হাওর বার্তা ডেস্কঃ ইতিকাফ তিন প্রকার-
(ক) ওয়াজিব ইতিকাফ: কোন কাজের উপর ইতিকাফ মান্নত করলে। সেই ইতিকাফ ওয়াজিব হয়। যেমন কেউ যদি বলে যে,আমার এই কাজটি হয়ে গেলে, আমি এতোদিন ইতিকাফ করবো। (খ) সুন্নত ইতিকাফ: রমজানের শেষ দশদিনের ইতিকাফকে সুন্নত বলা হয়। নবী কারিম (সা.) প্রতি বছর শেষ দশদিন ইতিকাফে বসতেন।
(গ) নফল ইতিকাফ: এই ইতিকাফের জন্য কোনদিন বা সময় নির্দিষ্ট নেই। যতক্ষণ বা যতদিন ইচ্ছা করা যাবে। এমনকি কেউ যদি সারাজীবনের ইতিকাফের নিয়ত করে তাহলেও তা জায়েজ হবে। পুরুষের জন্য ইতিকাফের সর্বোত্তম স্থান হল মক্কার মসজিদে হারাম। তারপর মসজিদে নববী।
তারপর বাইতুল মুকাদ্দাস। এরপর জামে মসজিদ ও মহল্লার মসজিদ। ইতিকাফ একটি মহান ইবাদত।
মদিনায় অবস্থান কালীন সময়ে নবী কারিম (সা.) প্রতিবছরই ইতিকাফ পালন করতেন। দাওয়াত, তরবিয়ত, শিক্ষা এবং জিহাদে ব্যস্ত থাকা সত্বেও রমজান মাসে তিনি ইতিকাফ ছাড়েননি। ইতিকাফ ইমানি তরবিয়তের একটি পাঠশালা এবং নবী কারিম (সা.) এর হেদায়েতি আলোর একটি প্রতীক। ইতিকাফ অবস্থায় বান্দা নিজেকে আল্লাহর ইবাদতের জন্য দুনিয়ার অন্যান্য সকল বিষয় থেকে নিজেকে আলাদা করে নেয়।
ইতিকাফ ইমান বৃদ্ধির একটি মূখ্য সুযোগ। সকলের উচিত এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজের ইমানি চেতনাকে শাণিত করে তোলা ও উন্নত পর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করা। পবিত্র কুরআনে ইতিকাফ সম্পর্কে বর্ণনা এসেছে, হজরত ইবরাহিম (আ.) ও হজরত ইসমাইল (আ.) এর কথা উল্লেখ করে এরশাদ হচ্ছে, এবং আমি ইবরাহিম ও ইসমাইলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী ও রুকু-সেজদা কারীদের জন্য পবিত্র করো’। (সুরা বাকারাহ,আয়াত:১২৫)
ইতিকাফ তো কুরআনে উল্লেখ আছে, তা এক ধরণের (আল্লাহর হুকুম বল্লেও চলে) এমনকি কোন মসজিদ যদি ইতিকাফ শূন্য থাকলে পুরো এলাকাবাসী গুনাহগার হবে।
হাদিস শরীফে আছে, ‘নবী কারিম (সা.) রমজানের শেষ দশ দিন ইতিকাফ করতেন’। (বুখারী শরীফ,২০২১;মুসলিম শরীফ,১১৭১) যে ব্যক্তি রমজানের (শেষ) দশদিন ইতিকাফ করবে, তার জন্য দুইটি হজ্ব এবং দুইটি ওমরার সমতুল্য সওয়াব হবে। (বায়হাকী শরীফ) অন্য একটি হাদিসে পাওয়া যায়। ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে এক দিন ইতিকাফ করবে, আল্লাহ তাআলা তার এবং জাহান্নামের মাঝে তিন খন্দক দূরত্ব সৃষ্টি করে দিবেন। অর্থাৎ আসমান ও জমিনের মাঝে যত দূরত্ব আছে তার চেয়েও বেশি দূরত্ব সৃষ্টি করে দিবেন। (শুআবুল ঈমান,৩৯৬৫)