ঢাকা ০৫:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামের হাওরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে ২১টি বাঁধের কাজ চলছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:১২:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মার্চ ২০১৮
  • ২৯১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গত বছর হাওরের অষ্টগ্রাম উপজেলায় আগাম বন্যায় বোরো ফসল বিনষ্ট হবার পর এবার ফসল রক্ষায় নতুন করে উপজেলার বিভিন্ন হাওরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে ২১টি বাঁধের কাজ চলছে। হাওরাঞ্চলে আগাম বন্যার হাত থেকে বোরো ফসল রক্ষার জন্য এই হাওর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে এসব ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। আর এ কাজগুলো প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) মাধ্যমে করানো হচ্ছে।

উপজেলার এসব কাজ তদারকি করার জন্য সরকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি উপজেলা কাবিটা মনিটরিং কমিটি গঠন করেছেন। কমিটির সভাপতি  হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। মনিটরিং কমিটির সভাপতিসহ সদস্যরা কাজের অগ্রগতি দেখার জন্য বিভিন্ন প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করছেন।

এবারের ২০১৭-১৮ অর্থবছরে অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর, কলমা, আব্দুল্লাপুর, খয়েরপুর, আদমপুর ইউনিয়নের ১৮ কিলোমিটার পর্যন্ত মোট ২১টি (পিআইসি) গঠন করা হয়েছে। আর এসব এলাকার বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারসহ প্রয়োজনীয় কাজের জন্য সরকার মোট চার কোটি ৫০ লাখ ৭৩ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। তবে, এবার সরকার পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ করায় কাজের পরিধি আরো বাড়ানো হবে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু ২৮শে  ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রকল্পগুলো শেষ করার জন্য সরকারের নির্দেশনা ছিল, তা সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।

এমনকি সরজমিন মনিটরিং কমিটি পরিদর্শন করতে গিয়ে দেখতে পায়- গত জানুয়ারির  প্রথম সপ্তাহে বরাদ্দের শতকরা ২৫ ভাগ অগ্রিম টাকা নিয়ে প্রকল্পের কাজ শুরু করেন। এদিকে কোথাও কোথাও নদী থেকে মাটির পরিবর্তে ড্রেজিং করে বালু ফেলে বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে, সরকারের দেয়া পরিকল্পনা এবং বাঁধ টেকসইয়ের জন্য পলিথিন এবং দু’পাশে বাঁশ পুঁতে চাটাই দিয়ে প্যালাসাইডিং করা হবে।

কাজটি তদারকি করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাজু হাওলাদার। তিনি জানান কোনো কোনো বাঁধ নতুন করে নির্মাণ করা হচ্ছে। আবার কোনো বাঁধ পুরনো বাঁধে মাটি  ফেলে উচু করা হচ্ছে। প্রকল্পটি নিদিষ্ট সময়ে শেষ না হওয়ায় অতিরিক্ত সময় বাড়িয়ে ১৫ই মার্চের মধ্যে শেষ করার কথা রয়েছে। এই বাঁধটির বাস্তবায়ন হলে অষ্টগ্রাম হাওরের ২৩০০০ হেক্টর বোরো জমি অকাল বন্যা থেকে রক্ষা পাবে। কোনো কোনো বাঁধে রোলার চালিয়ে মাটি বসানো আবার বালুর উপর শক্ত মাটির প্রলেপ দেয়া প্রয়োজন। প্রতিটি বাঁধে ঘাস লাগানোর সিদ্ধান্ত দেয়া আছে (পিআইসি) সদস্যদের।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সালাহ উদ্দিন জানান, প্রকল্পের বরাদ্দ অনেক দেরিতে পাওয়ায় বেশ কয়েকটির কাজ এখনো শেষ করা সম্ভব হয়নি। আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ বাঁধের কাজ শেষ হবে মর্মে তিনি আশা প্রকাশ করেন। বাঁধ পরিদর্শনে গিয়ে অনেক ত্রুটি পাওয়া যায়। যা ইতিমধ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের সভাপতিদের ডেকে সতর্ক করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, ১ম ও ২য় ধাপের কাজের গুণগত মান ও অগ্রগতির আনুমানিক ৪০ ভাগ সম্পূর্ণ হয়েছে। তবে স্থানীয় কৃষকেরা জানান, নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে বেড়ি বাঁধের কাজ সম্পূর্ণ না করা হলে গত বছরের ন্যায় এবারো অকাল বন্যায় বোরো জমির ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামের হাওরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে ২১টি বাঁধের কাজ চলছে

