ঢাকা ০৭:২৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাঠে আ. লীগের তিনজন বিএনপিতে সরব একজন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:৩১:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ এপ্রিল ২০১৮
  • ৪৬৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ক্ষমতাসীন বলেই আওয়ামী লীগে মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যা বেশি—এমন কথা বলছে দলটির স্থানীয় নেতাকর্মীরা। মাঠে আছেন বর্তমান সংসদ সদস্যসহ দলটির অন্তত তিন নেতা। অন্যদিকে সংসদের বাইরে থাকলেও বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যাও কম নয়। যদিও একজনই নানা কর্মকাণ্ড নিয়ে সরব। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে শরীয়তপুর-৩ আসনে এ চিত্রই পাওয়া যাচ্ছে এখন পর্যন্ত। মনোনয়নপ্রত্যাশীরা তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার পাশাপাশি তদবির-লবিং করছেন কেন্দ্রে। নির্বাচনী এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের ব্যানার-ফেস্টুন চোখে পড়লেও বিএনপি কাজ করছে নীরবে।

ডামুড্যা, গোসাইরহাট ও ভেদরগঞ্জের একাংশ নিয়ে শরীয়তপুর-৩ নির্বাচনী এলাকাটিতে আওয়ামী লীগই শক্তিশালী। স্বাধীনতার পর এই আসনে একবার করে জিতেছে জাতীয় পার্টি ও বিএনপি। বাকি আটটি নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। এর মধ্যে চারবারই জিতেছেন দলটির অন্যতম প্রভাবশালী নেতা আব্দুর রাজ্জাক। তাঁর মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে তাঁর ছেলে নাহিম রাজ্জাক এই আসন থেকে নবম সংসদের সদস্য হন। দশম সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন তিনি। আওয়ামী লীগ শক্তিশালী হলেও ভোটের দিক থেকে খুব বেশি পিছিয়ে নেই বিএনপি।

দলগুলোর স্থানীয় নেতাকর্মীদের সূত্রে জানা যায়, একাদশ সংসদ নির্বাচনে শরীয়তপুর-৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন বর্তমান সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছাবেদুর রহমান খোকা শিকদার ও ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি বাহাদুর বেপারী।

বিএনপির মনোনয়ন আলোচনায় আছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতা আফজাল হোসেন সবুজ, দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত কে এম হেমায়েতউল্যাহ আওরঙ্গজেবের সহধর্মিণী তাহমিনা আওরঙ্গজেব ও দলের জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ আহমেদ আসলাম। তবে আসলাম ছাড়া আর কাউকে মাঠে তেমন দেখা যাচ্ছে না।

অন্যদিকে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন চান দুজন। তাঁদের একজন হলেন আবদুল হান্নান, যিনি গত নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেও পরে প্রত্যাহার করে নেন।

আওয়ামী লীগ : স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে কোন্দল বাড়ছে। বিশেষ করে গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী বাছাই করাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি হয়।

আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, একাদশ সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও এগিয়ে আছেন সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক। যদিও আরো কয়েকজন নেতা মনোনয়ন পাওয়ার জন্য তৎপরতা চালাচ্ছেন।

ডামুড্যা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বাবলু শিকদার সাংবাদিককে বলেন, ‘বড় দল হিসেবে আওয়ামী লীগে মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যা বেশি হবে—এটাই স্বাভাবিক। আর দলীয় সভানেত্রী যাঁকে মনোনয়ন দেবেন নেতাকর্মীরা তাঁর পক্ষেই কাজ করবে।’ তিনি বলেন, বর্তমান সংসদ সদস্যের সময়ে বেশ কিছু উন্নয়নকাজ হয়েছে। শেষ হওয়ার অপেক্ষায় আছে আরো কিছু কাজ।

বিএনপি : স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপ হলে তারা বলছিল, দলীয় প্রতীকের পাশাপাশি ব্যক্তিও তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তারা প্রার্থী বেছে নিতে চায়। যিনি সব সময় তাদের পাশে থাকেন তাঁকেই তারা প্রার্থী হিসেবে চাইবে।

