প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, শুধু সাতক্ষীরাতেই নয়, সারাদেশে বিচারক সংকট রয়েছে। সরকারের অসহযোগিতার কারণে এই বিচারক সংকট মন্তব্য করে তিনি বলেন, জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের আরো শক্তিশালি ভূমিকায় বিচারক সংকট দূর করা সম্ভব। তিনি বলেন, আমি (প্রধান বিচারপতি) দায়িত্ব গ্রহণ করার পর বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়েছি। ইতোমধ্যে কমিশনের সাথে পরামর্শক্রমে অনেক জেলায় যুগ্ম ও সহকারি বিচারক নিয়োগ দিয়েছি। সরকারের সহযোগিতা পেলে খুব দ্রুত এ সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। তিনি বলেন, দেশে লক্ষ লক্ষ মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এগুলো যতোটা সম্ভব দ্রুত নিষ্পত্তি করতে পারলে মানুষ তার বিচার পেতে সহায়ক হবে।
মঙ্গলবার দুপুরে সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবি সমিতির আয়োজনে নতুন আইনজীবি ভবনের নীচতলায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত প্রধান অতিথি বিচারপতি এস কে সিনহা এসব কথা বলেন।
সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি এডভোকেট আবুল হোসেন-২ এর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি আরো বলেন, দেশের প্রত্যেক জেলায় আদালতে আসা স্বাক্ষীদের নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। তাদের বসার জায়গা নির্দিষ্ট করতে হবে। বিশেষ করে মহিলা স্বাক্ষী ও আসামীদের জন্য আলাদা বিশ্রামাগার ও শৌচালয়ের ব্যবস্থা করা খুবই জরুরী উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, এবিষয়েও দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। অতি শীঘ্র প্রত্যেক জেলায় এসব নির্মাণ করা হবে।
সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবি সমিতির তুলে ধরা বিভিন্ন দাবী দাওয়া পূরণের আশ্বাস দিয়ে প্রধান বিচারপতি বিচারকদের উদ্দেশ্যে বলেন, বাংলাদেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। বর্তমানে বিচার বিভাগের ওপর নির্বাহী বিভাগের কোন চাপ নেই। আইনের দৃষ্টিতে বিচারপ্রার্থীরা সকলেই সমান। কে বিএনপি, কে আওয়ামীলীগ , কে জাতীয় পার্টি অথবা কে জামায়াত এটা বিচারকের কাছে মুখ্য নয়। আপনারা (বিচারক) সকল কিছুর উর্ধ্বে থেকে ন্যায়ত বিচার করবেন। আপনাদের চাকুরি, প্রমোশন আমার দায়িত্ব। কোন টেলিফোনে কান দেবেন না। টেলিফোনে শুনে রায় দেওয়ার দিন শেষ হয়েছে। এখন আধুনিক যুগ। সবকিছুই আধুনিক হবে এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, বিচার বিভাগকে ডিজিলাইজেশনের আওতায় আনা হবে। এবিষয়েও কাজ করা হচ্ছে। প্রত্যেক জেলায় ই-লাইব্রেরি করা হবে। তিনি চলমান সংস্কার প্রক্রিয়ায় বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জেলা ও দায়রা জজ জোয়াদ্দার মোঃ আমিরুল ইসলাম, জেলা আইনজীবি সমিতির সাবেক সভাপতি এড. এস এম হায়দার আলী। উপস্থিত ছিলেন, সুপ্রীম কোর্টের রেজিষ্ট্রার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন, সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের জজ আবু মনসুর মোঃ জিয়াউল হক, চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ রাফিজুল ইসলামসহ বিভিন্ন আদালতের বিচারকবৃন্দ, জিপি এড. গাজী লুৎফর রহমান, পিপি এড. ওসমান গণি, সাবেক সভাপতি এড আব্দুল মজিদ-২, অতিরিক্ত পিপি এড আজহারুল ইসলাম প্রমূখ আইনজীবিগণ। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন, বারের সাধারণ সম্পাক এড তোজাম্মেল হোসেন তোজাম।