ঢাকা ০৮:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কালেভদ্রে বসন্তকালে দেখা মেলে উদয়ী পাপিয়া

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:৪৬:০৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ নভেম্বর ২০১৮
  • ৩৫৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ অনিয়মিত পান্থ পরিযায়ী পাখি (চলার পথের পরিযায়ী)। অতি বিরল দর্শন; কোকিল গোত্রের পাখি। কালেভদ্রে বসন্তকালে সিলেটের চা বাগানে দেখা মেলে (দেখা যাওয়ার রেকর্ড অবশ্য খুব বেশি নেই)। এ সময় চা বাগান হয়ে হিমালয় কিংবা মিয়ানমার যাতায়াত করে। মূলত ওরা মিশ্র চিরসবুজ বনের বাসিন্দা। এ ছাড়া খোলা বনভূমি অথবা ফলের বাগানে বিচরণ করে। পারতপক্ষে ভূমি স্পর্শ করে না। বিচরণ করে একাকী। স্বভাবে লাজুক। গাছের পাতা কিংবা ঝোঁপের আড়ালে লুকিয়ে থাকতে পছন্দ করে। সহসা কারো নজরে না পড়লেও কণ্ঠস্বর কানে আসে। সুরে মাদকতা রয়েছে। প্রজনন মুহূর্তে পুরুষ পাখি ডাকে ‘উউপ..উউপ’ সুরে। স্ত্রী ডাকে ‘কুই-কুই কুই কুই কুই’ সুরে। প্রজননক্ষণ ঊষা কিংবা গোধূলীলগ্ন।

প্রজাতিটির বৈশ্বিক বিস্তৃতি ভারত, নেপাল, পাকিস্তান, ভুটান, মিয়ানমার, চীন পর্যন্ত। তবে অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনে শীতে দেখা যায়। বিশ্বে ভালো অবস্থানে রয়েছে, ফলে আইইউসিএন প্রজাতিটিকে বিপদমুক্ত হিসেবে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে প্রজাতিটি সংরক্ষিত।

পাখির বাংলা নাম: ‘উদয়ী পাপিয়া’, ইংরেজি নাম: ‘ওরিয়েন্টাল কুক্কু’ (Oriental Cuckoo), বৈজ্ঞানিক নাম: Cuculus saturatus। এরা ‘হিমালয়ের কোকিল’ নামেও পরিচিত।

প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ৩০-৩১ সেন্টিমিটার। ওজন ৯০ গ্রাম। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারা ভিন্ন। পুরুষ পাখির মাথা ও পিঠ ধূসর-বাদামি ডোরা। লেজ কালচে ধূসর, অগ্রভাগ সাদা। গলা থেকে বুকের উপরিভাগ ধূসর ডোরা। নিচের দিকে পীতাভ-সাদার ওপর কালো ডোরা। স্ত্রী পাখির মাথা ও পিঠ লালচে-বাদামির ওপর কালচে ডোরা। দেহতলে পীতাভ-সাদার ওপর কালচে বাদামি ডোরা। লেজে লালচে বাদামির ওপর কালচে ডোরা, লেজের নিচে সাদা খাঁজকাটা। উভয়ের চোখের বলয় হলুদ। চোখের মণি কমলা-লাল। ঠোঁট শিঙ সবুজ। পা হলুদ।

প্রধান খাবার: লোমশ শুঁয়োপোকা ও অন্যান্য কীটপতঙ্গ।

প্রজনন মৌসুম মে থেকে জুন। নিজেরা বাসা বাঁধতে জানে না বিধায় ডিম পাড়ে হরবোলা ও চুটকি পাখির বাসায়। প্রাকৃতিকভাবে ডিমের রং পালক মাতার ডিমের সঙ্গে মিলিয়ে যায়। ডিমের সংখ্যা ১-২টি। ডিম ফোটার দিনক্ষণ নির্ভর করে পালক মাতার ডিমের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে। ধাত্রী মাতার আশ্রয়েই শাবক লালিত হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

