ঢাকা ০৩:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হিজল-তমালের বনে রাখা আছে সেই পাখির স্মৃতি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:৩৩:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৮
  • ৩৩১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সোনালি চোখের বিরল পাখি ‘লম্বাপা-তিসাবাজ’। প্রায় এক দশক আগে এ পাখিটিকে বাইক্কা বিলে দেখা গেলেও এখন আর দেখা যায় না। বিরল হয়ে পড়েছে তারা। হিজল-তমালের বনে রাখা আছে সেই পাখির স্মৃতি। সেই স্থানে বারবার গিয়ে সেই পাখিকে আর দেখা যায় না, স্মরণে ভেসে আসে তার স্মৃতি। পাখিটির নামই বলে দেয়- তার শারীরিক বর্ণনার টুকরো অংশ। ‘লম্বাপা-তিসাবাজ’ অর্থাৎ লম্বা পায়ের অধিকারী সে। যদিও বাজ পাখিরা দারুণ শিকারে পাখি। লম্বা পা হওয়াতে শিকারে অতিরিক্ত সুবিধাভোগ করে থাকে সে। এর ইংরেজি নাম Long-legged Buzzard এবং বৈজ্ঞানিক নাম Buteo rufinus

এমনিতে নিঃসঙ্গ স্বভাবের শিকারী পাখি ‘লম্বাপা-তিসাবাজ’। প্রজনন মৌসুমে সঙ্গীকে আকৃষ্ট করতে পরিস্কারভাবে বিড়ালের মতো: ‘মিইইই-ইউ’ স্বরে ডাকে। এরা আমাদের দেশের সুলভ আবাসিক পাখি হলেও এদের কম দেখা মেলে। যাযাবর হিসেবে এদের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে।

বিলাশাকৃতি বা উঁচু গাছের অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এ জাতীয় পাখিদের প্রজনন। আমাদের প্রকৃতির চারপাশ থেকে যেভাবে প্রাচীন, বিশালাকৃতি এবং দীর্ঘদেহী বৃক্ষগুলোকে ধ্বংস করা হচ্ছে এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে আমাদের দেশের মূল্যবান জীববৈচিত্র্যের উপর।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এবং বন্যপ্রাণী গবেষক ড. মনিরুল এইচ খান বাংলানিউজকে বলেন, এরা মোটামুটি অবস্থানে আছে; কম দেখা মেলে। তবে এতোটা কমন এরা কখনোই ছিল না। আবার খুব যে রেয়ার (অতি বিরল) সেটাও বলা যাবে না।

তিনি আরো বলেন, লম্বাপা-তিসাবাজ আকারে চিলের মতো। প্রায় ৬১ সেন্টিমিটার। তাদের দেহে কালচে বাদামি আভা রয়েছে। ঘাড়, গলা আর মাথায় হলুদ রঙের ছাপ। লালচে-বাদামি রঙ রয়েছে পেট এবং লেজে। অপরিপূর্ণ বয়ষ্ক পাখিদের দেহ অল্প কালচে রঙের ছাপ রয়েছে।

এরা পাহাড়ি এলাকা কিংবা জলাভূমি আশেপাশে বসবাস করে থাকে। পাহাড়ে এরা দুর্বল পাখি, পাখির ডিম, বাচ্চা প্রভৃতি খায়। এছাড়াও ইঁদুর জাতীয় কোনো ছোট সরীসৃপ দেখলে ছোঁ মেরে ধরে খায়। মাছ-ব্যাঙও ধরে খেয়ে থাকে বলে জানান ড. মনিরুল এইচ খান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

হিজল-তমালের বনে রাখা আছে সেই পাখির স্মৃতি

আপডেট টাইম : ০৪:৩৩:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সোনালি চোখের বিরল পাখি ‘লম্বাপা-তিসাবাজ’। প্রায় এক দশক আগে এ পাখিটিকে বাইক্কা বিলে দেখা গেলেও এখন আর দেখা যায় না। বিরল হয়ে পড়েছে তারা। হিজল-তমালের বনে রাখা আছে সেই পাখির স্মৃতি। সেই স্থানে বারবার গিয়ে সেই পাখিকে আর দেখা যায় না, স্মরণে ভেসে আসে তার স্মৃতি। পাখিটির নামই বলে দেয়- তার শারীরিক বর্ণনার টুকরো অংশ। ‘লম্বাপা-তিসাবাজ’ অর্থাৎ লম্বা পায়ের অধিকারী সে। যদিও বাজ পাখিরা দারুণ শিকারে পাখি। লম্বা পা হওয়াতে শিকারে অতিরিক্ত সুবিধাভোগ করে থাকে সে। এর ইংরেজি নাম Long-legged Buzzard এবং বৈজ্ঞানিক নাম Buteo rufinus

এমনিতে নিঃসঙ্গ স্বভাবের শিকারী পাখি ‘লম্বাপা-তিসাবাজ’। প্রজনন মৌসুমে সঙ্গীকে আকৃষ্ট করতে পরিস্কারভাবে বিড়ালের মতো: ‘মিইইই-ইউ’ স্বরে ডাকে। এরা আমাদের দেশের সুলভ আবাসিক পাখি হলেও এদের কম দেখা মেলে। যাযাবর হিসেবে এদের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে।

বিলাশাকৃতি বা উঁচু গাছের অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এ জাতীয় পাখিদের প্রজনন। আমাদের প্রকৃতির চারপাশ থেকে যেভাবে প্রাচীন, বিশালাকৃতি এবং দীর্ঘদেহী বৃক্ষগুলোকে ধ্বংস করা হচ্ছে এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে আমাদের দেশের মূল্যবান জীববৈচিত্র্যের উপর।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এবং বন্যপ্রাণী গবেষক ড. মনিরুল এইচ খান বাংলানিউজকে বলেন, এরা মোটামুটি অবস্থানে আছে; কম দেখা মেলে। তবে এতোটা কমন এরা কখনোই ছিল না। আবার খুব যে রেয়ার (অতি বিরল) সেটাও বলা যাবে না।

তিনি আরো বলেন, লম্বাপা-তিসাবাজ আকারে চিলের মতো। প্রায় ৬১ সেন্টিমিটার। তাদের দেহে কালচে বাদামি আভা রয়েছে। ঘাড়, গলা আর মাথায় হলুদ রঙের ছাপ। লালচে-বাদামি রঙ রয়েছে পেট এবং লেজে। অপরিপূর্ণ বয়ষ্ক পাখিদের দেহ অল্প কালচে রঙের ছাপ রয়েছে।

এরা পাহাড়ি এলাকা কিংবা জলাভূমি আশেপাশে বসবাস করে থাকে। পাহাড়ে এরা দুর্বল পাখি, পাখির ডিম, বাচ্চা প্রভৃতি খায়। এছাড়াও ইঁদুর জাতীয় কোনো ছোট সরীসৃপ দেখলে ছোঁ মেরে ধরে খায়। মাছ-ব্যাঙও ধরে খেয়ে থাকে বলে জানান ড. মনিরুল এইচ খান।