ঢাকা ০৫:৪২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সবজির আবাদ নিয়ে এখন ব্যস্ত এই নারীরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৪৩:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ ডিসেম্বর ২০১৮
  • ৩০৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ঘর গোছানোর কাজ থেকে শুরু করে দেশ সামলানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজের নেতৃত্বে রয়েছেন নারীরা। নিজস্ব মেধা যোগ্যতা দিয়েই নিজ নিজ কাজে এগিয়ে যাচ্ছে নারী সমাজ। পরিবার বা দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার পাশাপাশি কৃষি কাজেও পিছিয়েও নেই তারা। গৃহস্থলী কাজের পাশাপাশি পরিবারের পুরুষ সদস্যদের ক্ষেত খামারের কাজেও সাহায্য করছেন গ্রামীন নারীরা। সবজি চাষে খ্যাত মানিকগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় সবজির আবাদ নিয়ে এখন বেশ ব্যস্ত কৃষি প্রধান পরিবারগুলো। এসব কাজেও সব রকমের সহযোগিতা করছেন মানিকগঞ্জের নারীরা।

মানিকগঞ্জের সাতটি উপজেলাতেই কম বেশি সবজির আবাদ হয়। তবে জেলার সিংগাইর, সাটুরিয়া এবং মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় সবজির আবাদ হয় সবচেয়ে বেশি। শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত এখন এসব এলাকার কৃষকরা। আবহাওয়া অনূকুলে থাকায় চলতি মৌসুমে সবজির ফলনও হয়েছে ভালো। রাজধানীর সঙ্গে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে এসব এলাকার সবজির চাহিদাও বেশ। সব মিলিয়ে চলতি মৌসুমের সবজি চাষে লাভবান এখানকার কৃষকরা।

Related imageমানিকগঞ্জ সদর উপজেলার হাজিনগর এলাকার আনিসুল ইসলামের স্ত্রী শিল্পী আক্তার সাংবাদিককে জানান, কৃষিকাজের উপর নির্ভর করেই তাদের সংসার জীবন। অল্প কিছু জমিতে ধান চাষ করে বাকি প্রায় তিন বিঘা জমিতে সবজি চাষ করেন। পরিবারের কাজ কর্ম শেষ করে তিনি নিয়মিতভাবেই তার স্বামীকে কৃষিকাজে সাহায্য করেন। এতে বাড়তি শ্রমিকের তেমন প্রয়োজন হয় না।

সংসার জীবনে দুই মেয়ের জননী শিল্পী আরও আক্তার জানান, বড় মেয়ে সরকারি দেবেন্দ্র কলেজে পড়াশোনা করে আর ছোট মেয়ে এবার সমাপনী পরীক্ষা দিয়েছে। নিজে তেমন পড়াশোনা না করতে পারলেও মেয়েদের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান তিনি।

Image result for ফুলকপি চাষের ছবিসদর উপজেলার কৃষ্ণপুর এলাকার আব্দুর রহমানের স্ত্রী সুমী বেগম জানান, পরিবারে অভাব অনটনের জন্যে নিজে পড়াশোনা করতে পারেননি। অল্প বয়সেই বিয়ে হয়েছে তার। স্বামীও তেমন শিক্ষিত নয়। তবে নিজেদের কিছু জমি ও অন্যের জমি বর্গা নিয়ে সবজি আবাদ করে বেশ সুখেই আছেন তারা। ছেলে মেয়েদের পড়াশোনার
জন্য স্বামীর পাশাপাশি নিজেও সবজির জমিতে কাজ করেন অবিরত। এতে শ্রমিকের খরচ কিছুটা কম হয় এবং সেই টাকাগুলো সন্তানদের পড়াশোনার পেছনে ব্যয় করা যায় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সাটুরিয়া উপজেলার কামতা এলাকার সবজি চাষি আব্দুল মান্নান জানান, সবিজ চাষে বেশ শ্রম দিতে হয়। এতে মুনাফাও বেশি। জমিতে কাজের চাপ বেশি থাকলে তার স্ত্রী ও সন্তানেরাও ক্ষেত খামারের কাজে তাকে সহায়তা করেন। এভাবেই তিনি প্রায় এক যুগ ধরে সবজি চাষ করে আসছেন বলে জানান।

একই এলাকার ছাইদুল ইসলামের স্ত্রী দুই সন্তানের জননী রুখছানা বেগম জানান, কৃষি প্রধান পরিবারেই বেড়ে উঠেছেন তিনি। বিয়েও হয়েছে কৃষি প্রধান পরিবারে। বাড়িতে একটি গাভি রয়েছে তার। ছেলেরা স্কুলে গেলে গৃহস্থলী কাজ শেষে ক্ষেত খামারের কাজেও সহায়তা করেন তিনি। এক সময় কৃষিকাজে লজ্জা ও কষ্ট হলেও এখন আর তেমন কষ্ট হয় না বলেও জানান তিনি। এছাড়া নিজের কাজ নিজে করার মধ্যে কোনো লজ্জা নেই বলেও জানান এই নারী।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা গনেস চন্দ্র রায় সাংবাদিককে জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় ৭ হাজার ৯৭৫ হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ হয়েছে। অনূকুল আবহাওয়ায় সবজির বাম্পার ফলনে বেশ লাভবান এখানকার চাষিরা। সবজি চাষে অধিক শ্রমের প্রয়োজন হয়। অনেক পরিবারের পুরুষ সদস্যসের সঙ্গে নারীরাও সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করেন বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

