হাওর বার্তা ডেস্কঃ জাতিসংঘের দিকে ইঙ্গিত করে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং বলেছেন, তার দেশের ওপর হস্তক্ষেপের অধিকার কোনো দেশ, সংস্থা বা গোষ্ঠীর নেই।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সেনাবাহিনীর সীমাহীন দমন-পীড়নকে জাতিসংঘ ‘গণহত্যা’ হিসেবে অভিহিত করা এবং নেদারল্যান্ডসের হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে এ ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত শুরু হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সেনাপ্রধান এ মন্তব্য করলেন।
রোববার সেনাপ্রধান এ মন্তব্য করেন বলে সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত পত্রিকা ‘মিয়াওদি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের ওপর অত্যাচারের পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘ একটি সত্যানুসন্ধানী কমিশন তৈরি করে। ওই কমিটি তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে। এ কারণে হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।
মিয়ানমারের রাজনীতি থেকে সেনাবাহিনীর সরে যাওয়া উচিত বলেও জাতিসংঘের ওই কমিটির প্রতিবেদনে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জেনারেল মিন অং হ্লাইং এর তীব্র সমালোচনা করেন।
জাতিসংঘের পরামর্শের সমালোচনা করে সেনাপ্রধান বলেন, ‘মিয়ানমারে গণতন্ত্র বিকাশের পথ তৈরি করতে সেনাবাহিনী সশস্ত্র সংঘাত থামিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার কাজ করে যাবে।’
‘অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি করতে পারে’, বলেন সেনাপ্রধান।
জাতিসংঘের ৪৪৪ পৃ্ষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের ওপর হওয়া বর্বরতার বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। সেনা বর্বরতার হাত থেকে বাঁচতে রাখাইন থেকে যারা পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছেন, তাদের বর্ণনায় ওই ভয়াবহতার আঁচ পাওয়া গেছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
গত বছরের আগস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইনে অভিযান শুরু করার পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
মিয়ানমার সেনাবাহিনী বরাবরই তাদের বিরুদ্ধে আসা এসব বর্বরতার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তারা বলছে, রাখাইন থেকে ‘রোহিঙ্গা জঙ্গিদের’ হটাতে ওই অভিযান চালিয়েছিল।