নেতাকর্মীরা বলছিল, দীর্ঘদিন ধরে শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ আহমেদ আসলাম উঠান বৈঠক, ঈদ পুনর্মিলনীর মতো অনুষ্ঠান বা দুস্থদের সহায়তা করার মতো নানা কাজ করে আসছেন। দলীয় নেতাকর্মীদের বিপদ-আপদ, মামলায় পাশে থাকার কারণেও আসলামের প্রতি নেতাকর্মীদের আস্থা বেড়েছে।

নেতাকর্মীরা মনে করছে, দলের দুঃসময়ে একমাত্র আসলামকেই তারা পাশে পেয়েছে।

জাতীয় পার্টি : শরীয়তপুর-৩ আসনে জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন আবদুল হান্নান ও মুন্সী মো. ওয়াসিম খোকন। এখানে জাতীয় পার্টির কর্মকাণ্ড চোখে পড়ার মতো নয়। জাতীয় দিবস পালন করা ছাড়া দলীয় আর কোনো কাজ করতে দেখা যায় না বিরোধী দল জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের। তবে দলটির নেতারা দাবি করেন, তাঁরা বিভিন্ন সময় সভা করেন। নেতাকর্মীদের খোঁজখবর নেন।

সংসদের বর্তমান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত নির্বাচনে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবদুল হান্নান মননোয়নপত্র জমা দিলেও পরে প্রত্যাহার করে নেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে দলটি ৩০০ আসনে নির্বাচন করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।

আবদুল হান্নান বলেন, ‘দল যদি এবার আমাকে মনোনয়ন দেয় তাহলে আমি নির্বাচন করব।’

জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক, জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির কেন্দ্রীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য ওয়াসিম খোকন বলেন, ‘আমি আশাবাদী, দল আমাকে মনোনয়ন দেবে।’

অন্যান্য : এ আসনে নির্বাচন করতে চান ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতা মুহাম্মদ হানিফ মিয়া। নিজের মনোনয়ন প্রত্যাশার কথা নিশ্চিত করেছেন তিনি।

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

মাঠে আ. লীগের তিনজন বিএনপিতে সরব একজন

আপডেট টাইম : ০৪:৩১:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ এপ্রিল ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ক্ষমতাসীন বলেই আওয়ামী লীগে মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যা বেশি—এমন কথা বলছে দলটির স্থানীয় নেতাকর্মীরা। মাঠে আছেন বর্তমান সংসদ সদস্যসহ দলটির অন্তত তিন নেতা। অন্যদিকে সংসদের বাইরে থাকলেও বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যাও কম নয়। যদিও একজনই নানা কর্মকাণ্ড নিয়ে সরব। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে শরীয়তপুর-৩ আসনে এ চিত্রই পাওয়া যাচ্ছে এখন পর্যন্ত। মনোনয়নপ্রত্যাশীরা তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার পাশাপাশি তদবির-লবিং করছেন কেন্দ্রে। নির্বাচনী এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের ব্যানার-ফেস্টুন চোখে পড়লেও বিএনপি কাজ করছে নীরবে।

ডামুড্যা, গোসাইরহাট ও ভেদরগঞ্জের একাংশ নিয়ে শরীয়তপুর-৩ নির্বাচনী এলাকাটিতে আওয়ামী লীগই শক্তিশালী। স্বাধীনতার পর এই আসনে একবার করে জিতেছে জাতীয় পার্টি ও বিএনপি। বাকি আটটি নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। এর মধ্যে চারবারই জিতেছেন দলটির অন্যতম প্রভাবশালী নেতা আব্দুর রাজ্জাক। তাঁর মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে তাঁর ছেলে নাহিম রাজ্জাক এই আসন থেকে নবম সংসদের সদস্য হন। দশম সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন তিনি। আওয়ামী লীগ শক্তিশালী হলেও ভোটের দিক থেকে খুব বেশি পিছিয়ে নেই বিএনপি।

দলগুলোর স্থানীয় নেতাকর্মীদের সূত্রে জানা যায়, একাদশ সংসদ নির্বাচনে শরীয়তপুর-৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন বর্তমান সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছাবেদুর রহমান খোকা শিকদার ও ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি বাহাদুর বেপারী।

