ঢাকা ০৮:৩৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিবন্ধনযোগ্য নতুন দল পাচ্ছে না ইসি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ জুন ২০১৮
  • ৩২১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন কোনো দলের নিবন্ধন পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। নিবন্ধনের সব শর্ত পূরণ করেছে এমন কোনো দলেরই খোঁজ পাচ্ছে না নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন কর্মকর্তারা জানান, ২০০৮ সালে নিবন্ধন প্রথা চালুর পর প্রথমবার ৩৮টি দল নিবন্ধিত হয়। পরে নবম সংসদে দুটি ও দশম সংসদে দুটি দল নিবন্ধিত হয়। পরবর্তীকালে বাতিল হয় দুটি দলের নিবন্ধন। এবার ৭৬টি দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। এর মধ্যে ১৯টি দল বাছাইয়ে ও ইসির তাগিদের পর দলিলাদি না দেওয়ায় ১১টি দল বাদ পড়ে।

মে মাসে বাকি দলগুলোর আবেদন পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করে ইসির নিবন্ধন যাচাই-বাছাই কমিটি। অন্তত চারটি উপকমিটি ৪৬টি দলের গঠনতন্ত্র, দলিলাদি ও আনুষঙ্গিক উপাত্তের খোঁজ খবর নেন, সঠিকতা যাচাই করে। ইসির উপসচিব পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা জানান, কাগজপত্রই ঠিক নেই অধিকাংশ দলের। কোনো দলকে নিবন্ধনযোগ্য বলে সুপারিশ করতে পারছি না। নিবন্ধন কার্যক্রমের দেখভালের দায়িত্বে থাকা ইসির উপসচিব আবদুল হালিম খান সাংবাদিককে বলেন, আমরা কাজ গুছিয়ে রেখেছি। কমিশনের অনুমোদন পেলেই রোববার বা কয়েকদিনের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের তা জানাতে পারব।

সংসদ নির্বাচনের অন্তত ছয় মাস আগেই নতুন দলের নিবন্ধন চূড়ান্ত করার কথা। সেক্ষেত্রে আগামী সপ্তাহেই নিবন্ধন অযোগ্য দলগুলোকে চিঠি দিয়ে তা জানিয়ে দেওয়ার কথা রয়েছে। তবে নিবন্ধনযোগ্য হলে তা নিয়েও আপত্তি-নিষ্পত্তি সম্পন্ন করে গেজেট করতে হবে ইসিকে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সাংবাদিককে বলেন, বর্তমানে ৪০টি নিবন্ধিত দল রয়েছে। নতুন দল পাওয়ার জন্য যেসব শর্ত দেওয়া হয়েছিল এখন তো দেখি নিবন্ধনযোগ্য দল পাওয়া মুশকিল হয়ে পড়েছে। হয় একজন নেতা আছেন, কোনো অফিস নেই, গঠনতন্ত্র ঠিক নেই। তবে নতুন দল সংক্রান্ত প্রতিবেদন ও কমিটির সুপারিশ বিষয়ে কমিশনের চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে বলে জানান তিনি।

সূত্র জানায়, এরই মধ্যে ইসি সচিবালয়ের নিবন্ধন বাছাই কমিটি নিবন্ধন অযোগ্য দলের জন্য চিঠি প্রস্তত করে রেখেছে সেখানে বলা হচ্ছে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী নিবন্ধনের জন্য সংশ্লিষ্ট দল প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করতে না পারায় নিবন্ধন অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছে। বিষয়টি দলকে অবহিত করে চিঠি দেবে ইসি। রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইনে বলা হয়েছে, নিবন্ধন পেতে হলে একটি দলকে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যে কোনো নির্বাচনে অন্তত একটি সংসদীয় আসন পেতে হবে অথবা যে কোনো একটি জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে ওই আসনে প্রদত্ত মোট ভোটের ৫ শতাংশ পেতে হবে, অথবা দলের একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয় থাকতে হবে, অন্তত ২১টি প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর জেলা কমিটি থাকতে হবে এবং অন্তত ১০০ উপজেলা/মেট্রোপলিটন থানায় কমপক্ষে ২০০ ভোটারের সমর্থনের প্রামাণিক দলিল থাকতে হবে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, তিনটির মধ্যে একটি শর্ত পূরণ হলেই নিবন্ধনের যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।

