ঢাকা ০৮:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৩৫ বছর ধরে একমাত্র বাঁশের সাঁকোই ভরসা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:১৫:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ মে ২০১৮
  • ২৬৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ১৫টি গ্রাম ও পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীসহ প্রায় ৩০ হাজার মানুষের ডাকাতিয়া নদী পারাপারে একমাত্র বাঁশের সাঁকোই ভরসা। প্রায় ৩৫ বছর আগে এলাকাবাসী নিজ উদ্যোগে ও খরচে তৈরি করেছেন এ সাঁকো। দু’পাশে সড়ক থাকায় তার আগে পারাপার হতেন নৌকা দিয়ে। মাঝেমধ্যে প্রবল বৃষ্টি হলে বন্যার পানির তোড়ে সাঁকো ভেসেও যায়। লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার ৫নং চরপাতা ইউনিয়নের গাজীনগর গ্রামের চিত্র এটি।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, রায়পুর উপজেলার প্রায় ইউনিয়নের সরকারের উন্নয়নের কাজ চললেও তাদের ইউনিয়নে প্রয়োজনীয় রাস্তা, সেতু ও কালভার্ট নির্মিত হয়নি। গাজীনগর গ্রামের ডাকাতিয়া নদীর পারাপারের ব্যবস্থা গ্রামবাসী নিজ উদ্যোগেই করেছেন। ১৫টি গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার ভোটারসহ বসবাস করা অর্ধলক্ষাধিক মানুষ প্রতিদিন এই ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে নদী পারাপার করেন।

দীর্ঘদিনেও সেতু নির্মাণ না হওয়ায় স্কুল, কলেজগামী শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, কৃষকসহ পথচারীরা ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। নদীর দু’পাশের সড়কটি পাকা হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত এ স্থানে একটি সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে না। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে ভোটে নির্বাচিত মেম্বার, চেয়ারম্যান এমনকি সংসদ সদস্যরাও নির্বাচনের আগে সেতু নির্মাণের কথা বললেও তা আর নির্মিত হয়নি। ৭০ ফুট দীর্ঘ এই সাঁকোটিও যেকোনো সময় ভেঙে যেতে পারে। তাই দ্রুত ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান এলাকাবাসী।

সরজমিন গিয়ে দেখা গেছে, বাঁশের এই সাঁকোই একমাত্র ভরসা চরপাতা ইউনিয়নের শায়েস্তানগর ইসলামি মিশন দাখিল মাদরাসা, শায়েস্তানগর বানাতুল মুসলেমিন দাখিল মাদরাসা, গাজীনগর চরপাতা দারুসুন্নত দাখিল মাদরাসা ও চরপাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাহমুবা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র-ছাত্রী। এ ছাড়াও পূর্বলাছ, দেবিপুর, চরপলোয়ান, গাজীনগর, চরপাতা, ফদিরগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম ও দক্ষিণ আলনিয়া, বিরামপুর, সন্দেশপুর, সাহেবগঞ্জসহ ১৫টি গ্রামের  প্রায় ৩০ হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হচ্ছে। শুধু তাই নয় দূরদূরান্ত থেকে আসা মানুষ এবং ছোট ছোট যানবাহন চলাচল করতে হচ্ছে এই সাঁকো দিয়েই। এতে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।

নদীর তীরবর্তী শায়েস্তানগর ইসলামীয়া মিশন দাখিল মাদরাসা সুপার শেখ মো. আবদুল কুদ্দুছ ফারুকী বলেন, ‘এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ হলে এলাকার মানুষ ও স্কুল-মাদরাসা কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীর যাতায়তসহ কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন হবে।’ ‘ব্রিজ না থাকায় এই ইউনিয়নটি অবহেলিত। বর্ষাকালে সাধারণ মানুষসহ স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের সীমা থাকে না। তাই ব্রিজ নির্মাণের জন্য আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

৫নং চরপাতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম বলেন, ‘দেশ স্বাধীনের ৪৭ বছর পরেও ডাকাতিয়া নদীর ওপর সেতু নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। উপজেলা পর্যায়ের মিটিংয়ে বিষয়টি বারবার উত্থাপন করার পরও এর কোনো সমাধান হয়নি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিল্পী রানী রায় বলেন, ‘চরপাতা ইউনিয়নের গাজীনগর এলাকার বাঁশের সাঁকোর বিষয়টি আমার জানা আছে, প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পাওয়া গেলে সাঁকোর স্থলে সেতু নির্মাণ করা হবে।’ এ ছাড়াও ‘আমাদের বর্তমান সংসদ সদস্যও ব্রিজের জন্য তৎপর রয়েছেন। আশা করি দ্রুত তা নির্মাণ করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