আপডেট টাইম : ০৩:১২:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মার্চ ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গত বছর হাওরের অষ্টগ্রাম উপজেলায় আগাম বন্যায় বোরো ফসল বিনষ্ট হবার পর এবার ফসল রক্ষায় নতুন করে উপজেলার বিভিন্ন হাওরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে ২১টি বাঁধের কাজ চলছে। হাওরাঞ্চলে আগাম বন্যার হাত থেকে বোরো ফসল রক্ষার জন্য এই হাওর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে এসব ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। আর এ কাজগুলো প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) মাধ্যমে করানো হচ্ছে।

উপজেলার এসব কাজ তদারকি করার জন্য সরকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি উপজেলা কাবিটা মনিটরিং কমিটি গঠন করেছেন। কমিটির সভাপতি  হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। মনিটরিং কমিটির সভাপতিসহ সদস্যরা কাজের অগ্রগতি দেখার জন্য বিভিন্ন প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করছেন।

এবারের ২০১৭-১৮ অর্থবছরে অষ্টগ্রাম উপজেলার দেওঘর, কলমা, আব্দুল্লাপুর, খয়েরপুর, আদমপুর ইউনিয়নের ১৮ কিলোমিটার পর্যন্ত মোট ২১টি (পিআইসি) গঠন করা হয়েছে। আর এসব এলাকার বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারসহ প্রয়োজনীয় কাজের জন্য সরকার মোট চার কোটি ৫০ লাখ ৭৩ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। তবে, এবার সরকার পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ করায় কাজের পরিধি আরো বাড়ানো হবে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু ২৮শে  ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রকল্পগুলো শেষ করার জন্য সরকারের নির্দেশনা ছিল, তা সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।

এমনকি সরজমিন মনিটরিং কমিটি পরিদর্শন করতে গিয়ে দেখতে পায়- গত জানুয়ারির  প্রথম সপ্তাহে বরাদ্দের শতকরা ২৫ ভাগ অগ্রিম টাকা নিয়ে প্রকল্পের কাজ শুরু করেন। এদিকে কোথাও কোথাও নদী থেকে মাটির পরিবর্তে ড্রেজিং করে বালু ফেলে বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে, সরকারের দেয়া পরিকল্পনা এবং বাঁধ টেকসইয়ের জন্য পলিথিন এবং দু’পাশে বাঁশ পুঁতে চাটাই দিয়ে প্যালাসাইডিং করা হবে।

কাজটি তদারকি করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাজু হাওলাদার। তিনি জানান কোনো কোনো বাঁধ নতুন করে নির্মাণ করা হচ্ছে। আবার কোনো বাঁধ পুরনো বাঁধে মাটি  ফেলে উচু করা হচ্ছে। প্রকল্পটি নিদিষ্ট সময়ে শেষ না হওয়ায় অতিরিক্ত সময় বাড়িয়ে ১৫ই মার্চের মধ্যে শেষ করার কথা রয়েছে। এই বাঁধটির বাস্তবায়ন হলে অষ্টগ্রাম হাওরের ২৩০০০ হেক্টর বোরো জমি অকাল বন্যা থেকে রক্ষা পাবে। কোনো কোনো বাঁধে রোলার চালিয়ে মাটি বসানো আবার বালুর উপর শক্ত মাটির প্রলেপ দেয়া প্রয়োজন। প্রতিটি বাঁধে ঘাস লাগানোর সিদ্ধান্ত দেয়া আছে (পিআইসি) সদস্যদের।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সালাহ উদ্দিন জানান, প্রকল্পের বরাদ্দ অনেক দেরিতে পাওয়ায় বেশ কয়েকটির কাজ এখনো শেষ করা সম্ভব হয়নি। আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ বাঁধের কাজ শেষ হবে মর্মে তিনি আশা প্রকাশ করেন। বাঁধ পরিদর্শনে গিয়ে অনেক ত্রুটি পাওয়া যায়। যা ইতিমধ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের সভাপতিদের ডেকে সতর্ক করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, ১ম ও ২য় ধাপের কাজের গুণগত মান ও অগ্রগতির আনুমানিক ৪০ ভাগ সম্পূর্ণ হয়েছে। তবে স্থানীয় কৃষকেরা জানান, নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে বেড়ি বাঁধের কাজ সম্পূর্ণ না করা হলে গত বছরের ন্যায় এবারো অকাল বন্যায় বোরো জমির ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।