ঢাকা ১১:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

টক অব দ্যা কান্ট্রি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৪৭:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ মে ২০১৮
  • ৩৫২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রতি ইঞ্চি ভূমিতে আজ একটিই আলোচনা। আলোচনাটি মাদকনির্ভর। বিষয়টি তুঙ্গে ওঠার পেছনে যথেষ্ট কারণ রয়েছে। আর কারণগুলোও ফেলে দেওয়ার মতো নয়। বাংলাদেশের প্রতি ইঞ্চি ভূমিই আজ মাদকের মসলিন চাদরে আবৃত। একদিনেই এই মসলিন চাদর নির্মিত হয়নি। কতশত শ্রমিকের কত বছরের সাধনার ফসল। তবে, এ শ্রমিকরা কোনো সাধারণ নাগরিক নন। এরা সরকারি প্রশাসনের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধির অংশবিশেষ। অভিযোগ উঠেছে, মাদকের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে সীমান্তবর্তী উপজেলা টেকনাফকে জনপ্রতিনিধিরাই বানিয়েছেন মাদকের অভয়ারণ্য।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘একটি জনপদের বেশিরভাগ জনপ্রতিনিধির সঙ্গে মাদকের আত্মীয়তা গড়ে উঠলে তা দেশের জন্য হয়ে ওঠে একটি অশনি সংকেত।’ এবার টেকনাফ ও উখিয়ার বর্তমান এবং সাবেক অন্তত ৫০ জনপ্রতিনিধির নাম লিপিবদ্ধ হয়েছে মাদক পাচারের তালিকায়। পাশাপাশি মিডিয়া বলছে, অভিযানের আগাম তথ্য পাচারকারীই হচ্ছে পুলিশ। পুলিশ তার সোর্সের মাধ্যমে অভিযানের আগাম তথ্য পৌঁছে দিচ্ছে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে। চিত্রটি কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলের নয়, দেশজুড়ে একই চিত্র। আর তাদের এই অনৈতিক কর্মযজ্ঞের কারণে মাদক ব্যবসায়ীরা এতটা বেপরোয়া হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এ সুযোগ রোহিত করার কোনো লক্ষণ এখনো পরিলক্ষিত হয়নি। বিগত ৪৭ বছরে দুদককেও কোনো প্রকার উচ্চবাচ্য করতে দেখা যায়নি। তবে এবার কোটিপতি মাদক ব্যবসায়ীদের সম্পদের খোঁজে নেমেছে দুদক।

এখানে একটি কথা না বললেই নয়, কোটিপতি মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে এ অভিযান নেতিবাচক নয়। তবে, নেতিবাচক হবে তখন যখন পুলিশ ও প্রশাসনে থেকে যারা এই মাদক ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা জুগিয়ে কোটিপতি হয়েছেন, তাদেরও একই অভিযোগে অভিযুক্ত করা হবে। প্রকৃত অর্থে এটাই সত্য, লালনকারীদের নির্মূল না করে বৃক্ষের ডালপালা ছেঁটে কোনো লাভ নেই। বাহ্যিকভাবে মনে হতে পারে, সাফল্য অনেক। কিন্তু বাস্তবতা বলছে, পর্বতের মূষিক প্রসব। কিছুদিন পর আবার জায়গার ঘুঁটি জায়গায় ফিরে আসবে। অর্থাৎ নতুন করে, নতুনভাবে, নতুন মাত্রায় শুরু হবে এই মাদক চলাচল। সুতরাং কর্মসূচির ফলকে দীর্ঘস্থায়ী ও ইতিবাচক পথে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সমাজের মস্তিষ্ক থেকে চরমতম ভোগবাদী চিন্তার কুশীলবদের অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অপসারণ করতে হবে। অন্যথায় এ পরিকল্পনার বাস্তবায়ন কখনোই সম্ভব নয়। মাস পেরোলেই আবার সেই মরণ নেশা ইয়াবা দরজায় এসে কড়া নাড়বে। যা কখনোই আমাদের প্রত্যাশা হতে পারে না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

