ঢাকা ০৫:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাওরে নদীর পাড়ে জিরাতিদের ঘর বসতি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৩০:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০১৮
  • ৮১৮ বার

জাকির হোসাইনঃ আমাদের ভাটির এলাকাতে দূর দূরান্ত থেকে তারা আসেন জিরাতি করতে । কেউ কেউ হাওরের বুকে জমি কিনে বসতি গড়ছেন। হাওরে তারা পরিচিত ‘জিরাতি’ নামে। হাওরের সঙ্গেই তাদের গভীর হৃদ্যতা-সখ্য। আর এ কারণেই কীনা তারা ঘরও বাঁধেন হাওরপাড়েই ছয় মাসের জন্য।

শন দিয়ে ছাওয়া অস্থায়ী ঘরেই থাকেন স্বামী স্ত্রী-সন্তান নিয়ে। হাওরের এক চিলতে চরের বুকেই কাটাতে হয় বছরের ছয়টি মাস। খরতাপে-রোদে পোড়েন আর বৃষ্টিতে ভেজেন মানুষসহ গরু ছাগল সকল প্রানী।

তবুও গোটা বছরের একমাত্র সম্বল বোরো ফসল ফলিয়ে গন্তব্যে ফিরেন। কিন্তু আগাম পাহাড়ি ঢল এসে স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে জিরাতিদেরও সর্বস্বান্ত করে ফেলে।

বিস্তীর্ণ হাওরের চরের মাঝে জিরাতিদের ঘরসমূহ আদতে কুঁড়েঘর। দূর থেকে দেখলে মনে হবে যেন টইটুম্বর পানিকে আরো দুলিয়ে দিচ্ছে কৃষি-শ্রমিকদের এ ঘরগুলো।

বাঁশের বেড়া আর শন দিয়ে ছাওয়া এসব ঘর তৈরি করতে প্রতি বছরই কার্তিক মাসে হাওরে এসে ভিড় করেন এ অঞ্চলের বাইরের লোকেরা।

টাঙ্গাইল, পাবনা,নেএকোনা,রংপুর, তাড়াইল, করিমগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলে দলে তারা আসেন। বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে নেমে পড়েন বোরো জমি আবাদে। তাদের কারো দল বড়।
কেউ কেউ ছোট দলে বিভক্ত হয়ে ধানের চারা রোপণ করেন। নিজেদের জমি-জিরাত চাষবাসের পাশাপাশি অবস্থা সম্পন্ন কৃষকদের কাছ থেকেও অনেকেই জমি বর্গা নেন।

ধানের আবাদ বা কাটার মধ্যেই শুধু তারা নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখেন না। সংসারের পুষ্টির জোগান দিতে কিংবা বাড়তি আয় করতে তারা জেলেদের সঙ্গে নেমে পড়েন মাছ ধরায়।

ট্রলারে করে রাতভর মাছ ধরেন। রাত শেষে হয় বাড়িতে নয়তো বাজারে মাছ তোলেন। নগদা-নগদ টাকা পকেটে ভরে খুশিমনে অস্থায়ী ডেরায় ফেরেন।

কিশোরগঞ্জ -৪ (ইটনা,মিঠামইন,অষ্টগ্রাম)আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক এমপির ফেইজবুকের ছবি দেখে মনে পড়ল জিরাতিদের কথা, কার্তিক মাসে ঘর তৈরি করে হাওরপাড়ে থাকতে শুরু করেন। বৈশাখ অবধি এখানে থেকে যান। কিন্তু এবার জিরাতিদের স্বপ্ন যাতে ছিন্নভিন্ন না হয় সে দিকে আপনার দৃষ্টি আকষর্ন করে রাখতে হবে।যাতে তারা শুন্য হাতে এবারও জিরাতিরা হাওর চেড়ে চলে আসতে না হয়। সকল কৃষকদের মতো জিরাতিদের স্বপ্নও যেন সুফল হয় আপনার বিশাল হাওরের বুকে থেকে।

ছবি কিশোরগঞ্জ -৪ (ইটনা,মিঠামইন,অষ্টগ্রাম)আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক এমপির ফেইজবুক থেকে নেওয়া।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

