অবশেষে যশোরের ভৈরব নদ থেকে অবৈধ পাটা উচ্ছেদ শুরু হয়েছে। বুধবার সকালে শহরের পূর্বপ্রান্তে ঝুমঝুমপুর এলাকা থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসিফুর রহমানের নেতৃত্বে ঝুমঝুমপুর এলাকায় ভৈরব নদের অবৈধ পাটা উচ্ছেদ শুরু হয়। এ সময় তার সঙ্গে সহকারী ভূমি কর্মকর্তা তামিনুল ইসলাম ও কোতয়ালী থানার এসআই আলী আকবরের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রথম দিনের অভিযানে তিনটি পাটা উচ্ছেদ হয়। পাটা উচ্ছেদকালে দখলদারদের কাউকে পাওয়া যায়নি।
যশোরের জেলা প্রশাসক ড. হুমায়ুন কবীর জানান, জেলার সব নদী ও উন্মুক্ত জলাশয় থেকে সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা উচ্ছেদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতি মাসের উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনা হয়। আজ শুরু হল যশোর শহর ও শহরতলীর ভৈরব নদের পাটা উচ্ছেদ অভিযান। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে, যতক্ষণ সব পাটা উচ্ছেদ না হয়।
প্রসঙ্গত, যশোর শহর ও শহরতলীতে সরকারি দলের একাংশের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা যে যার মতো ভৈরব নদের অংশবিশেষ দখল করে পাটা দিয়ে মাছ চাষ করছে। সরকারি দলের অন্য অংশ চায় অবৈধ পাটা উচ্ছেদ করে ভৈরব নদে অবাধ পানি প্রবাহের ব্যবস্থা করা হোক। এই অংশের এক গুরুত্বপূর্ণ নেতা জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন।
জানতে চাইলে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা কমিটির গত দু’টি সভায় পাটা উচ্ছেদের জন্য আমি জোরাল বক্তব্য দিয়েছি। সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে পাটা উচ্ছেদের। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে প্রশাসন এতদিন পাটা উচ্ছেদ করেনি। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) আইনশৃঙ্খলা কমিটির পরবর্তী বৈঠক। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, পাটা উচ্ছেদ না হওয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে আমি বৈঠক বয়কট করে চলে আসব। কিন্তু তার আগে পাটা উচ্ছেদ শুরু হওয়ায় আমি খুশি।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যারা নদী দখল করে ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করে, তারা কোনো দলের লোক হতে পারে না। প্রধানমন্ত্রীর স্পষ্ট নির্দেশ, প্রবহমান জলাশয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। যারা এ কাজ করেছে, তারা দলের নাম ব্যবহার করেছে মাত্র। আসলে তারা দলের লোক নয়।’
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে নদ-নদী আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য ও জেলা সভাপতি ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, ‘প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঝেমধ্যে দু’-একটি পাটা উচ্ছেদ করা হয়। কিন্তু এই কার্যক্রম বেশি দিন চলে না।’
সরকারি জোটের এই নেতা বলেন, ‘অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। কিন্তু তা না করায় প্রভাবশালীরা নদ-নদীর জমি দখল করে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করার সুযোগ পায়।’