ঢাকা ০৩:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লাখো মানুষের উপস্থিতিতে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য নৌকা বাইচ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:১১:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ অক্টোবর ২০১৮
  • ৩৮৮ বার

dav

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গ্রামবাংলার ঐতিহ্য নৌকা বাইচ উপভোগ করতে শনিবার দুপুরের পর থেকে খুলনার রূপসা নদীর দুই পারে নেমেছিল মানুষের ঢল। বাইচ চলাকালে নদীর প্রায় ৪ কিলোমিটার লম্বা দুই তীরে, রূপসা সেতুর ওপরে ও নদীর মধ্যে ট্রলারে লোকারণ্য হয়ে যায়। দূর-দূরন্ত থেকে মানুষ বাইচ দেখতে আসে।

গ্রামীণফোনের সহযোগিতায় খুলনা নাগরিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নৌকা বাইচের আয়োজন করে। ২০০৭ সাল থেকে প্রতি বছর রূপসা নদীতে নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এ বছর ৩০টি নৌকা প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। বাইচ শুরুর আগেই বেলা দুইটা থেকে রূপসা সেতুসহ দুই নদীর তীর মানুষের সমাগম বাড়তে থাকে।

জায়গা সংকুলান না হওয়ায় কয়েকশ’ ইঞ্জিনচালিত ট্রলার, বড় বড় কার্গো এবং নদীর দুই পারের সরকারি-বেসরকারি ভবনের ছাদে লাখো মানুষ নৌকা বাইচ উপভোগ করে। নৌকা বাইচকে ঘিরে রূপসা সেতুর দুই পারে অঘোষিত মেলা বসে। বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী ও শিশুদের খেলনার পসরা সাজিয়ে বসে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।

khulnaএবার কয়রা, পাইকগাছা, তেরখাদা, কালিয়া, নড়াইল থেকে ১০টি বড় এবং ৯টি ছোট বাইচ দল অংশগ্রহণ করে। এছাড়া গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, ফরিদপুর থেকে ১১টি নৌকা নিয়ে একটি বিশেষ দল তৈরি করা হয়েছিল। বড় দলের প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে ১ লক্ষ টাকা জিতে নেয় খুলনার কয়রার ‘সুন্দরবন টাইগার’। দ্বিতীয় হয়ে ৬০ হাজার টাকা পায় খুলনার তেরখাদার ‘ভাই ভাই জলপরী’। তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে ৩০ হাজার টাকা পায় একই এলাকার ‘আল্লাহ ভরসা’।

ছোট গ্রুপে প্রথম হয়ে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার পায় খুলনার পাইকগাছার ‘ভাই ভাই দুরন্ত’। দ্বিতীয় বিজয়ী দল কয়রার ‘সোনার তরী’ পায় ৩০ হাজার টাকা। তৃতীয় স্থান অধিকারী পাইকগাছার ‘দুরন্ত’ পায় ২০ হাজার টাকা।

বিশেষ বাছারি দলের প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে ৫০ হাজার টাকা জিতে নেয় খুলনার সোনাডাঙ্গার ‘ফলিয়া এন্টারপ্রাইজ’। দ্বিতীয় হিসেবে ৩০ হাজার টাকা পায় গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার ‘সোনার তরী’। তৃতীয় পুরস্কার ২০ হাজার টাকা পায় একই এলাকার ‘মা-বাবার আশীর্বাদ’।

khulnaসকালে আয়োজনকে ঘিরে নগরীতে বর্ণাঢ্য র্যালির আয়োজন করা হয়। খুসিক মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক প্রধান অতিথি হিসেবে র্যালি উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতি ছিলেন খুলনার জেলা প্রশাসক মো. হেলাল হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিজান, পুলিশ কমিশনার সর্দার রাফিকুল ইসলাম, পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ।

এসময় উপস্থিত ছিলেন গ্রামীণফোনের খুলনা সার্কেল বিজনেস হেড মো. আওলাদ হোসেন, হেড অব ব্র্যান্ড অ্যান্ড ডিজিটাল মার্কেটিং নাফিস আনোয়ার চৌধুরী, খুলনা সার্কেল মার্কেটিং হেড আবুল হাসনাত, খুলনা রিজিওনাল হেড আহসান হাবিব, নগর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সভাপতি মোল্লা মারুফ রশীদ, সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুজ্জামান রহিম, প্রধান উপদেষ্টা শেখ আশরাফ-উজ-জামান।

প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন বিল্লাল হোসেন খান, ডা. রেজাউল করিম, নিজাম উর রহমান লালু, মো. মোতালেব হোসেন মিয়া। সন্ধ্যায় রূপসা ফেরি ঘাট চত্ত্বরে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। সবশেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