বিএনপির মনোনয়ন আলোচনায় আছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতা আফজাল হোসেন সবুজ, দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত কে এম হেমায়েতউল্যাহ আওরঙ্গজেবের সহধর্মিণী তাহমিনা আওরঙ্গজেব ও দলের জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ আহমেদ আসলাম। তবে আসলাম ছাড়া আর কাউকে মাঠে তেমন দেখা যাচ্ছে না।

অন্যদিকে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন চান দুজন। তাঁদের একজন হলেন আবদুল হান্নান, যিনি গত নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেও পরে প্রত্যাহার করে নেন।

আওয়ামী লীগ : স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে কোন্দল বাড়ছে। বিশেষ করে গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী বাছাই করাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি হয়।

আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, একাদশ সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও এগিয়ে আছেন সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক। যদিও আরো কয়েকজন নেতা মনোনয়ন পাওয়ার জন্য তৎপরতা চালাচ্ছেন।

ডামুড্যা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বাবলু শিকদার সাংবাদিককে বলেন, ‘বড় দল হিসেবে আওয়ামী লীগে মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যা বেশি হবে—এটাই স্বাভাবিক। আর দলীয় সভানেত্রী যাঁকে মনোনয়ন দেবেন নেতাকর্মীরা তাঁর পক্ষেই কাজ করবে।’ তিনি বলেন, বর্তমান সংসদ সদস্যের সময়ে বেশ কিছু উন্নয়নকাজ হয়েছে। শেষ হওয়ার অপেক্ষায় আছে আরো কিছু কাজ।

বিএনপি : স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপ হলে তারা বলছিল, দলীয় প্রতীকের পাশাপাশি ব্যক্তিও তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তারা প্রার্থী বেছে নিতে চায়। যিনি সব সময় তাদের পাশে থাকেন তাঁকেই তারা প্রার্থী হিসেবে চাইবে।

নেতাকর্মীরা বলছিল, দীর্ঘদিন ধরে শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ আহমেদ আসলাম উঠান বৈঠক, ঈদ পুনর্মিলনীর মতো অনুষ্ঠান বা দুস্থদের সহায়তা করার মতো নানা কাজ করে আসছেন। দলীয় নেতাকর্মীদের বিপদ-আপদ, মামলায় পাশে থাকার কারণেও আসলামের প্রতি নেতাকর্মীদের আস্থা বেড়েছে।

নেতাকর্মীরা মনে করছে, দলের দুঃসময়ে একমাত্র আসলামকেই তারা পাশে পেয়েছে।

জাতীয় পার্টি : শরীয়তপুর-৩ আসনে জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন আবদুল হান্নান ও মুন্সী মো. ওয়াসিম খোকন। এখানে জাতীয় পার্টির কর্মকাণ্ড চোখে পড়ার মতো নয়। জাতীয় দিবস পালন করা ছাড়া দলীয় আর কোনো কাজ করতে দেখা যায় না বিরোধী দল জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের। তবে দলটির নেতারা দাবি করেন, তাঁরা বিভিন্ন সময় সভা করেন। নেতাকর্মীদের খোঁজখবর নেন।

সংসদের বর্তমান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত নির্বাচনে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবদুল হান্নান মননোয়নপত্র জমা দিলেও পরে প্রত্যাহার করে নেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে দলটি ৩০০ আসনে নির্বাচন করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।

আবদুল হান্নান বলেন, ‘দল যদি এবার আমাকে মনোনয়ন দেয় তাহলে আমি নির্বাচন করব।’

জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক, জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির কেন্দ্রীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য ওয়াসিম খোকন বলেন, ‘আমি আশাবাদী, দল আমাকে মনোনয়ন দেবে।’

অন্যান্য : এ আসনে নির্বাচন করতে চান ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতা মুহাম্মদ হানিফ মিয়া। নিজের মনোনয়ন প্রত্যাশার কথা নিশ্চিত করেছেন তিনি।

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