টক অব দ্যা কান্ট্রি

আপডেট টাইম : ১০:৪৭:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ মে ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রতি ইঞ্চি ভূমিতে আজ একটিই আলোচনা। আলোচনাটি মাদকনির্ভর। বিষয়টি তুঙ্গে ওঠার পেছনে যথেষ্ট কারণ রয়েছে। আর কারণগুলোও ফেলে দেওয়ার মতো নয়। বাংলাদেশের প্রতি ইঞ্চি ভূমিই আজ মাদকের মসলিন চাদরে আবৃত। একদিনেই এই মসলিন চাদর নির্মিত হয়নি। কতশত শ্রমিকের কত বছরের সাধনার ফসল। তবে, এ শ্রমিকরা কোনো সাধারণ নাগরিক নন। এরা সরকারি প্রশাসনের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধির অংশবিশেষ। অভিযোগ উঠেছে, মাদকের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে সীমান্তবর্তী উপজেলা টেকনাফকে জনপ্রতিনিধিরাই বানিয়েছেন মাদকের অভয়ারণ্য।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘একটি জনপদের বেশিরভাগ জনপ্রতিনিধির সঙ্গে মাদকের আত্মীয়তা গড়ে উঠলে তা দেশের জন্য হয়ে ওঠে একটি অশনি সংকেত।’ এবার টেকনাফ ও উখিয়ার বর্তমান এবং সাবেক অন্তত ৫০ জনপ্রতিনিধির নাম লিপিবদ্ধ হয়েছে মাদক পাচারের তালিকায়। পাশাপাশি মিডিয়া বলছে, অভিযানের আগাম তথ্য পাচারকারীই হচ্ছে পুলিশ। পুলিশ তার সোর্সের মাধ্যমে অভিযানের আগাম তথ্য পৌঁছে দিচ্ছে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে। চিত্রটি কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলের নয়, দেশজুড়ে একই চিত্র। আর তাদের এই অনৈতিক কর্মযজ্ঞের কারণে মাদক ব্যবসায়ীরা এতটা বেপরোয়া হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এ সুযোগ রোহিত করার কোনো লক্ষণ এখনো পরিলক্ষিত হয়নি। বিগত ৪৭ বছরে দুদককেও কোনো প্রকার উচ্চবাচ্য করতে দেখা যায়নি। তবে এবার কোটিপতি মাদক ব্যবসায়ীদের সম্পদের খোঁজে নেমেছে দুদক।

এখানে একটি কথা না বললেই নয়, কোটিপতি মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে এ অভিযান নেতিবাচক নয়। তবে, নেতিবাচক হবে তখন যখন পুলিশ ও প্রশাসনে থেকে যারা এই মাদক ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা জুগিয়ে কোটিপতি হয়েছেন, তাদেরও একই অভিযোগে অভিযুক্ত করা হবে। প্রকৃত অর্থে এটাই সত্য, লালনকারীদের নির্মূল না করে বৃক্ষের ডালপালা ছেঁটে কোনো লাভ নেই। বাহ্যিকভাবে মনে হতে পারে, সাফল্য অনেক। কিন্তু বাস্তবতা বলছে, পর্বতের মূষিক প্রসব। কিছুদিন পর আবার জায়গার ঘুঁটি জায়গায় ফিরে আসবে। অর্থাৎ নতুন করে, নতুনভাবে, নতুন মাত্রায় শুরু হবে এই মাদক চলাচল। সুতরাং কর্মসূচির ফলকে দীর্ঘস্থায়ী ও ইতিবাচক পথে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সমাজের মস্তিষ্ক থেকে চরমতম ভোগবাদী চিন্তার কুশীলবদের অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অপসারণ করতে হবে। অন্যথায় এ পরিকল্পনার বাস্তবায়ন কখনোই সম্ভব নয়। মাস পেরোলেই আবার সেই মরণ নেশা ইয়াবা দরজায় এসে কড়া নাড়বে। যা কখনোই আমাদের প্রত্যাশা হতে পারে না।