হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বৃহস্পতিবার (২৬ জুলাই) থেকে বিএনপির মনোনিত প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় নামার কথা ছিল জামায়াতের। এমনকি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারাও জামায়াতের প্রচারণার বিষয়টি একাধিকবার সাংবাদিকদের জানান।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) নগরীর শালবাগান এলাকা থেকে শুরু করে শাহমুখদুম থানা এলাকা পর্যন্ত প্রচারণা চালান বিএনপির মেয়র প্রার্থী। কিন্তু তার প্রচারণাতে দেখা মেলেনি জামায়াতের কোন নেতা-কর্মীকে।
সর্বশেষ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সাংবাদিকদের জানান, ২৬ জুলাই থেকে জামায়াত আনুষ্ঠানিকভাবে ধানের শীষের পক্ষে প্রচারণায় নামবে। একই কথা জানান মহানগর বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান মিনুও।
নির্বাচনী প্রচারে অংশ না নেয়ার বিষয়ে জামায়াতের কোন নেতা কথা বলতে রাজি না হলেও এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি ও বুলবুলের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট তোফাজ্জল হোসেন তপু বলেন, আমি জানি না তারা (জামায়াত) কিভাবে কাজ করছে। এ বিষয়ে আমাকে জেনে জানাতে হবে।
বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্য সতর্ক অবস্থান গ্রহণ করেছে আওয়ামী লীগ। জরুরি এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ নেতারা তাদের প্রতিহত করারও ঘোষণা দেয়। বিশেষ করে ২০১৩-১৪ সালে রাজশাহীতে জামায়াত-বিএনপির যে তাণ্ডব, এটি মাথায় রেখে নির্বাচনের দিন সহিংসতা করতে পারে এমন আশঙ্কা করে আওয়ামী লীগ নেতারা।
জামায়াতের নির্বাচনী প্রচরণায় অংশ নেয় না নেয়ার বিষয়টি কেমনভাবে দেখছেন এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান রানা বলেন, ‘তাদের (জামায়াত) সম্পর্কে আমরা সচেতন। এরা প্রকাশ্য না নামলেও তারা নির্বাচনে সহিংসতা চালানোর ষড়যন্ত্র যে করছে না তা কোনভাবেই বলা যাবে না। প্রতিটি ওয়ার্ডে এমনকি কেন্দ্রগুলোতেও তারা যেন কোন প্রকার নৈরাজ্য করতে না পারে সে ব্যাপারে আমরা সজাগ থাকবো।
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে জামায়াত কি করল এটা আমাদের দেখার বিষয় না। বর্তমানে নৌকার জোয়ার শুরু হয়েছে, তা আগামি ৩০ তারিখে ভোটের মাধ্যমে প্রতিফলিত হবে।’
মহানগর আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার প্রকাশনা সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ লেমন বলেন, জামায়াত প্রচারে নামলেও তাদের যেখানে পাওয়া যাবে সেখানে প্রতিহত করা হবে। নৈরাজ্য সৃষ্টির কোন সুযোগ দেয়া হবে না।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য এসএম কামাল বলেন, জামায়াত-বিএনপি নির্বাচন সহিংসতা করে ভন্ডুল করার ষড়যন্ত্র করছে। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশপাশি দলীয় নেতাকর্মীকে সজাগ থাকার আহবান জানান তিনি।
এদিকে রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে রাজশাহীতে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরীক জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির মতপার্থক্য দেখা দেয়। জামায়াতের পক্ষ থেকে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন ভোটে নির্বাচন করার কথা জানানো হয়। যদি পরে এই শর্ত তুলে নেয় দলটি।
এছাড়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) নির্বাচন করার কথা জানানো হয় জামায়াতের পক্ষ থেকে। দলটির এমন বক্তব্যে বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। কারণ দীর্ঘদিন এই আসনটিতে গণসংযোগ করে আসছেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন। জামায়াতের এমন মন্তব্যে তার অনুসারীদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
এদিকে রাজনৈতিক নেতারা বলছেন, আশ্বাস দিয়েও শেষ পর্যন্ত বিএনপির কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে জামায়াত।