৭৬টি দলের মধ্যে যে ৪৬ দলের দলিলাদি ইসি যাচাই-বাছাই করছে, সেগুলো হলো জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম), বাংলাদেশ আলোকিত পার্টি, বাংলাদেশ সমাধান ঐক্য পার্টি, বাংলাদেশ কর্মসংস্থান আন্দোলন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশ মঙ্গল পার্টি, বাংলাদেশ পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দল, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল), বাংলাদেশ জনতা পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামিক গাজী, বাংলাদেশ জালালী পার্টি, বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি, ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ,

বাংলাদেশ জনতা পার্টি, বাংলাদেশ সমাজ উন্নয়ন পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় লীগ, বাংলাদেশ নিউ সংসদ লীগ, বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ, বাংলাদেশ সত্যব্রত আন্দোলন, বাংলাদেশ তৃণমূল জনতা পার্টি, বঙ্গবন্ধু দুস্থ ও প্রতিবন্ধী পরিষদ, বাংলাদেশ মানবাধিকার আন্দোলন, ন্যাশনাল কংগ্রেস বাংলাদেশ, কৃষক শ্রমিক পার্টি, বেঙ্গল জাতীয় কংগ্রেস, বাংলাদেশ গণশক্তি দল, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় দল, নতুন ধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জাতীয় লীগ, সাধারণ জনতা পার্টি, বাংলাদেশ ফরায়েজী আন্দোলন, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি, বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক পার্টি, বাংলাদেশ গণআজাদী লীগ, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ কংগ্রেস, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি বাংলাদেশ, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, নাগরিক ঐক্য, জনতার কথা বলে ও বাংলাদেশ তৃণমূল লীগ।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমার দল তো নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। আমাদের দলকে রেজিস্ট্রেশন করার জন্য নির্বাচন কমিশন যা চেয়েছে সেসব কাগজ আমরা দিয়েছি। কিন্তু তার কত অগ্রগতি হয়েছে সেটা জানতে গেলে নির্বাচন কমিশন বিরক্ত হয়। আসলে তারা নতুন দলকে নিবন্ধন দেবে কিনা তা নিয়ে আমার প্রশ্ন রয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

নিবন্ধনযোগ্য নতুন দল পাচ্ছে না ইসি

আপডেট টাইম : ১১:০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ জুন ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন কোনো দলের নিবন্ধন পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। নিবন্ধনের সব শর্ত পূরণ করেছে এমন কোনো দলেরই খোঁজ পাচ্ছে না নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন কর্মকর্তারা জানান, ২০০৮ সালে নিবন্ধন প্রথা চালুর পর প্রথমবার ৩৮টি দল নিবন্ধিত হয়। পরে নবম সংসদে দুটি ও দশম সংসদে দুটি দল নিবন্ধিত হয়। পরবর্তীকালে বাতিল হয় দুটি দলের নিবন্ধন। এবার ৭৬টি দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। এর মধ্যে ১৯টি দল বাছাইয়ে ও ইসির তাগিদের পর দলিলাদি না দেওয়ায় ১১টি দল বাদ পড়ে।

মে মাসে বাকি দলগুলোর আবেদন পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করে ইসির নিবন্ধন যাচাই-বাছাই কমিটি। অন্তত চারটি উপকমিটি ৪৬টি দলের গঠনতন্ত্র, দলিলাদি ও আনুষঙ্গিক উপাত্তের খোঁজ খবর নেন, সঠিকতা যাচাই করে। ইসির উপসচিব পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা জানান, কাগজপত্রই ঠিক নেই অধিকাংশ দলের। কোনো দলকে নিবন্ধনযোগ্য বলে সুপারিশ করতে পারছি না। নিবন্ধন কার্যক্রমের দেখভালের দায়িত্বে থাকা ইসির উপসচিব আবদুল হালিম খান সাংবাদিককে বলেন, আমরা কাজ গুছিয়ে রেখেছি। কমিশনের অনুমোদন পেলেই রোববার বা কয়েকদিনের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের তা জানাতে পারব।

