দুই বিদেশি নাগরিক হত্যা পরবর্তী পরিস্থিতিতে সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কেন এবং কী উদ্দেশ্যে ইতালি ও জাপানের নাগরিককে হত্যা করা হয়েছে তা বের করার চেষ্টা করছে সরকার। আর যাতে এ ধরনের কোনো ঘটনা না ঘটে সেজন্য মন্ত্রী, এমপি ও দলের নেতাকর্মীসহ সবাইকে সতর্ক থাকতে বলেন তিনি।
সোমবার (১২ অক্টোবর) মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশ দেন।
বৈঠক শেষে একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়। সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৈঠক সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- বিভিন্ন দিক থেকে বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। বিভিন্ন জায়গায় এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা হতে পারে। কোথাও যাতে এ ধরনের কোনো ঘটনা না ঘটতে পারে সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে, সতর্ক থাকতে হবে।
দুই বিদেশি হত্যার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, কারা এ ধরনের ঘটনা ঘটালো, কী উদ্দেশ্যে ঘটালো তা খুঁজে বের করতে হবে। সেই চেষ্টা চলছে। আমরা ভালো অবস্থায় আছি, সরকার ভালোভাবেই চলছে। হঠাৎ করে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে না। এর পেছনে কী আছে সেটা বের করতে হবে। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে যে এ ধরনের ঘটনা ঘটে না তা নয়। এ ঘটনা সম্পর্কে বক্তব্য দিতে গিয়ে সবার ব্যাখ্যা যাতে একই রকম হয় সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে। একেক জন একেক রকম কথা বলবেন না।
এ সময় সরকারের কাজের গতি বাড়ানোর জন্যও মন্ত্রীদের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। মন্ত্রিসভার এ বৈঠকে স্থানীয় সরকার (সংশোধন) আইন-২০০৫ এর খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। এর ফলে আগামীতে স্থানীয় সরকাররের সব স্তরের নির্বাচন দলীয়ভাবে অনুষ্ঠিত হবে।
সূত্র জানায়, স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রসঙ্গে আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভারত ও ইংল্যান্ডসহ বিশ্বের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবেই হয়। দলীয়ভাবে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হয়। আমাদের দেশে এ নির্বাচন নিদলীয়ভাবে হলেও সব সময়ই দলীয় প্রভাব পড়ে।
সভায় স্থানীয় সরকার সংশোধন আইনের খসড়ার প্রস্তাব উপস্থাপনের পর বেসরকারি বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এটাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এটি একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। রাজনৈতিক দলগুলোর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ছিলো দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করা।
সিনিয়র মন্ত্রীরাও এর পক্ষে মত দেন। তবে বিষয়টি নিয়ে জাতীয় পার্টির মন্ত্রীরা (তিন জন) কোনো মন্তব্য বা আলোচনা করেননি বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে সম্পর্কে জাতীয় পার্টির মন্ত্রিসভার এক সদস্যের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমরা কোনো কথা বলিনি। কারণ বিষয়টি সম্পর্কে আমাদের দলের অবস্থান কী জানি না।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ছায়েদুল হক দলীয় মনোনয়ন জটিলতা বাড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দলের সংসদীয় বোর্ড আছে। ওই বোর্ড জাতীয় সংসদের প্রার্থী মনোনয়ন দেয়। ওই পদ্ধতি চালু করব। আমরা স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন স্তরের নির্বাচনগুলোর ক্ষেত্রেও মনোনয়নের জন্য বোর্ড গঠন করে দেব। দলের গঠনতন্ত্র সংশোধন করে এ পদ্ধতি সংযোজন করা হবে। জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে প্রার্থী মনোয়নের জন্য বোর্ড থাকবে। যারা বোর্ডের সিদ্ধান্ত মানবে না তাদের বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।