ঢাকা ০৬:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উপকূল থেকে বিলুপ্তির পথে জাতীয় পাখি দোয়েল

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:৪১:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮
  • ৬০৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জাতীয় পাখি দোয়েল। বেশিরভাগই একাকী এর বিচরণ। এটি অত্যন্ত অস্থির পাখি। কোথাও একদণ্ড বসে থাকার সময় নেই, সারাদিন উড়াউড়ি। এক সময় সমুদ্র উপকূলবর্তী পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার গ্রামগঞ্জের বন-জঙ্গলে গাছের ডালে ডালে অবাধ বিচরণ ছিল। চিরচেনা এ পাখি এখন আর দেখা যায় না। কানে বাজে না এর সুমিষ্ট সুর। ক্রমশ পরিবেশ দূষণ, নির্বিচারে গাছ কাটা, জমিতে অধিক পরিমাণে কীটনাশক ব্যবহার, পাখির বিচরণ ক্ষেত্র আর খাদ্য সংকটসহ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দোয়েল পাখি আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে যেতে বসেছে।

জানা গেছে, বাংলাদেশের পাখির তালিকায় মোট ৭৪৪টি পাখি অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। এ সমস্ত পাখির মধ্যে গত দুই শতকে বাংলাদেশে ছিল (কিন্তু এখন নেই) এবং বর্তমানে আছে এমন পাখির সংখ্যা মোট ৬৫০টি। এর মধ্যে ৩০টি বর্তমানে বিলুপ্ত। সাম্প্রতিক সময়ে অবশিষ্ট ৬২০টি প্রজাতির পাখির দেখা মিলেছে বলে অনলাইন উইকিপিডিয়াতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে পাখি গবেষকরা।

পরিবেশবীদরা জানান, পাখি কমে যাওয়ার কারণ শুধুই প্রাকৃতিক বিপর্যয় নয়, এখানে মানবসৃষ্ট অনেক কারণ রয়েছে। এর মধ্যে ফলজ গাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে, তাই সমস্যায় পড়েছে পাখিরা। পাখির বাচ্চারা বিভিন্ন ধরনের ছোট ছোট পোকামাকড় খায়। পোকামাকড়ের সংখ্যা কমে যাওয়ায় তাদের জীবনধারণও সঙ্কটে পড়ে অনেক পাখি অন্যত্র চলে গেছে।

জীববিজ্ঞানবীদ শিক্ষক মো. মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, গত এক দশক আগেও এ অঞ্চলে দোয়েল পাখি বুক ফুলিয়ে মিষ্টি সুরে ডেকে বেড়াত। আর সব সময় মানুষের সান্নিধ্যে থাকতে দেখা যেত এ পাখিকে। আবার মাটিতে লাফিয়ে লাফিয়ে খাদ্য সংগ্রহ করতো। কিন্তু আজ কালের পরিক্রমায় প্রায় বিলুপ্তির পথে। যেন চোখের আড়াল হয়ে গেছে।

জাতীয় পুরুস্কারপ্রাপ্ত পাখীপ্রেমী মো.হান্নান খান বলেন, দোয়েল আমাদের জাতীয় পাখি। এখন নাই বললেই চলে।

এর কারণ হিসাবে তিনি বলেন, শিল্পায়ন, নগরায়ন ও যানবাহনের শব্দদূষণে প্রতিনিয়ত পাখিরা অন্যত্র চলে যাচ্ছে। এছাড়া নির্বিচারে বৃক্ষনিধনের মাধ্যমে পাখিদের আবাসস্থল ধ্বংস হচ্ছে। কৃষকরা অধিক ফসল পাওয়ার আশায় জমিতে ক্ষতিকারক কীটনাশক প্রয়োগে খাদ্য সংকটও দেখা দিয়েছে। আবার পাখি শিকারীরা বেশ পাখি মেরে ফেলেছে। এর ফলে দিন দিন এ অঞ্চল থেকে চিরচেনা অনেক প্রজাতির পাখিই প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