সূত্রঃ বাংলানিউজ

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

সবজির আবাদ নিয়ে এখন ব্যস্ত এই নারীরা

আপডেট টাইম : ১১:৪৩:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ ডিসেম্বর ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ঘর গোছানোর কাজ থেকে শুরু করে দেশ সামলানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজের নেতৃত্বে রয়েছেন নারীরা। নিজস্ব মেধা যোগ্যতা দিয়েই নিজ নিজ কাজে এগিয়ে যাচ্ছে নারী সমাজ। পরিবার বা দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার পাশাপাশি কৃষি কাজেও পিছিয়েও নেই তারা। গৃহস্থলী কাজের পাশাপাশি পরিবারের পুরুষ সদস্যদের ক্ষেত খামারের কাজেও সাহায্য করছেন গ্রামীন নারীরা। সবজি চাষে খ্যাত মানিকগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় সবজির আবাদ নিয়ে এখন বেশ ব্যস্ত কৃষি প্রধান পরিবারগুলো। এসব কাজেও সব রকমের সহযোগিতা করছেন মানিকগঞ্জের নারীরা।

মানিকগঞ্জের সাতটি উপজেলাতেই কম বেশি সবজির আবাদ হয়। তবে জেলার সিংগাইর, সাটুরিয়া এবং মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় সবজির আবাদ হয় সবচেয়ে বেশি। শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত এখন এসব এলাকার কৃষকরা। আবহাওয়া অনূকুলে থাকায় চলতি মৌসুমে সবজির ফলনও হয়েছে ভালো। রাজধানীর সঙ্গে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে এসব এলাকার সবজির চাহিদাও বেশ। সব মিলিয়ে চলতি মৌসুমের সবজি চাষে লাভবান এখানকার কৃষকরা।

Related imageমানিকগঞ্জ সদর উপজেলার হাজিনগর এলাকার আনিসুল ইসলামের স্ত্রী শিল্পী আক্তার সাংবাদিককে জানান, কৃষিকাজের উপর নির্ভর করেই তাদের সংসার জীবন। অল্প কিছু জমিতে ধান চাষ করে বাকি প্রায় তিন বিঘা জমিতে সবজি চাষ করেন। পরিবারের কাজ কর্ম শেষ করে তিনি নিয়মিতভাবেই তার স্বামীকে কৃষিকাজে সাহায্য করেন। এতে বাড়তি শ্রমিকের তেমন প্রয়োজন হয় না।

সংসার জীবনে দুই মেয়ের জননী শিল্পী আরও আক্তার জানান, বড় মেয়ে সরকারি দেবেন্দ্র কলেজে পড়াশোনা করে আর ছোট মেয়ে এবার সমাপনী পরীক্ষা দিয়েছে। নিজে তেমন পড়াশোনা না করতে পারলেও মেয়েদের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান তিনি।

Image result for ফুলকপি চাষের ছবিসদর উপজেলার কৃষ্ণপুর এলাকার আব্দুর রহমানের স্ত্রী সুমী বেগম জানান, পরিবারে অভাব অনটনের জন্যে নিজে পড়াশোনা করতে পারেননি। অল্প বয়সেই বিয়ে হয়েছে তার। স্বামীও তেমন শিক্ষিত নয়। তবে নিজেদের কিছু জমি ও অন্যের জমি বর্গা নিয়ে সবজি আবাদ করে বেশ সুখেই আছেন তারা। ছেলে মেয়েদের পড়াশোনার
জন্য স্বামীর পাশাপাশি নিজেও সবজির জমিতে কাজ করেন অবিরত। এতে শ্রমিকের খরচ কিছুটা কম হয় এবং সেই টাকাগুলো সন্তানদের পড়াশোনার পেছনে ব্যয় করা যায় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সাটুরিয়া উপজেলার কামতা এলাকার সবজি চাষি আব্দুল মান্নান জানান, সবিজ চাষে বেশ শ্রম দিতে হয়। এতে মুনাফাও বেশি। জমিতে কাজের চাপ বেশি থাকলে তার স্ত্রী ও সন্তানেরাও ক্ষেত খামারের কাজে তাকে সহায়তা করেন। এভাবেই তিনি প্রায় এক যুগ ধরে সবজি চাষ করে আসছেন বলে জানান।

একই এলাকার ছাইদুল ইসলামের স্ত্রী দুই সন্তানের জননী রুখছানা বেগম জানান, কৃষি প্রধান পরিবারেই বেড়ে উঠেছেন তিনি। বিয়েও হয়েছে কৃষি প্রধান পরিবারে। বাড়িতে একটি গাভি রয়েছে তার। ছেলেরা স্কুলে গেলে গৃহস্থলী কাজ শেষে ক্ষেত খামারের কাজেও সহায়তা করেন তিনি। এক সময় কৃষিকাজে লজ্জা ও কষ্ট হলেও এখন আর তেমন কষ্ট হয় না বলেও জানান তিনি। এছাড়া নিজের কাজ নিজে করার মধ্যে কোনো লজ্জা নেই বলেও জানান এই নারী।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা গনেস চন্দ্র রায় সাংবাদিককে জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় ৭ হাজার ৯৭৫ হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ হয়েছে। অনূকুল আবহাওয়ায় সবজির বাম্পার ফলনে বেশ লাভবান এখানকার চাষিরা। সবজি চাষে অধিক শ্রমের প্রয়োজন হয়। অনেক পরিবারের পুরুষ সদস্যসের সঙ্গে নারীরাও সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করেন বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

সূত্রঃ বাংলানিউজ