ঢাকা ১১:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৩০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ধানের দাম নিয়ে চিন্তিত মধ্যবিত্ত কৃষকরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:০২:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ মে ২০১৮
  • ৩২০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শস্যভাণ্ডার খ্যাত চলনবিলের তাড়াশে পুরোদমে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে এবং ভালো ফলন হওয়ায় কৃষকের চোখে মুখে হাসি ফুটলেও ধানের দাম কম হওয়ায় তা নিয়ে প্রান্তিক ও মধ্যবিত্ত কৃষক চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে চলনবিলের সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন জাতের ব্রি আর, মিনিকেট, জিরা শাইল, ব্রি আর-২৮, ব্রি-আর নাটোর, ব্রি-আর-৭৬, বি আর কাজল লতা, বি আর মিনিকেট-২ প্রভৃতি জাতের ধান কাটা চলছে।

স্থানীয় কুন্দাশন গ্রামের কৃষক মোজাফ্‌ফর হোসেন জানান, তাড়াশে বোরো ধান কাটছেন তাদের প্রতিবিঘা জমিতে প্রকারভেদে ২৫-২৮ মণ হারে ফলন হচ্ছে। এদিকে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের ফসলি মাঠে বোরো ধানের ভালো ফলন হওয়ায় কৃষকের চোখে মুখে হাসি ফুটলেও ধানের দাম নিয়ে তারা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। উপজেলার বিভিন্ন প্রসিদ্ধ ধানের হাট- গুল্টা, বিনসাড়া, নওগাঁসহ ১০ থেকে ১৫টি হাটে প্রচুর পরিমাণে নতুন বোরো ধান বিক্রি হচ্ছে। হাট ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে বি-আর মিনিকেট জাতের ধান (ভেজা) মণপ্রতি ৫৫০-৬০০ টাকা, (শুকনা) ৭০০-৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

বি-আর ২৮ জাতের ধান মণপ্রতি (শুকনা) ৭০০-৭২০, সদ্য উঠা বি-আর ২৯ জাতের ধান ৬৫০-৭০০ (শুকনা) টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। নওগাঁ হাটে আসা পাবনার ধানের ব্যাপারি আব্দুর রাজ্জাক জানান, মাত্র ১ সপ্তাহের ব্যবধানে তাড়াশের হাট বাজারে প্রকারভেদে ধানের দাম প্রতিমণে ১৫০-২০০ টাকা কমে গেছে। এদিকে যেসব মধ্যবিত্ত ও প্রান্তিক কৃষক ধানের ওপর নির্ভরশীল তারা ধার দেনা করে বোরো আবাদ করেছিলেন ধানের দাম কমায় তারা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। উপজেলার লালুয়ামাঝিড়া গ্রামের কৃষক ফরহাদ হোসেন বলেন, তার পরিবার মূলত ধানের ওপর নির্ভরশীল। বর্তমানে ধানের দাম যেভাবে কমছে তা অব্যাহত থাকলে তাদের উৎপাদন ব্যয় উঠবে না। তাড়াশ উপজেলার সরকারি খাদ্য গুদামে সরকারিভাবে ধান কেনা শুরু হয়নি।

ফলে যেসব কৃষক ঋণ করে বোরো আবাদ করেছিলেন তাদের ঋণের টাকা পরিশোধ ও সংসার চালাতে কম দামে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এ কারণে দ্রুততম সময়ে সরকারি খাদ্য গুদামগুলোতে প্রকৃত কৃষকদের কাছ হতে ধান কেনার দাবি জানিয়েছেন এলাকার কৃষকরা। এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম জানান, তাড়াশে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বর্তমান হাট বাজারে ধানের দাম ওঠা নামা করছে। সরকারিভাবে ধান ক্রয় শুরু হলে কৃষক লাভবান হবেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ধানের দাম নিয়ে চিন্তিত মধ্যবিত্ত কৃষকরা

আপডেট টাইম : ০২:০২:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ মে ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শস্যভাণ্ডার খ্যাত চলনবিলের তাড়াশে পুরোদমে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে এবং ভালো ফলন হওয়ায় কৃষকের চোখে মুখে হাসি ফুটলেও ধানের দাম কম হওয়ায় তা নিয়ে প্রান্তিক ও মধ্যবিত্ত কৃষক চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে চলনবিলের সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন জাতের ব্রি আর, মিনিকেট, জিরা শাইল, ব্রি আর-২৮, ব্রি-আর নাটোর, ব্রি-আর-৭৬, বি আর কাজল লতা, বি আর মিনিকেট-২ প্রভৃতি জাতের ধান কাটা চলছে।

স্থানীয় কুন্দাশন গ্রামের কৃষক মোজাফ্‌ফর হোসেন জানান, তাড়াশে বোরো ধান কাটছেন তাদের প্রতিবিঘা জমিতে প্রকারভেদে ২৫-২৮ মণ হারে ফলন হচ্ছে। এদিকে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের ফসলি মাঠে বোরো ধানের ভালো ফলন হওয়ায় কৃষকের চোখে মুখে হাসি ফুটলেও ধানের দাম নিয়ে তারা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। উপজেলার বিভিন্ন প্রসিদ্ধ ধানের হাট- গুল্টা, বিনসাড়া, নওগাঁসহ ১০ থেকে ১৫টি হাটে প্রচুর পরিমাণে নতুন বোরো ধান বিক্রি হচ্ছে। হাট ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে বি-আর মিনিকেট জাতের ধান (ভেজা) মণপ্রতি ৫৫০-৬০০ টাকা, (শুকনা) ৭০০-৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

বি-আর ২৮ জাতের ধান মণপ্রতি (শুকনা) ৭০০-৭২০, সদ্য উঠা বি-আর ২৯ জাতের ধান ৬৫০-৭০০ (শুকনা) টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। নওগাঁ হাটে আসা পাবনার ধানের ব্যাপারি আব্দুর রাজ্জাক জানান, মাত্র ১ সপ্তাহের ব্যবধানে তাড়াশের হাট বাজারে প্রকারভেদে ধানের দাম প্রতিমণে ১৫০-২০০ টাকা কমে গেছে। এদিকে যেসব মধ্যবিত্ত ও প্রান্তিক কৃষক ধানের ওপর নির্ভরশীল তারা ধার দেনা করে বোরো আবাদ করেছিলেন ধানের দাম কমায় তারা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। উপজেলার লালুয়ামাঝিড়া গ্রামের কৃষক ফরহাদ হোসেন বলেন, তার পরিবার মূলত ধানের ওপর নির্ভরশীল। বর্তমানে ধানের দাম যেভাবে কমছে তা অব্যাহত থাকলে তাদের উৎপাদন ব্যয় উঠবে না। তাড়াশ উপজেলার সরকারি খাদ্য গুদামে সরকারিভাবে ধান কেনা শুরু হয়নি।

ফলে যেসব কৃষক ঋণ করে বোরো আবাদ করেছিলেন তাদের ঋণের টাকা পরিশোধ ও সংসার চালাতে কম দামে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এ কারণে দ্রুততম সময়ে সরকারি খাদ্য গুদামগুলোতে প্রকৃত কৃষকদের কাছ হতে ধান কেনার দাবি জানিয়েছেন এলাকার কৃষকরা। এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম জানান, তাড়াশে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বর্তমান হাট বাজারে ধানের দাম ওঠা নামা করছে। সরকারিভাবে ধান ক্রয় শুরু হলে কৃষক লাভবান হবেন।