উপকূল থেকে বিলুপ্তির পথে জাতীয় পাখি দোয়েল

আপডেট টাইম : ০৫:৪১:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জাতীয় পাখি দোয়েল। বেশিরভাগই একাকী এর বিচরণ। এটি অত্যন্ত অস্থির পাখি। কোথাও একদণ্ড বসে থাকার সময় নেই, সারাদিন উড়াউড়ি। এক সময় সমুদ্র উপকূলবর্তী পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার গ্রামগঞ্জের বন-জঙ্গলে গাছের ডালে ডালে অবাধ বিচরণ ছিল। চিরচেনা এ পাখি এখন আর দেখা যায় না। কানে বাজে না এর সুমিষ্ট সুর। ক্রমশ পরিবেশ দূষণ, নির্বিচারে গাছ কাটা, জমিতে অধিক পরিমাণে কীটনাশক ব্যবহার, পাখির বিচরণ ক্ষেত্র আর খাদ্য সংকটসহ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দোয়েল পাখি আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে যেতে বসেছে।

জানা গেছে, বাংলাদেশের পাখির তালিকায় মোট ৭৪৪টি পাখি অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। এ সমস্ত পাখির মধ্যে গত দুই শতকে বাংলাদেশে ছিল (কিন্তু এখন নেই) এবং বর্তমানে আছে এমন পাখির সংখ্যা মোট ৬৫০টি। এর মধ্যে ৩০টি বর্তমানে বিলুপ্ত। সাম্প্রতিক সময়ে অবশিষ্ট ৬২০টি প্রজাতির পাখির দেখা মিলেছে বলে অনলাইন উইকিপিডিয়াতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে পাখি গবেষকরা।

পরিবেশবীদরা জানান, পাখি কমে যাওয়ার কারণ শুধুই প্রাকৃতিক বিপর্যয় নয়, এখানে মানবসৃষ্ট অনেক কারণ রয়েছে। এর মধ্যে ফলজ গাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে, তাই সমস্যায় পড়েছে পাখিরা। পাখির বাচ্চারা বিভিন্ন ধরনের ছোট ছোট পোকামাকড় খায়। পোকামাকড়ের সংখ্যা কমে যাওয়ায় তাদের জীবনধারণও সঙ্কটে পড়ে অনেক পাখি অন্যত্র চলে গেছে।

জীববিজ্ঞানবীদ শিক্ষক মো. মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, গত এক দশক আগেও এ অঞ্চলে দোয়েল পাখি বুক ফুলিয়ে মিষ্টি সুরে ডেকে বেড়াত। আর সব সময় মানুষের সান্নিধ্যে থাকতে দেখা যেত এ পাখিকে। আবার মাটিতে লাফিয়ে লাফিয়ে খাদ্য সংগ্রহ করতো। কিন্তু আজ কালের পরিক্রমায় প্রায় বিলুপ্তির পথে। যেন চোখের আড়াল হয়ে গেছে।

জাতীয় পুরুস্কারপ্রাপ্ত পাখীপ্রেমী মো.হান্নান খান বলেন, দোয়েল আমাদের জাতীয় পাখি। এখন নাই বললেই চলে।

এর কারণ হিসাবে তিনি বলেন, শিল্পায়ন, নগরায়ন ও যানবাহনের শব্দদূষণে প্রতিনিয়ত পাখিরা অন্যত্র চলে যাচ্ছে। এছাড়া নির্বিচারে বৃক্ষনিধনের মাধ্যমে পাখিদের আবাসস্থল ধ্বংস হচ্ছে। কৃষকরা অধিক ফসল পাওয়ার আশায় জমিতে ক্ষতিকারক কীটনাশক প্রয়োগে খাদ্য সংকটও দেখা দিয়েছে। আবার পাখি শিকারীরা বেশ পাখি মেরে ফেলেছে। এর ফলে দিন দিন এ অঞ্চল থেকে চিরচেনা অনেক প্রজাতির পাখিই প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে।