ঢাকা ১০:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

কিছুই দেখতে পারছি না, আমি চলে যাব : খালেদা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:৫৯:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জানুয়ারী ২০১৯
  • ৩৩০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আদালতে বলেছেন, ‘আমি তো কিছুই দেখছি না। আমি তো আপনাকে (বিচারক) দেখছি না। এই দেয়াল তো এর আগে ছিল না, এখন কোথা থেকে এলো। আমি এখানে থাকব না। আমি এখান থেকে চলে যাব।’

বৃহস্পতিবার (২৪জানুয়ারি) দুপুর ১২টা ৩৬ মিনিটে খালেদাকে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ জজ ৩ নং আদালতে হাজির করা হয়। এসময় তাকে এজলাসের ভেতরে দেওয়াল ঘেরা একটি পৃথক জায়গায় রাখা হলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে এসব কথা বলেন।

আদালতে এজলাসের বামপাশে পেশকারের পেছনে নির্দিষ্ট একটি যায়গায় খালেদা জিয়াকে বসানো হয়। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করে খালেদা জিয়া বলেন, আমাকে কাঠগড়ায় ঢোকাতে চাচ্ছেন? এতেও আমি রাজি আছি। এসময় বারবারই খালেদা জিয়াকে বলতে শোনা যায়, আমি এখান থেকে কিছুই দেখতে পারছি না। এরপর বিচারক বলেন, বসার জন্য আগামীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এসময় খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, আমিনুল ইসলাম ও মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার বিচারককে বলেন, কেন তাকে পৃথক করছেন? আপনি সিদ্ধান্ত দিয়ে তাকে সামনে নিয়ে আসেন। তাকে পৃথক রাখার কোনো সুযোগ নেই।

গত ১০ জানুয়ারি মামলাটিতে কারাগার থাকা খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করতে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট জারি করে ১৬ জানুয়ারি চার্জশুনানির তারিখ ঠিক করেন আদালত। কিন্তু ওই দিন খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকায় তাকে আদালতে হাজির করেনি কারা কর্তৃপক্ষ।

দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল ওই দিন অন্যান্য আসামির পক্ষে চার্জশুনানির আবেদন করেন। অপরদিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার সকল আসামির উপস্থিতি নিশ্চিত করে চার্জশুনানি করার আবেদন করেন। অন্যান্য আসামিদের আইনজীবীরাও শুনানি পেছানোর আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত বিচারক বলেন, দীর্ঘদিন মামলাটির বিচার কার্যক্রম বন্ধ ছিল। হাইকোর্ট মামলাটি ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন। মামলাটি নিষ্পত্তি করতে আপনাদের সহযোগিতা চাই। এরপর আদালত পরবর্তী চার্জশুনানির তারিখ বৃহস্পতিবার (২৪ জানুয়ারি) ধার্য করেন। আর এ দিন সব আসামিকে আদালতে হাজির থাকার নির্দেশ দেন।

প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুদকের উপ-পরিচালক মো. গোলাম শাহরিয়ার ১৩ জনের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় গ্যাটকো দুর্নীতি মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০০৮ সালের ১৩ মে জোট সরকারের প্রভাবশালী ৯ প্রাক্তন মন্ত্রী ও উপমন্ত্রীসহ মোট ২৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের উপ-পরিচালক মো. জহিরুল হুদা অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আর বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর শাহবাগ থানায় বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলাটি দায়ের করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক মো. সামছুল আলম। দুদকের উপ-পরিচালক মো. আবুল কাসেম ওই বছরের ৫ অক্টোবর খালেদা জিয়াসহ আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন-বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামালউদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউসুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াসউদ্দিন আল মামুন, বাগেরহাটের সাবেক সাংসদ এমএএইচ সেলিম এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।

উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় যথাক্রমে ১০ এবং সাত বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন খালেদা জিয়া। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার পর গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে খালেদা জিয়াকে বন্দি রাখা হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

