ঢাকা ০৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুপারির খোল দিয়ে পরিবেশবান্ধব বাসন তৈরি করছেন ইমরান

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৪৮:৩৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ নভেম্বর ২০১৮
  • ৪৮৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ছোটবেলায় সুপারির খোল দিয়ে আমরা গাড়ি বানাতাম। সেই গাড়িতে একজন বসতাম, বাকিরা টেনে নিয়ে যেত অনেক দূর। এভাবেই পালাক্রমে একজনের পর আরেকজন গাড়িতে চড়ার সাধ মেটাতাম। তবে এবার সুপারির খোল দিয়ে গাড়ি নয়, পরিবেশবান্ধব বাসন তৈরি করছেন মো. ইমরান হোসেন।

মো. ইমরান হোসেনের জন্ম টাঙ্গাইল জেলায়। বাবার সরকারি চাকরির সুবাদে খুলনায় বসবাস। এরপরে ঢাকায় স্নাতক ও কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতকোত্তর শেষ করেন। পড়াশোনা শেষে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নয় বছর চাকরি করেন।

কিন্তু একসময় চাকরি না করে উদ্যোক্তা হওয়ার চিন্তা করেন। কিভাবে এমন উদ্যোগ নিতে আগ্রহী হলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘খুলনা থাকার কারণে সেখানে ব্যাপক সুপারির চাষ লক্ষ্য করি। তা দেখে সুপারি গাছের খোল কোনো কাজে লাগানো যায় কিনা- তা ভাবছিলাম। পরে একই জিনিস ২০১৬ সালে ভারতের তামিলনাড়ুতে দেখতে পাই। তামিলনাড়ুতে সুপারির খোলের প্রোডাক্ট দেখে আমার কাছে ভালো লাগে।’

jagonewsপরে দেশে এসে সুপারির জন্য বিখ্যাত পিরোজপুর ও বাগেরহাটে খোঁজ নিতে থাকেন। সেখান থেকে সুপারির খোল সংগ্রহ করতে থাকেন। ২০১৭ সালে তামিলনাড়ু থেকেই বাসন তৈরির মেশিন কিনে আনেন। এনে একই বছর বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার ভাগা নামক গ্রামে বাসন তৈরির কারখানা স্থাপন করেন।

শুরুটা কিভাবে করলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি প্রোডাক্ট নিয়ে গুগল করতে থাকলাম। তারপর মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে লাগলাম। কাঁচামাল আছে কিনা এবং মার্কেট আছে কিনা দেখলাম। অনেকের সাথে কথা বলে তারপর শুরু করলাম।’

কোনো প্রতিবন্ধকতা এসেছে কিনা? জানতে চাইলে ইমরান বলেন, ‘প্রতিবন্ধকতার শেষ নেই। আমার টাকা ছিল না প্রোডাকশন করার। কাছের এক বড় ভাইকে জানালাম বিষয়টা। তিনি টাকা দিতে রাজি হলেন বিনিয়োগকারী হিসেবে।’

jagonewsএভাবে অনেক ধৈর্য নিয়ে কাজ চালিয়ে যেতে থাকলেন। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন রকমের তৈজসপত্র তৈরি করছেন। তার তৈরি বাসন-কোসন ঢাকার কয়েকটি কোম্পানিসহ জাপানেও রফতানি হচ্ছে। সুপারির খোলের তৈরি ট্রে, প্লেট, বাটি বিক্রি করছেন তিনি। তার সঙ্গে আরও ৪-৫ জন কাজ করছে। পার্ট টাইম ৪-৫ কাজ করে। তারা কারখানায় কাজ করছেন। আর ইমরান ঢাকায় টিকাটুলির অভিসার সিনেমা হলের পাশে বিক্রয়কেন্দ্রে বসেন।

ইমরান বলেন, ‘ফ্যাক্টরি বড় করার কাজও শুরু করেছি। অনলাইন মার্কেটিং এবং পরিচিতদের মধ্যে মার্কেটিং করছি। আগামীতে অনেক দূর যেতে চাই। পরিবেশবান্ধব আরও কিছু প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করব। দেশে ও দেশের বাইরের মার্কেটে কাজ করতে চাই।’

নতুন যারা এ ব্যবসায় আসতে চান তাদের কী করা উচিত? এমন কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি বলবো, এই প্রোডাক্টের মার্কেট আছে। তবে ভালোভাবে জেনেশুনে যে কোন ব্যবসা শুরু করা উচিত।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