সংসদ নির্বাচনের অন্তত ছয় মাস আগেই নতুন দলের নিবন্ধন চূড়ান্ত করার কথা। সেক্ষেত্রে আগামী সপ্তাহেই নিবন্ধন অযোগ্য দলগুলোকে চিঠি দিয়ে তা জানিয়ে দেওয়ার কথা রয়েছে। তবে নিবন্ধনযোগ্য হলে তা নিয়েও আপত্তি-নিষ্পত্তি সম্পন্ন করে গেজেট করতে হবে ইসিকে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সাংবাদিককে বলেন, বর্তমানে ৪০টি নিবন্ধিত দল রয়েছে। নতুন দল পাওয়ার জন্য যেসব শর্ত দেওয়া হয়েছিল এখন তো দেখি নিবন্ধনযোগ্য দল পাওয়া মুশকিল হয়ে পড়েছে। হয় একজন নেতা আছেন, কোনো অফিস নেই, গঠনতন্ত্র ঠিক নেই। তবে নতুন দল সংক্রান্ত প্রতিবেদন ও কমিটির সুপারিশ বিষয়ে কমিশনের চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে বলে জানান তিনি।

সূত্র জানায়, এরই মধ্যে ইসি সচিবালয়ের নিবন্ধন বাছাই কমিটি নিবন্ধন অযোগ্য দলের জন্য চিঠি প্রস্তত করে রেখেছে সেখানে বলা হচ্ছে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী নিবন্ধনের জন্য সংশ্লিষ্ট দল প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করতে না পারায় নিবন্ধন অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছে। বিষয়টি দলকে অবহিত করে চিঠি দেবে ইসি। রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইনে বলা হয়েছে, নিবন্ধন পেতে হলে একটি দলকে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যে কোনো নির্বাচনে অন্তত একটি সংসদীয় আসন পেতে হবে অথবা যে কোনো একটি জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে ওই আসনে প্রদত্ত মোট ভোটের ৫ শতাংশ পেতে হবে, অথবা দলের একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয় থাকতে হবে, অন্তত ২১টি প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর জেলা কমিটি থাকতে হবে এবং অন্তত ১০০ উপজেলা/মেট্রোপলিটন থানায় কমপক্ষে ২০০ ভোটারের সমর্থনের প্রামাণিক দলিল থাকতে হবে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, তিনটির মধ্যে একটি শর্ত পূরণ হলেই নিবন্ধনের যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।

৭৬টি দলের মধ্যে যে ৪৬ দলের দলিলাদি ইসি যাচাই-বাছাই করছে, সেগুলো হলো জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম), বাংলাদেশ আলোকিত পার্টি, বাংলাদেশ সমাধান ঐক্য পার্টি, বাংলাদেশ কর্মসংস্থান আন্দোলন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশ মঙ্গল পার্টি, বাংলাদেশ পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দল, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল), বাংলাদেশ জনতা পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামিক গাজী, বাংলাদেশ জালালী পার্টি, বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি, ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ,

বাংলাদেশ জনতা পার্টি, বাংলাদেশ সমাজ উন্নয়ন পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় লীগ, বাংলাদেশ নিউ সংসদ লীগ, বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ, বাংলাদেশ সত্যব্রত আন্দোলন, বাংলাদেশ তৃণমূল জনতা পার্টি, বঙ্গবন্ধু দুস্থ ও প্রতিবন্ধী পরিষদ, বাংলাদেশ মানবাধিকার আন্দোলন, ন্যাশনাল কংগ্রেস বাংলাদেশ, কৃষক শ্রমিক পার্টি, বেঙ্গল জাতীয় কংগ্রেস, বাংলাদেশ গণশক্তি দল, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় দল, নতুন ধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জাতীয় লীগ, সাধারণ জনতা পার্টি, বাংলাদেশ ফরায়েজী আন্দোলন, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি, বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক পার্টি, বাংলাদেশ গণআজাদী লীগ, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ কংগ্রেস, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি বাংলাদেশ, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, নাগরিক ঐক্য, জনতার কথা বলে ও বাংলাদেশ তৃণমূল লীগ।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমার দল তো নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। আমাদের দলকে রেজিস্ট্রেশন করার জন্য নির্বাচন কমিশন যা চেয়েছে সেসব কাগজ আমরা দিয়েছি। কিন্তু তার কত অগ্রগতি হয়েছে সেটা জানতে গেলে নির্বাচন কমিশন বিরক্ত হয়। আসলে তারা নতুন দলকে নিবন্ধন দেবে কিনা তা নিয়ে আমার প্রশ্ন রয়েছে।