ভুলে শিশুর ভালো চোখে অস্ত্রোপচার

কিছুই দেখতে পারছি না, আমি চলে যাব : খালেদা

আপডেট টাইম : ০৩:৫৯:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জানুয়ারী ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আদালতে বলেছেন, ‘আমি তো কিছুই দেখছি না। আমি তো আপনাকে (বিচারক) দেখছি না। এই দেয়াল তো এর আগে ছিল না, এখন কোথা থেকে এলো। আমি এখানে থাকব না। আমি এখান থেকে চলে যাব।’

বৃহস্পতিবার (২৪জানুয়ারি) দুপুর ১২টা ৩৬ মিনিটে খালেদাকে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ জজ ৩ নং আদালতে হাজির করা হয়। এসময় তাকে এজলাসের ভেতরে দেওয়াল ঘেরা একটি পৃথক জায়গায় রাখা হলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে এসব কথা বলেন।

আদালতে এজলাসের বামপাশে পেশকারের পেছনে নির্দিষ্ট একটি যায়গায় খালেদা জিয়াকে বসানো হয়। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করে খালেদা জিয়া বলেন, আমাকে কাঠগড়ায় ঢোকাতে চাচ্ছেন? এতেও আমি রাজি আছি। এসময় বারবারই খালেদা জিয়াকে বলতে শোনা যায়, আমি এখান থেকে কিছুই দেখতে পারছি না। এরপর বিচারক বলেন, বসার জন্য আগামীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এসময় খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, আমিনুল ইসলাম ও মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার বিচারককে বলেন, কেন তাকে পৃথক করছেন? আপনি সিদ্ধান্ত দিয়ে তাকে সামনে নিয়ে আসেন। তাকে পৃথক রাখার কোনো সুযোগ নেই।

গত ১০ জানুয়ারি মামলাটিতে কারাগার থাকা খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করতে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট জারি করে ১৬ জানুয়ারি চার্জশুনানির তারিখ ঠিক করেন আদালত। কিন্তু ওই দিন খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকায় তাকে আদালতে হাজির করেনি কারা কর্তৃপক্ষ।

দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল ওই দিন অন্যান্য আসামির পক্ষে চার্জশুনানির আবেদন করেন। অপরদিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার সকল আসামির উপস্থিতি নিশ্চিত করে চার্জশুনানি করার আবেদন করেন। অন্যান্য আসামিদের আইনজীবীরাও শুনানি পেছানোর আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত বিচারক বলেন, দীর্ঘদিন মামলাটির বিচার কার্যক্রম বন্ধ ছিল। হাইকোর্ট মামলাটি ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন। মামলাটি নিষ্পত্তি করতে আপনাদের সহযোগিতা চাই। এরপর আদালত পরবর্তী চার্জশুনানির তারিখ বৃহস্পতিবার (২৪ জানুয়ারি) ধার্য করেন। আর এ দিন সব আসামিকে আদালতে হাজির থাকার নির্দেশ দেন।

প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুদকের উপ-পরিচালক মো. গোলাম শাহরিয়ার ১৩ জনের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় গ্যাটকো দুর্নীতি মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০০৮ সালের ১৩ মে জোট সরকারের প্রভাবশালী ৯ প্রাক্তন মন্ত্রী ও উপমন্ত্রীসহ মোট ২৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের উপ-পরিচালক মো. জহিরুল হুদা অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আর বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর শাহবাগ থানায় বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলাটি দায়ের করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক মো. সামছুল আলম। দুদকের উপ-পরিচালক মো. আবুল কাসেম ওই বছরের ৫ অক্টোবর খালেদা জিয়াসহ আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন-বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামালউদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউসুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াসউদ্দিন আল মামুন, বাগেরহাটের সাবেক সাংসদ এমএএইচ সেলিম এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।

উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় যথাক্রমে ১০ এবং সাত বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন খালেদা জিয়া। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার পর গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে খালেদা জিয়াকে বন্দি রাখা হয়।