৩৫ বছর ধরে একমাত্র বাঁশের সাঁকোই ভরসা

আপডেট টাইম : ০১:১৫:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ মে ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ১৫টি গ্রাম ও পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীসহ প্রায় ৩০ হাজার মানুষের ডাকাতিয়া নদী পারাপারে একমাত্র বাঁশের সাঁকোই ভরসা। প্রায় ৩৫ বছর আগে এলাকাবাসী নিজ উদ্যোগে ও খরচে তৈরি করেছেন এ সাঁকো। দু’পাশে সড়ক থাকায় তার আগে পারাপার হতেন নৌকা দিয়ে। মাঝেমধ্যে প্রবল বৃষ্টি হলে বন্যার পানির তোড়ে সাঁকো ভেসেও যায়। লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার ৫নং চরপাতা ইউনিয়নের গাজীনগর গ্রামের চিত্র এটি।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, রায়পুর উপজেলার প্রায় ইউনিয়নের সরকারের উন্নয়নের কাজ চললেও তাদের ইউনিয়নে প্রয়োজনীয় রাস্তা, সেতু ও কালভার্ট নির্মিত হয়নি। গাজীনগর গ্রামের ডাকাতিয়া নদীর পারাপারের ব্যবস্থা গ্রামবাসী নিজ উদ্যোগেই করেছেন। ১৫টি গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার ভোটারসহ বসবাস করা অর্ধলক্ষাধিক মানুষ প্রতিদিন এই ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে নদী পারাপার করেন।

দীর্ঘদিনেও সেতু নির্মাণ না হওয়ায় স্কুল, কলেজগামী শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, কৃষকসহ পথচারীরা ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। নদীর দু’পাশের সড়কটি পাকা হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত এ স্থানে একটি সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে না। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে ভোটে নির্বাচিত মেম্বার, চেয়ারম্যান এমনকি সংসদ সদস্যরাও নির্বাচনের আগে সেতু নির্মাণের কথা বললেও তা আর নির্মিত হয়নি। ৭০ ফুট দীর্ঘ এই সাঁকোটিও যেকোনো সময় ভেঙে যেতে পারে। তাই দ্রুত ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান এলাকাবাসী।

সরজমিন গিয়ে দেখা গেছে, বাঁশের এই সাঁকোই একমাত্র ভরসা চরপাতা ইউনিয়নের শায়েস্তানগর ইসলামি মিশন দাখিল মাদরাসা, শায়েস্তানগর বানাতুল মুসলেমিন দাখিল মাদরাসা, গাজীনগর চরপাতা দারুসুন্নত দাখিল মাদরাসা ও চরপাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাহমুবা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র-ছাত্রী। এ ছাড়াও পূর্বলাছ, দেবিপুর, চরপলোয়ান, গাজীনগর, চরপাতা, ফদিরগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম ও দক্ষিণ আলনিয়া, বিরামপুর, সন্দেশপুর, সাহেবগঞ্জসহ ১৫টি গ্রামের  প্রায় ৩০ হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হচ্ছে। শুধু তাই নয় দূরদূরান্ত থেকে আসা মানুষ এবং ছোট ছোট যানবাহন চলাচল করতে হচ্ছে এই সাঁকো দিয়েই। এতে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।

নদীর তীরবর্তী শায়েস্তানগর ইসলামীয়া মিশন দাখিল মাদরাসা সুপার শেখ মো. আবদুল কুদ্দুছ ফারুকী বলেন, ‘এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ হলে এলাকার মানুষ ও স্কুল-মাদরাসা কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীর যাতায়তসহ কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন হবে।’ ‘ব্রিজ না থাকায় এই ইউনিয়নটি অবহেলিত। বর্ষাকালে সাধারণ মানুষসহ স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের সীমা থাকে না। তাই ব্রিজ নির্মাণের জন্য আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

৫নং চরপাতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম বলেন, ‘দেশ স্বাধীনের ৪৭ বছর পরেও ডাকাতিয়া নদীর ওপর সেতু নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। উপজেলা পর্যায়ের মিটিংয়ে বিষয়টি বারবার উত্থাপন করার পরও এর কোনো সমাধান হয়নি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিল্পী রানী রায় বলেন, ‘চরপাতা ইউনিয়নের গাজীনগর এলাকার বাঁশের সাঁকোর বিষয়টি আমার জানা আছে, প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পাওয়া গেলে সাঁকোর স্থলে সেতু নির্মাণ করা হবে।’ এ ছাড়াও ‘আমাদের বর্তমান সংসদ সদস্যও ব্রিজের জন্য তৎপর রয়েছেন। আশা করি দ্রুত তা নির্মাণ করা হবে।