হাওর বার্তা ডেস্কঃ দেশিয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং বা বিপিও খাতের অবস্থানকে তুলে ধরার লক্ষ্যে আগামী ১৫ ও ১৬ এপ্রিল, ঢাকায় তৃতীয় বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘বিপিও সম্মেলন বাংলাদেশ ২০১৮’। এ উপলক্ষে ৩ এপ্রিল, রাজধানীর কারওয়ান বাজারস্থ জনতা টাওয়ার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। এ সময় তিনি বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তি খাততে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ বছরের মধ্যে সব ইউনিয়ান ও ছিটমহলে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হবে। এখন আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো শিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থাণ তৈরি করা। সরকার ফাইভ জি চালু করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, সব শ্রেণীর মানুষের চাকরির সুযোগ রয়েছে বিপিও সেক্টরে। আমরা এ সামিটে তা তুলে ধরার চেষ্টা করবো। বিপিও সেক্টরে দেশের যেকোনো জায়গায় বসে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। বিপিও সামিটে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দক্ষ তরুণদের এনে চাকরির দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের রপ্তানি অসীম সম্ভবনা রয়েছে। এ যাত্রা এ সরকারের আমলে শুরু হয়েছে। আগে আমরা প্রযুক্তি পণ্য আমদানীকারক দেশ ছিলাম, বর্তমানে আমরা উৎপাদন ও রপ্তানী করছি।’
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদফতরের মহাপরিচালক এ কে এম খায়রুল আলম বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে প্রযুক্তি উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এটা আরো বৃদ্ধি করা হবে।’
বিপিও সামিটের বিস্তারিত তুলে ধরে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কলসেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্য)-এর সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ বলেন, ‘২০১৫ সালে বিপিও সেক্টর সম্পর্কে জনগণের তেমন কোনো ধারণা ছিল না। দুই বারের বিপিও সামিট আয়োজনের ফলে এখন সবাই এ বিষয়টি সম্পর্কে অবগত।’ তিনি আরো বলেন, ‘বিপিও খাতে উন্নয়নের জন্য এ সামিট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আমি আশা করি।’
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোঃ মামুন-আল-রশীদ, বাক্যের সিনিয়র সহসভাপতি আবুল খায়ের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ আমিনুল হক প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলন সঞ্চলনা করেন বাক্যের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত হবে দুই দিনের বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০১৮। উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ।
আয়োজকদের পক্ষ জানানো হয়, দুই দিনের আয়োজনে দেশি-বিদেশি তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, সরকারের নীতিনির্ধারক, গবেষক, শিক্ষার্থী এবং বিপিও খাতের সঙ্গে জড়িতরা অংশ নেবেন। প্রযুক্তি ব্যবসা বিশেষ করে আউটসোর্সিং ব্যবসা পরিচালনা, ব্যবসার উন্নয়ন ও বিনিয়োগের আদর্শ দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে ইতিমধ্যে পরিচিতি পেয়েছে। এবারের আয়োজনে দেশের আউটসোর্সিং খাতের আরো ভালো অবস্থান বিশ্বকে জানানো হবে এবং সরকারের রূপকল্প- ২০২১ বাস্তবায়নে বিপিও খাতের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরা হবে। বিপিও খাতে দক্ষ ও পর্যাপ্ত জনবল তৈরিও এই সামিটের অন্যতম লক্ষ্য।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে আরো জানানো হয়, এবারের আয়োজনে আউটসোর্সিং সেবা, পরবর্তী প্রজন্মের ধারণাগুলো প্রদর্শন করা হবে। সময়ের আলোচিত সেবা বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। গত দুই বারের সফল আয়োজনের এবার আরো বড় পরিসরে বিপিও সামিট আয়োজন করা হচ্ছে। বিপিও খাতে ২০২১ সালের মধ্যে ১ লাখ কর্মসংস্থাণ সৃষ্টি লক্ষ্যে এ আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে বলে আশা করেন আয়োজকরা।
এবারের আয়োজনে ৪০ জন স্থানীয় বক্তা, ২০ জন আন্তর্জাতিক বক্তা অংশগ্রহণ করবেন। বিপিও সামিটে ১০টি সেমিনার ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে। দুই দিনের মূল আয়োজনের আগে ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্টিভেশন কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে।
সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগে’র আওতাধীন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদফতর এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কলসেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্য) এর আয়োজনে এই সামিট অনুষ্ঠিত হবে। আয়োজনের অংশীদার হিসেবে রয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস), বাংলাদেশ উইমেন ইন টেকনোলজি (বিডব্লিউআইটি), আইএসপি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) ও বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইমপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশন (বিএমপিআইএ) ইত্যাদি।