সুপারির খোল দিয়ে পরিবেশবান্ধব বাসন তৈরি করছেন ইমরান

আপডেট টাইম : ১১:৪৮:৩৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ নভেম্বর ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ছোটবেলায় সুপারির খোল দিয়ে আমরা গাড়ি বানাতাম। সেই গাড়িতে একজন বসতাম, বাকিরা টেনে নিয়ে যেত অনেক দূর। এভাবেই পালাক্রমে একজনের পর আরেকজন গাড়িতে চড়ার সাধ মেটাতাম। তবে এবার সুপারির খোল দিয়ে গাড়ি নয়, পরিবেশবান্ধব বাসন তৈরি করছেন মো. ইমরান হোসেন।

মো. ইমরান হোসেনের জন্ম টাঙ্গাইল জেলায়। বাবার সরকারি চাকরির সুবাদে খুলনায় বসবাস। এরপরে ঢাকায় স্নাতক ও কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতকোত্তর শেষ করেন। পড়াশোনা শেষে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নয় বছর চাকরি করেন।

কিন্তু একসময় চাকরি না করে উদ্যোক্তা হওয়ার চিন্তা করেন। কিভাবে এমন উদ্যোগ নিতে আগ্রহী হলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘খুলনা থাকার কারণে সেখানে ব্যাপক সুপারির চাষ লক্ষ্য করি। তা দেখে সুপারি গাছের খোল কোনো কাজে লাগানো যায় কিনা- তা ভাবছিলাম। পরে একই জিনিস ২০১৬ সালে ভারতের তামিলনাড়ুতে দেখতে পাই। তামিলনাড়ুতে সুপারির খোলের প্রোডাক্ট দেখে আমার কাছে ভালো লাগে।’

jagonewsপরে দেশে এসে সুপারির জন্য বিখ্যাত পিরোজপুর ও বাগেরহাটে খোঁজ নিতে থাকেন। সেখান থেকে সুপারির খোল সংগ্রহ করতে থাকেন। ২০১৭ সালে তামিলনাড়ু থেকেই বাসন তৈরির মেশিন কিনে আনেন। এনে একই বছর বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার ভাগা নামক গ্রামে বাসন তৈরির কারখানা স্থাপন করেন।

শুরুটা কিভাবে করলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি প্রোডাক্ট নিয়ে গুগল করতে থাকলাম। তারপর মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে লাগলাম। কাঁচামাল আছে কিনা এবং মার্কেট আছে কিনা দেখলাম। অনেকের সাথে কথা বলে তারপর শুরু করলাম।’

কোনো প্রতিবন্ধকতা এসেছে কিনা? জানতে চাইলে ইমরান বলেন, ‘প্রতিবন্ধকতার শেষ নেই। আমার টাকা ছিল না প্রোডাকশন করার। কাছের এক বড় ভাইকে জানালাম বিষয়টা। তিনি টাকা দিতে রাজি হলেন বিনিয়োগকারী হিসেবে।’

jagonewsএভাবে অনেক ধৈর্য নিয়ে কাজ চালিয়ে যেতে থাকলেন। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন রকমের তৈজসপত্র তৈরি করছেন। তার তৈরি বাসন-কোসন ঢাকার কয়েকটি কোম্পানিসহ জাপানেও রফতানি হচ্ছে। সুপারির খোলের তৈরি ট্রে, প্লেট, বাটি বিক্রি করছেন তিনি। তার সঙ্গে আরও ৪-৫ জন কাজ করছে। পার্ট টাইম ৪-৫ কাজ করে। তারা কারখানায় কাজ করছেন। আর ইমরান ঢাকায় টিকাটুলির অভিসার সিনেমা হলের পাশে বিক্রয়কেন্দ্রে বসেন।

ইমরান বলেন, ‘ফ্যাক্টরি বড় করার কাজও শুরু করেছি। অনলাইন মার্কেটিং এবং পরিচিতদের মধ্যে মার্কেটিং করছি। আগামীতে অনেক দূর যেতে চাই। পরিবেশবান্ধব আরও কিছু প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করব। দেশে ও দেশের বাইরের মার্কেটে কাজ করতে চাই।’

নতুন যারা এ ব্যবসায় আসতে চান তাদের কী করা উচিত? এমন কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি বলবো, এই প্রোডাক্টের মার্কেট আছে। তবে ভালোভাবে জেনেশুনে যে কোন ব্যবসা শুরু করা উচিত।