হাওরে নদীর পাড়ে জিরাতিদের ঘর বসতি

আপডেট টাইম : ১০:৩০:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০১৮

জাকির হোসাইনঃ আমাদের ভাটির এলাকাতে দূর দূরান্ত থেকে তারা আসেন জিরাতি করতে । কেউ কেউ হাওরের বুকে জমি কিনে বসতি গড়ছেন। হাওরে তারা পরিচিত ‘জিরাতি’ নামে। হাওরের সঙ্গেই তাদের গভীর হৃদ্যতা-সখ্য। আর এ কারণেই কীনা তারা ঘরও বাঁধেন হাওরপাড়েই ছয় মাসের জন্য।

শন দিয়ে ছাওয়া অস্থায়ী ঘরেই থাকেন স্বামী স্ত্রী-সন্তান নিয়ে। হাওরের এক চিলতে চরের বুকেই কাটাতে হয় বছরের ছয়টি মাস। খরতাপে-রোদে পোড়েন আর বৃষ্টিতে ভেজেন মানুষসহ গরু ছাগল সকল প্রানী।

তবুও গোটা বছরের একমাত্র সম্বল বোরো ফসল ফলিয়ে গন্তব্যে ফিরেন। কিন্তু আগাম পাহাড়ি ঢল এসে স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে জিরাতিদেরও সর্বস্বান্ত করে ফেলে।

বিস্তীর্ণ হাওরের চরের মাঝে জিরাতিদের ঘরসমূহ আদতে কুঁড়েঘর। দূর থেকে দেখলে মনে হবে যেন টইটুম্বর পানিকে আরো দুলিয়ে দিচ্ছে কৃষি-শ্রমিকদের এ ঘরগুলো।

বাঁশের বেড়া আর শন দিয়ে ছাওয়া এসব ঘর তৈরি করতে প্রতি বছরই কার্তিক মাসে হাওরে এসে ভিড় করেন এ অঞ্চলের বাইরের লোকেরা।

টাঙ্গাইল, পাবনা,নেএকোনা,রংপুর, তাড়াইল, করিমগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলে দলে তারা আসেন। বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে নেমে পড়েন বোরো জমি আবাদে। তাদের কারো দল বড়।
কেউ কেউ ছোট দলে বিভক্ত হয়ে ধানের চারা রোপণ করেন। নিজেদের জমি-জিরাত চাষবাসের পাশাপাশি অবস্থা সম্পন্ন কৃষকদের কাছ থেকেও অনেকেই জমি বর্গা নেন।

ধানের আবাদ বা কাটার মধ্যেই শুধু তারা নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখেন না। সংসারের পুষ্টির জোগান দিতে কিংবা বাড়তি আয় করতে তারা জেলেদের সঙ্গে নেমে পড়েন মাছ ধরায়।

ট্রলারে করে রাতভর মাছ ধরেন। রাত শেষে হয় বাড়িতে নয়তো বাজারে মাছ তোলেন। নগদা-নগদ টাকা পকেটে ভরে খুশিমনে অস্থায়ী ডেরায় ফেরেন।

কিশোরগঞ্জ -৪ (ইটনা,মিঠামইন,অষ্টগ্রাম)আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক এমপির ফেইজবুকের ছবি দেখে মনে পড়ল জিরাতিদের কথা, কার্তিক মাসে ঘর তৈরি করে হাওরপাড়ে থাকতে শুরু করেন। বৈশাখ অবধি এখানে থেকে যান। কিন্তু এবার জিরাতিদের স্বপ্ন যাতে ছিন্নভিন্ন না হয় সে দিকে আপনার দৃষ্টি আকষর্ন করে রাখতে হবে।যাতে তারা শুন্য হাতে এবারও জিরাতিরা হাওর চেড়ে চলে আসতে না হয়। সকল কৃষকদের মতো জিরাতিদের স্বপ্নও যেন সুফল হয় আপনার বিশাল হাওরের বুকে থেকে।

ছবি কিশোরগঞ্জ -৪ (ইটনা,মিঠামইন,অষ্টগ্রাম)আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক এমপির ফেইজবুক থেকে নেওয়া।