হাওর বার্তা ডেস্কঃ জঙ্গলে শিকার করে পাওয়া ইঁদুর, বাদুড় বা কোনও পাখির মাংস আর ভিক্ষা করে পাওয়া চালের ভাত। জীবনধারণের জন্য মূলত এসব খাবারের উপরেই নির্ভর করতে হয় পশ্চিমবঙ্গের খয়রাশোলের রসা গ্রামের ‘যাযাবর’ বেদ সম্প্রদায়ের পাঁচ হতদরিদ্র পরিবারকে।
অপুষ্টি, অভাবের দোসর ছিল যক্ষ্মাও। ভারত সরকারের তথ্য অনুযায়ী, যক্ষ্মায় মৃত্যুও হয়েছিল ওই পরিবারগুলোর এক সদস্যের। ভুগছিলেন আরও এক জন। পাঁচ মাস আগে সংবাদমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশের পরে কিছুটা তৎপর হয় প্রশাসন।
ওই পরিবারের সদস্যরা জানান, অভাব এখনও রয়েছে। শিকার ও ভিক্ষাবৃত্তি এখনও তাদের ক্ষুধা মেটানোর প্রধান উপায়। তবে কিছুটা হলেও পরিবারগুলোর পাশে থাকার চেষ্টা করেছে প্রশাসন। পূজার আগেই পরিবার প্রতি ৩০ কেজি করে গম দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের তরফে মিলেছে কিছু টাকা, কম্বল, জামাকাপড়, ত্রিপল ও চাল।
ওই এলাকার নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্য বিদ্যুৎ ঘোষ বলেন, যাতে তারা দু’বেলা খেতে পায় সে দিকে প্রশাসন নজর রেখেছে। তবে মূল সমস্যা হল, আর্থ-সামাজিক ও জাতিগত সমীক্ষায় ওই পরিবারগুলোর নাম না থাকা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, কয়েক দশক আগে বেদ সম্প্রদায়ের অর্জুন বেদ সপরিবার খয়রাশোলের রসা গ্রামে এসে থাকতে শুরু করেন। বর্তমানে অর্জুনের চার ছেলেমেয়ে আলাদাভাবে পাশাপাশি থাকেন। তাদের বক্তব্য ছিল—বছর তিনেক আগে ভোটার কার্ড পেয়েছেন। রয়েছে রেশন কার্ডও। কিন্তু তাদের মতো হতদরিদ্র পরিবারের জন্য বরাদ্দ হয়েছে এপিএল কার্ড। তাই ২ টাকা দরে নয়, চাল কিনতে হয় প্রতি কেজি ১৩ টাকা দরে। এতো বেশি টাকা দিয়ে চাল কেনার ক্ষমতা নেই তাদের। নেই জবকার্ড, ঘর, আলো। তাই বাধ্য হয়েই ভিক্ষা আর বনে শিকার ভরসা।
সূত্র: আনন্দবাজার