্রিফ করেছে দলটি। বৃহস্পতিবার বিকালে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এতে অংশ নেন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, চীন, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, ইইউ, তুরস্ক, নরওয়ে, পাকিস্তান, মরক্কো, মিয়ানমারসহ বাংলাদেশে নিযুক্ত নানা দেশ ও সংস্থার ২১ জন কূটনীতিক।

দুই পাতার লিখিত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য দিন দিন অবনতি হচ্ছে। তার পছন্দ অনুযায়ী হাসপাতালে চিকিৎসা না দিয়ে সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কৌশলে তাকে কষ্ট দিচ্ছে। পরিত্যক্ত অন্ধকার কারাগারের ভবনে ফেলে রাখার কারণে তার স্বাস্থ্যের ওপর গভীর প্রভাব পড়েছে।

তিনি বলেন, প্রথম অবস্থায় তিনি (খালেদা জিয়া) এতটা অসুস্থ ছিলেন না। হেঁটে আদালতে গেছেন হাজিরা দিতে। কিন্তু এখন তার অবস্থা এতটাই খারাপ যে, হুইল চেয়ার ছাড়া চলাফেরা করতে পারেন না। চোখে দেখেন না ঠিকমতো। চিকিৎসক তার এমআরআই (ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং) করাতে পরামর্শ দিয়েছিলেন, কিন্তু সেটাও করা হয়নি। তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দিন দিন কমে যাচ্ছে।

চিকিৎসকদের উদ্ধৃতি দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, তাদের (চিকিৎসকদের) আশঙ্কা তার গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো অকেজো হয়ে গেছে। কিন্তু সরকার তারপরও ইচ্ছাকৃতভাবে এগুলো উপেক্ষা করেই চলছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে তার জীবননাশের সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থার অনেক অবনতি হয়েছে। খালেদা জিয়া ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে রিউমাটোয়েড আর্থাইট্রিস, ২০ বছরের বেশি সময় ধরে ডায়াবেটিস মেলিটাস এবং পাঁচ ধরে হাইপারটেনশন, আয়রন স্বল্পতা ও অ্যানেমিয়াতে ভুগছেন। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাজীবন শুরুর পর তিনি কিডনির রোগ ও লিভার অ্যাইলমেন্টে আক্রান্ত হয়েছেন। বারবার অনুরোধের পর অধ্যাপক আব্দুল জলিল চৌধুরী, ডা. শামীম আহমেদ, ডা. ফাতেমা পারভীন, ডা. চৌধুরী ইকবাল মাহমুদ ও ডা. বদিউজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি তাকে (খালেদা জিয়া) দেখতে যান।

এর আগে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় গত বছরের ৬ অক্টোবর তাকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়। কিন্ত ১১ নভেম্বর চিকিৎকদের অনুমতি ছাড়া তাকে কারাগারে ফেরত নেয়া হয়।

লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়, এই মেডিকেল বোর্ডের সঙ্গে গিয়েছিলেন ডা. কে জামান ও ডা. মাহমুদুল হাসান। বোর্ডের সদস্যরা তার মেরুদণ্ডের দৃশ্যমান ক্ষয় ও গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের দুর্বলতা দেখেছেন। গত ১২ মার্চ কিছু মেডিকেল পরীক্ষার পর নতুন করে তার কিছু শারীরিক সমস্যা ধরা পড়ে। এর মধ্যে ঘাড়ে ব্যথা, চোখের প্রদাহ, শ্বাসনালীতে সংক্রমণ ও কিডনি সমস্যা অন্যতম। এ ছাড়া সুগার বাড়ছে, কোলেস্টেরল বাড়ছে।

সরকার খালেদা জিয়ার সব ধরনের সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করছেন। একের পর এক অসংখ্য মামলা দিয়ে তার বিচারিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করছেন বলেও অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এ সময় বিএনপির পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদসহ সিনিয়র নেতারা।