হাওর বার্তা ডেস্কঃ কলিম উদ্দিন মিলনের প্রার্থিতা না পাওয়া নিয়ে তোলপাড় চলছে সিলেট ও সুনামগঞ্জে। এমন ঘটনায় ক্ষোভ বিরাজ করছে ছাতক-দোয়ারা বিএনপিতে। যোগ্য প্রার্থী মিলনই-সেটিও একবাক্যে বলছেন সবাই। শুধু এলাকা নয়, সিলেট বিএনপির নেতারাও এতে হতবাক হয়েছেন। কোনো যুক্তিই মিলছে না মিলনের ক্ষেত্রে। তিনি এলাকার কর্মীঘেঁষা নেতা। সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদকও। দলের দুর্দিনে তিনি শক্ত হাতে হাল ধরেছিলেন। এরপরও মিলন বাদ-এটি মেনে নিতে পারছে না কেউ। তবে বুকে পাথর চেপে দলীয় সিদ্ধান্তে অনড় মিলন। ক্ষোভ কমাতে পারছেন না তিনি। নিজেও পড়ছেন তোপের মুখে। তার পক্ষে মাঠে থাকা নেতারা কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত মানছেন না। সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দাবি তুলেছেন তারা।
সুনামগঞ্জ-৫ (ছাতক-দোয়ারাবাজার) সংসদীয় আসনের বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি কলিম উদ্দিন মিলন। সুনামগঞ্জ বিএনপির শীর্ষ নেতা তিনি। পাশাপাশি সিলেট বিভাগেও বিএনপির পরিচিত মুখও। সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হওয়ার সুবাদে তিনি চষে বেড়াচ্ছেন সিলেট বিভাগ। গেল সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয়ে তিনি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন।
ছাতক-দোয়ারাবাজারের বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের প্রাণপুরুষ কলিম উদ্দিন মিলন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি পরাজিত হওয়ার পরও মাঠ ছাড়েন নি। দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে একাট্টা হয়ে রাজনীতি করে চলেছেন। এবারের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মিলন আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। ইতিমধ্যে তিনি দুটি উপজেলার বিএনপিকে সাজিয়ে রেখেছেন। ভোটের জন্য প্রস্তুত ছিলেন নেতাকর্মীরা। মিলনও আশাবাদী ছিলেন তার কর্মকাণ্ডের কারণে দল থেকে তিনি মূল্যায়িত হবেন। বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন আরেক নেতা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান। কিন্তু শুক্রবার ঘোষিত মনোনয়ন যায় মিজানের পক্ষে। বাদ পড়লেন মিলন। এ ঘোষণায় হতবাক সবাই। সুনামগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীদের ব্যাপক নাড়া দিয়েছে।
এদিকে কলিম উদ্দিন মিলনকে প্রার্থিতা তালিকা থেকে বাদ দেয়ার পর থেকে উত্তাপ বইছে ছাতক- দোয়ারাবাজার বিএনপিতে। ইতিমধ্যে দুটি উপজেলার নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করেছেন এলাকায়। তারা মিলনের প্রার্থিতা ফিরিয়ে দেয়ার দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন। এ সময় তারা বলেছেন মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা না করা পর্যন্ত তারা মাঠ ছেড়ে চলে যাবেন না। এলাকার নেতাকর্মীদের এই আলটিমেটামে বিব্রত মিলনও। নেতাকর্মীদের কী দেবেন সান্ত্বনা-এ চিন্তায় তিনিও অস্থির। এরপরও গতকাল শনিবার বিকালে মিলন ছুটে গিয়েছিলেন নিজ এলাকা ছাতকে। সেখানে তার আসার খবরে শত শত নেতাকর্মী উপস্থিত হন। মিলন এ সময় সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য রাখেন। মিলন বললেন, ‘দেশ আজ মহা সংকটে।
বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে। তারেক রহমান নির্বাসনে। এই অবস্থায় বাংলাদেশের ৩০০ আসনেই প্রার্থী বেগম খালেদা জিয়া। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়া কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন। তারেক রহমান দেশে ফিরবেন। এজন্য সবাইকে আন্দোলনের অংশ হিসেবে এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। কে প্রার্থী, কে প্রার্থী না- সেদিকে তাকানোর কোনো সুযোগ নেই। ধানের শীষ মার্কা দেখেই আমাদের চলতে হবে।’ মিলন যখন ছাতকে এ বক্তব্য রাখছিলেন তখন নেতাকর্মীরাই তাকে থামিয়ে দেন। তারা জানান- প্রার্থিতার এই সিদ্ধান্ত মানা হবে না। তাদের দাবিমতো কর্মীবান্ধব নেতাকেই দিতে হবে দলের মনোনয়ন। এ সময় অনেকেই মিলনের বক্তব্যেরও প্রতিবাদ করেন। তারা বলেন-আলটিমেটামের ভেতরে কোনো ঘোষণা না এলে তারা রাজপথে আন্দোলনে নামবেন।