কালেভদ্রে বসন্তকালে দেখা মেলে উদয়ী পাপিয়া

আপডেট টাইম : ০৫:৪৬:০৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ নভেম্বর ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ অনিয়মিত পান্থ পরিযায়ী পাখি (চলার পথের পরিযায়ী)। অতি বিরল দর্শন; কোকিল গোত্রের পাখি। কালেভদ্রে বসন্তকালে সিলেটের চা বাগানে দেখা মেলে (দেখা যাওয়ার রেকর্ড অবশ্য খুব বেশি নেই)। এ সময় চা বাগান হয়ে হিমালয় কিংবা মিয়ানমার যাতায়াত করে। মূলত ওরা মিশ্র চিরসবুজ বনের বাসিন্দা। এ ছাড়া খোলা বনভূমি অথবা ফলের বাগানে বিচরণ করে। পারতপক্ষে ভূমি স্পর্শ করে না। বিচরণ করে একাকী। স্বভাবে লাজুক। গাছের পাতা কিংবা ঝোঁপের আড়ালে লুকিয়ে থাকতে পছন্দ করে। সহসা কারো নজরে না পড়লেও কণ্ঠস্বর কানে আসে। সুরে মাদকতা রয়েছে। প্রজনন মুহূর্তে পুরুষ পাখি ডাকে ‘উউপ..উউপ’ সুরে। স্ত্রী ডাকে ‘কুই-কুই কুই কুই কুই’ সুরে। প্রজননক্ষণ ঊষা কিংবা গোধূলীলগ্ন।

প্রজাতিটির বৈশ্বিক বিস্তৃতি ভারত, নেপাল, পাকিস্তান, ভুটান, মিয়ানমার, চীন পর্যন্ত। তবে অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনে শীতে দেখা যায়। বিশ্বে ভালো অবস্থানে রয়েছে, ফলে আইইউসিএন প্রজাতিটিকে বিপদমুক্ত হিসেবে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে প্রজাতিটি সংরক্ষিত।

পাখির বাংলা নাম: ‘উদয়ী পাপিয়া’, ইংরেজি নাম: ‘ওরিয়েন্টাল কুক্কু’ (Oriental Cuckoo), বৈজ্ঞানিক নাম: Cuculus saturatus। এরা ‘হিমালয়ের কোকিল’ নামেও পরিচিত।

প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ৩০-৩১ সেন্টিমিটার। ওজন ৯০ গ্রাম। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারা ভিন্ন। পুরুষ পাখির মাথা ও পিঠ ধূসর-বাদামি ডোরা। লেজ কালচে ধূসর, অগ্রভাগ সাদা। গলা থেকে বুকের উপরিভাগ ধূসর ডোরা। নিচের দিকে পীতাভ-সাদার ওপর কালো ডোরা। স্ত্রী পাখির মাথা ও পিঠ লালচে-বাদামির ওপর কালচে ডোরা। দেহতলে পীতাভ-সাদার ওপর কালচে বাদামি ডোরা। লেজে লালচে বাদামির ওপর কালচে ডোরা, লেজের নিচে সাদা খাঁজকাটা। উভয়ের চোখের বলয় হলুদ। চোখের মণি কমলা-লাল। ঠোঁট শিঙ সবুজ। পা হলুদ।

প্রধান খাবার: লোমশ শুঁয়োপোকা ও অন্যান্য কীটপতঙ্গ।

প্রজনন মৌসুম মে থেকে জুন। নিজেরা বাসা বাঁধতে জানে না বিধায় ডিম পাড়ে হরবোলা ও চুটকি পাখির বাসায়। প্রাকৃতিকভাবে ডিমের রং পালক মাতার ডিমের সঙ্গে মিলিয়ে যায়। ডিমের সংখ্যা ১-২টি। ডিম ফোটার দিনক্ষণ নির্ভর করে পালক মাতার ডিমের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে। ধাত্রী মাতার আশ্রয়েই শাবক লালিত হয়।