ঢাকা ০৭:৫৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৫০০ কোটি টাকার বিনিয়োগই জলে যাবে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:১১:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ জুন ২০১৮
  • ২৯২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সরকারের কর কাঠামোর আকষ্মিক পরিবর্তনের ফলে দেশের মোবাইল হ্যান্ডসেট সংযোজন শিল্পে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ অনিশ্চয়তায় পড়েছে। এর ফলে ঝুঁকিতে পড়েছে এখাতে দুই হাজার মানুষের কর্মসংস্থানও।

সম্প্রতি সরকার স্থানীয় পর্যায়ে মোবাইল হ্যান্ডসেট সংযোজনে ১৫ শতাংশ ভ্যাটের প্রস্তাব করেছে। এতে সম্প্রতি স্থানীয় পর্যায়ে গড়ে ওঠা এই খাতের বিনিয়োগকারীরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, এতে দেশে সংযোজন করা হ্যান্ডসেটের কর বেশি হয়ে গেছে। পক্ষান্তরে, প্রতিটি হ্যান্ডসেট আমদানিতে কর দিতে হবে এর চেয়ে কম। এর ফলে এ খাতে বিনিয়োগকারীরা বিপদে পড়েছেন। তারা বলছেন, সরকার যদি এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা না করে তাহলে তাদের কারখানা বন্ধ করে দিতে হবে। আর এতে করে অনিশ্চয়তায় পড়বে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ। খবর বার্তা ২৪’র।

গেল (২০১৭-১৮) অর্থ বছরে স্থানীয় পর্যায়ে মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদন ও মোবাইল যন্ত্রাংশ আমদানিতে সরকার বড় ধরনের শুল্ক ছাড় দেয়। সরকারের এই শুল্ক ছাড়ের নীতির কারণে দেশি-বিদেশি কয়েকটি কোম্পানি বড় ধরনের বিনিয়োগের উদ্যোগ নেয়। এরই মধ্যে স্যামসাং, সিম্ফনি, আইটেল ও উই সংযোজন কারখানা স্থাপন করেছে ফেলেছে। এসব কোম্পানি এরই মধ্যে কয়েকশত কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ফেলেছে। এছাড়াও ট্রানশন বাংলাদেশ লিমিটেডও এখাতে বড় ধরনের বিনিয়োগে যাচ্ছে।

বাংলাদেশে স্যামসাং মোবাইল হ্যান্ডসেটের উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ফেয়ার ইলেকট্রনিকসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুহুল আলম আল মাহবুব বলেন, মোবাইল হ্যান্ডসেটে বাংলাদেশ আমদানি নির্ভর একটি দেশ। বিগত অর্থ বছরে সরকারের বৈপ্লবিক সিদ্ধান্তের ফলে এদেশে এখাতে বিনিয়োগে উৎসাহী হন বহু উদ্যোক্তা। কিন্তু এক বছরের মাথায় হ্যান্ডসেট সংযোজন শিল্পে অতিমাত্রায় ভ্যাট আরোপ করায় সরকারের বিগত বছরের সিদ্ধান্তের সঙ্গে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

‘‘সরকার যদি কোনো শিল্পকে দাঁড় করাতে চায় তাহলে নীতির ধারাবাহিকতা রাখতে হয়। এক বছরের মাথায় সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আসলে তা কখনোই বিনিয়োগকারীদের আস্থায় নিতে সক্ষম হবে না। তাই অনতিবিলম্বে সরকারকে এই খাতে নেওয়া ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।”

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ বছরে আট হাজার কোটি টাকার মোবাইল হ্যান্ডসেট আমদানি করে থাকে।

এ প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, সরকারের নীতি ধারাবাহিকতা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে হাজার হাজার কোটি টাকার হ্যান্ডসেট আমদানি বন্ধ হবে, সেই সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে বিদেশেও হ্যান্ডসেট রপ্তানি করা যাবে। এতে দেশ যেমন স্বনির্ভর হবে, তেমনি রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক অর্থ আহরণ করাও সম্ভব হবে।

ট্রানশন বাংলাদেশ লিমিটেডের সিইও রেজওয়ানুল হক সরকারের নতুন শর্তের সমালোচনা করে এসআরওতে এমন সব যন্ত্রাংশের উৎপাদনের শর্ত দেওয়া হয়েছে যা বিশ্বের হাতেগোনা ২/৩টি প্রতিষ্ঠান উৎপাদন করে। দেশীয় প্রেক্ষাপটে এখনই এসব যন্ত্রাংশ স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদন সম্ভব নয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকার অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসলে মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদনের যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে তা আবার পুরোপুরি আমদানি নির্ভর শিল্পে রুপ নেবে। এতে দেশেরই ক্ষতি হবে। সংযোজন শিল্পকে প্রণোদনা দেওয়া না হলেতা অবৈধভাবে হ্যান্ডসেট নিয়ে আসাকে উৎসাহিত করবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

