গরুর গোশত খাওয়ার অভিযোগে দিল্লির এক গ্রামে ৫০ বছর বয়সী এক মুসলমানকে পিটিয়ে হত্যা করেছে উগ্র জনতা। আক্রমণে তার ২২ বছর বয়সী ছেলের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
সোমবার রাতে এ ঘটনা ঘটে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে এনডিটিভি, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ডিএনএনসহ ভারতীয় গণমাধ্যম।
ঘাতকদের পরিচয় সম্পর্কে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো কোনো তথ্য না দিলেও ধারনা করা যায় যে উগ্র হিন্দুরাই এ বর্বরোচিত হত্যায় জড়িত।
পরিবারের জন্য গরুর গোশত কেনার অভিযোগ হিন্দু জঙ্গিরা মোহাম্মদ আখলাক এবং তার ছেলে দানিশকে বাড়ি থেকে বের করে এনে ইট দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে। আখলাক ঘটনাস্থলেই মারা যান। তার ছেলের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ঘটনাটি ঘটেছে রাজধানী দিল্লি থেকে মাত্র ৪৫ কিলোমিটার দূরে উত্তর প্রদেশের দাদরি গ্রামে।
আখলাক এবং তার ছেলেকে টেনেহিঁচড়ে নেয়ার সময় দুর্বৃত্তরা তাদের ঘর তছনছ করে এবং নারীদের ওপর হামলা চালায়।
‘আমার স্বামীর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তারা মাথা গুড়িয়ে দেয়া হয়। তারা পরিবারের লোকজনে মারধর করে.. আমার স্বামীর কোনো শত্রু ছিল না,’ বলছিলেন আখলাকের স্ত্রী।
পুলিশ না আসা পর্যন্ত তাদের মারধর করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আখলাকের মেয়ে সাজিদা আখলাক (১৮) বলেন, রাত ১০টার দিকে শতাধিক গ্রামবাসী এসে তাদের দরজা ভেঙে তারা বাবা ও ভাইকে টেনেহিঁচড়ে বের করে মারধর শুরু করে।
এর আগে পাশের একটি মন্দির থেকে ঘোষণা করা হয় যে আখলাকের পরিবার গরুর গোশত কিনেছে।
পুলিশ সেই মন্দিরের পুরোহিতকে আটক করলেও পরে ছেড়ে দিয়েছে।
সাজিদা বলেন, তাদের ফ্রিজে শুধু খাসির গোশত ছিল।
পুলিশ সেই গোশত নিয়ে গিয়ে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছে।
পেশায় কৃষক আখলাক তিন দশকের বেশি সময় ধরে এই গ্রামে বাস করছিলেন।
পুলিশ বলছে, গরুর গোশতের গুজব কিভাবে ছড়ালো তা তারা জানেন না।
এদিকে দুর্বৃত্তদের গ্রেফতারের পর উগ্র হিন্দুরা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে।