হাওর বার্তা ডেস্কঃ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রশাসন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার যৌথ ব্যবস্থাপনায় রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে বিশেষ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। নির্বাচনের আগের দিন অর্থাৎ ২৯ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রোহিঙ্গারা যাতে কোনো অজুহাতেই ক্যাম্পের বাইরে যেতে বা অবস্থান করতে না পারে, সে ব্যাপারে কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। পুলিশ বলছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে এ আদেশ কার্যকর হচ্ছে।
উখিয়ার পালংখালী ও রাজাপালং ইউনিয়নের ২৩ ক্যাম্পে আশ্রয় গ্রহণ করেছে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, তাদের অনেকেই ইতোমধ্যে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করেছে, যা নিয়ে ভোটকেন্দ্রে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। রোহিঙ্গাদের অবাধ বিচরণ নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বাধাগ্রস্ত করতে পারে। এমন আশঙ্কাকেই গুরুত্ব দিয়ে প্রশাসন রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পের বাইরে আসা-যাওয়া থেকে বিরত রাখার জন্য কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
উখিয়া থানার ওসি আবুল খায়ের জানান, রোহিঙ্গারা কালোটাকার বিনিময়ে ভোটকেন্দ্রে কারো পক্ষাবলম্বন করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করতে পারে। তাই বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে পুলিশ রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেছে। তিনি বলেন, প্রয়োজনে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা জারি রাখা হবে। এ সময়ের ভেতর কোনো রোহিঙ্গাকে ক্যাম্পের বাইরে পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে বিদেশি নাগরিক আইনে মামলা রুজু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে কুতুপালং ক্যাম্প ইনচার্জ মো. জালাল উদ্দিন জানান, রোহিঙ্গারা যাতে ভোট চলাকালীন ক্যাম্পের বাইরে যেতে না পারে, সে ব্যাপারে তাদের ওপর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা রয়েছে। তিনি বলেন, যেকোনো অজুহাত এমনকি মুমূর্ষু রোগী পর্যন্ত ক্যাম্পের বাইরে যেতে না দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। এরই মধ্যে রোহিঙ্গাদের এমন বার্তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাতে তারা আগাম সতর্কতা অবলম্বন করে চলতে পারে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, জাতীয় নির্বাচন চলাকালীন বা নির্বাচনের আগের দিন থেকে নির্বাচনের পরের দিন পর্যন্ত রোহিঙ্গারা যেন কোনো অবস্থাতেই ক্যাম্পের বাইরে যেতে না পারে, সে ব্যাপারে ক্যাম্প ইনচার্জদের সতর্কতা অবলম্বন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে পুলিশ, বিজিবি, সেনা সদস্যরা ক্যাম্প এলাকায় টহল অব্যাহত রেখেছেন। নির্বাচনের দিন আরো কঠোরভাবে রোহিঙ্গাদের ওপর নজরদারি বৃদ্ধি করবে। এ ব্যাপারে কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম জানান, জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর কঠোর নজরদারি রাখার জন্য ক্যাম্পসংশ্লিষ্ট প্রশাসন, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও রোহিঙ্গাদের মানবিক সেবায় নিয়োজিত এনজিওদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।