৫০০ কোটি টাকার বিনিয়োগই জলে যাবে

আপডেট টাইম : ০৫:১১:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ জুন ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সরকারের কর কাঠামোর আকষ্মিক পরিবর্তনের ফলে দেশের মোবাইল হ্যান্ডসেট সংযোজন শিল্পে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ অনিশ্চয়তায় পড়েছে। এর ফলে ঝুঁকিতে পড়েছে এখাতে দুই হাজার মানুষের কর্মসংস্থানও।

সম্প্রতি সরকার স্থানীয় পর্যায়ে মোবাইল হ্যান্ডসেট সংযোজনে ১৫ শতাংশ ভ্যাটের প্রস্তাব করেছে। এতে সম্প্রতি স্থানীয় পর্যায়ে গড়ে ওঠা এই খাতের বিনিয়োগকারীরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, এতে দেশে সংযোজন করা হ্যান্ডসেটের কর বেশি হয়ে গেছে। পক্ষান্তরে, প্রতিটি হ্যান্ডসেট আমদানিতে কর দিতে হবে এর চেয়ে কম। এর ফলে এ খাতে বিনিয়োগকারীরা বিপদে পড়েছেন। তারা বলছেন, সরকার যদি এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা না করে তাহলে তাদের কারখানা বন্ধ করে দিতে হবে। আর এতে করে অনিশ্চয়তায় পড়বে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ। খবর বার্তা ২৪’র।

গেল (২০১৭-১৮) অর্থ বছরে স্থানীয় পর্যায়ে মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদন ও মোবাইল যন্ত্রাংশ আমদানিতে সরকার বড় ধরনের শুল্ক ছাড় দেয়। সরকারের এই শুল্ক ছাড়ের নীতির কারণে দেশি-বিদেশি কয়েকটি কোম্পানি বড় ধরনের বিনিয়োগের উদ্যোগ নেয়। এরই মধ্যে স্যামসাং, সিম্ফনি, আইটেল ও উই সংযোজন কারখানা স্থাপন করেছে ফেলেছে। এসব কোম্পানি এরই মধ্যে কয়েকশত কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ফেলেছে। এছাড়াও ট্রানশন বাংলাদেশ লিমিটেডও এখাতে বড় ধরনের বিনিয়োগে যাচ্ছে।

বাংলাদেশে স্যামসাং মোবাইল হ্যান্ডসেটের উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ফেয়ার ইলেকট্রনিকসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুহুল আলম আল মাহবুব বলেন, মোবাইল হ্যান্ডসেটে বাংলাদেশ আমদানি নির্ভর একটি দেশ। বিগত অর্থ বছরে সরকারের বৈপ্লবিক সিদ্ধান্তের ফলে এদেশে এখাতে বিনিয়োগে উৎসাহী হন বহু উদ্যোক্তা। কিন্তু এক বছরের মাথায় হ্যান্ডসেট সংযোজন শিল্পে অতিমাত্রায় ভ্যাট আরোপ করায় সরকারের বিগত বছরের সিদ্ধান্তের সঙ্গে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

‘‘সরকার যদি কোনো শিল্পকে দাঁড় করাতে চায় তাহলে নীতির ধারাবাহিকতা রাখতে হয়। এক বছরের মাথায় সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আসলে তা কখনোই বিনিয়োগকারীদের আস্থায় নিতে সক্ষম হবে না। তাই অনতিবিলম্বে সরকারকে এই খাতে নেওয়া ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।”

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ বছরে আট হাজার কোটি টাকার মোবাইল হ্যান্ডসেট আমদানি করে থাকে।

এ প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, সরকারের নীতি ধারাবাহিকতা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে হাজার হাজার কোটি টাকার হ্যান্ডসেট আমদানি বন্ধ হবে, সেই সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে বিদেশেও হ্যান্ডসেট রপ্তানি করা যাবে। এতে দেশ যেমন স্বনির্ভর হবে, তেমনি রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক অর্থ আহরণ করাও সম্ভব হবে।

ট্রানশন বাংলাদেশ লিমিটেডের সিইও রেজওয়ানুল হক সরকারের নতুন শর্তের সমালোচনা করে এসআরওতে এমন সব যন্ত্রাংশের উৎপাদনের শর্ত দেওয়া হয়েছে যা বিশ্বের হাতেগোনা ২/৩টি প্রতিষ্ঠান উৎপাদন করে। দেশীয় প্রেক্ষাপটে এখনই এসব যন্ত্রাংশ স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদন সম্ভব নয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকার অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসলে মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদনের যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে তা আবার পুরোপুরি আমদানি নির্ভর শিল্পে রুপ নেবে। এতে দেশেরই ক্ষতি হবে। সংযোজন শিল্পকে প্রণোদনা দেওয়া না হলেতা অবৈধভাবে হ্যান্ডসেট নিয়ে আসাকে উৎসাহিত করবে।