লাখো মানুষের উপস্থিতিতে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য নৌকা বাইচ

আপডেট টাইম : ০৫:১১:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ অক্টোবর ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গ্রামবাংলার ঐতিহ্য নৌকা বাইচ উপভোগ করতে শনিবার দুপুরের পর থেকে খুলনার রূপসা নদীর দুই পারে নেমেছিল মানুষের ঢল। বাইচ চলাকালে নদীর প্রায় ৪ কিলোমিটার লম্বা দুই তীরে, রূপসা সেতুর ওপরে ও নদীর মধ্যে ট্রলারে লোকারণ্য হয়ে যায়। দূর-দূরন্ত থেকে মানুষ বাইচ দেখতে আসে।

গ্রামীণফোনের সহযোগিতায় খুলনা নাগরিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নৌকা বাইচের আয়োজন করে। ২০০৭ সাল থেকে প্রতি বছর রূপসা নদীতে নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এ বছর ৩০টি নৌকা প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। বাইচ শুরুর আগেই বেলা দুইটা থেকে রূপসা সেতুসহ দুই নদীর তীর মানুষের সমাগম বাড়তে থাকে।

জায়গা সংকুলান না হওয়ায় কয়েকশ’ ইঞ্জিনচালিত ট্রলার, বড় বড় কার্গো এবং নদীর দুই পারের সরকারি-বেসরকারি ভবনের ছাদে লাখো মানুষ নৌকা বাইচ উপভোগ করে। নৌকা বাইচকে ঘিরে রূপসা সেতুর দুই পারে অঘোষিত মেলা বসে। বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী ও শিশুদের খেলনার পসরা সাজিয়ে বসে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।

khulnaএবার কয়রা, পাইকগাছা, তেরখাদা, কালিয়া, নড়াইল থেকে ১০টি বড় এবং ৯টি ছোট বাইচ দল অংশগ্রহণ করে। এছাড়া গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, ফরিদপুর থেকে ১১টি নৌকা নিয়ে একটি বিশেষ দল তৈরি করা হয়েছিল। বড় দলের প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে ১ লক্ষ টাকা জিতে নেয় খুলনার কয়রার ‘সুন্দরবন টাইগার’। দ্বিতীয় হয়ে ৬০ হাজার টাকা পায় খুলনার তেরখাদার ‘ভাই ভাই জলপরী’। তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে ৩০ হাজার টাকা পায় একই এলাকার ‘আল্লাহ ভরসা’।

ছোট গ্রুপে প্রথম হয়ে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার পায় খুলনার পাইকগাছার ‘ভাই ভাই দুরন্ত’। দ্বিতীয় বিজয়ী দল কয়রার ‘সোনার তরী’ পায় ৩০ হাজার টাকা। তৃতীয় স্থান অধিকারী পাইকগাছার ‘দুরন্ত’ পায় ২০ হাজার টাকা।

বিশেষ বাছারি দলের প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে ৫০ হাজার টাকা জিতে নেয় খুলনার সোনাডাঙ্গার ‘ফলিয়া এন্টারপ্রাইজ’। দ্বিতীয় হিসেবে ৩০ হাজার টাকা পায় গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার ‘সোনার তরী’। তৃতীয় পুরস্কার ২০ হাজার টাকা পায় একই এলাকার ‘মা-বাবার আশীর্বাদ’।

khulnaসকালে আয়োজনকে ঘিরে নগরীতে বর্ণাঢ্য র্যালির আয়োজন করা হয়। খুসিক মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক প্রধান অতিথি হিসেবে র্যালি উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতি ছিলেন খুলনার জেলা প্রশাসক মো. হেলাল হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিজান, পুলিশ কমিশনার সর্দার রাফিকুল ইসলাম, পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ।

এসময় উপস্থিত ছিলেন গ্রামীণফোনের খুলনা সার্কেল বিজনেস হেড মো. আওলাদ হোসেন, হেড অব ব্র্যান্ড অ্যান্ড ডিজিটাল মার্কেটিং নাফিস আনোয়ার চৌধুরী, খুলনা সার্কেল মার্কেটিং হেড আবুল হাসনাত, খুলনা রিজিওনাল হেড আহসান হাবিব, নগর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সভাপতি মোল্লা মারুফ রশীদ, সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুজ্জামান রহিম, প্রধান উপদেষ্টা শেখ আশরাফ-উজ-জামান।

প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন বিল্লাল হোসেন খান, ডা. রেজাউল করিম, নিজাম উর রহমান লালু, মো. মোতালেব হোসেন মিয়া। সন্ধ্যায় রূপসা ফেরি ঘাট চত্ত্বরে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। সবশেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।